।। প্রথম কলকাতা ।।
Mariana Trench: চারিদিকে নিকষ ঘুটঘুটে অন্ধকার, জমে আছে কাদা মাটির মেঘ। এখানে মানুষ গেলে ফিরতে পারবে কি সন্দেহ। ধারালো দাঁত নিয়ে ওঁত পেতে আছে মাংস খেকো অদ্ভুত জীব। সমুদ্রের যেখানে মাউন্ট এভারেস্টও ডুবে যাবে সেখানেই এদের বাস। বলছি পৃথিবীর গভীরতম সমুদ্র খাত মারিয়ানার কথা। নামটা তো শুনেছেন, বইতেও পড়েছেন। কেন মারিয়ানা নিয়ে এত রহস্য? মারিয়ানাতে কারা থাকে? ঘুরে বেড়ায় নাকি ডাইনোসরের সময়ের প্রাণীরা! শরীর থেকে ঠিকরে বেরোয় আলো। মুখের মধ্যে সাজানো ৩০০ এরও বেশি ধারালো দাঁত। জানলে গায়ে কাঁটা দেবে। চলুন ঘুরে আসা যাক মারিয়ানার সেই বিচিত্র অন্ধকার জগৎ থেকে।
একবার ভাবুন তো, যেখানে আলোর লেশ মাত্র নেই, সেখানে কি অদ্ভুতভাবে বেঁচে আছে এই রহস্যময় প্রাণীরা। এখাছাড়াও আছে পাহাড়ের চূড়া, গুহা, উপত্যকা সহ বিচিত্র সব ভূমিরূপ। যেহেতু মারিয়ানার অনেকটাই অজানা তাই তকমা পেয়েছে ভৌতিক জগতের। এটি দৈর্ঘ্যে প্রায় ২৫৫০ কিলোমিটার, চওড়ায় ৬৯ কিলোমিটার। এই খাদের সর্বোচ্চ গভীরতা প্রায় ১১ কিলোমিটার।
এখানে আছে ফ্যাংটুথ ফিশ। এর মুখটা হঠাৎ দেখলে ভয় পেয়ে যাবেন। এতটাই ভয়ঙ্কর। গোটা বিশ্বজুড়ে এর চর্চা। দাঁত এতটাই ধারালো নিমেষে ছিন্নভিন্ন করে দেয় শত্রুদের। শরীর থেকে বের হয় বিশেষ তরঙ্গ। এর সামনে শিকার পড়লে আর নিস্তার নেই। মারিয়ানার গভীরে ঘুরে বেড়ায় গোবলিন শার্ক। এদের নাগাল পাওয়া খুব মুশকিল। সমুদ্রের হাজার হাজার ফুট গভীরে নিঃশব্দে চলাফেরা করে। লম্বায় প্রায় ১৮ ফুট। নাক মুখের থেকে অনেকটা লম্বা। বিশাল তরোয়ালের মতো। মুখের মধ্যে আগোছালো ভাবে সাজানো রাক্ষুসে ধারালো দাঁত। জম্বি ভাইরাসের কথা তো শুনেছেন, এখানে আছে জম্বি ওয়ার্ম। যদিও এরা ভীষণ নিরীহ। শোনা যায়, প্রায় দুই কোটি ৩০ লক্ষ বছর আগে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া মেগালোডন শার্ক এখনো থাকে মারিয়ানাতে। ওজনে প্রায় ৪৮ টন, লম্বায় ৫৫ ফুট। শিকার না পেলে নিজেদের থেকে ছোট হাঙরকেও খেয়ে ফেলে। এদের ২৭০ টি দাঁতের বাইট ফোর্স প্রায় ৮০ টনের সমান, যা সবার থেকে বেশি। বলা হয়, এটাই নাকি মারিয়ানার সবথেকে খতরনাক শক্তিশালী প্রাণী। মারিয়ানার ঘুটঘুটে অন্ধকারে অবাধ বিচরণ ৩০০ দাঁতের ফ্রিল্ড সার্কের। এদের থেকে মানুষের কোন বিপদের সম্ভাবনা নেই। থাকে সমুদ্র থেকে প্রায় চার হাজার দুশো ফিট নিচে। বিশাল বড় কোন প্রাণীকে ঘায়েল করা এদের কাছে তুচ্ছ ব্যাপার। এরা নাকি সেই ডাইনোসরের সময় থেকেই এখানে আছে।
বহুবার এখানে অভিযানে নামা হয়েছে, কিন্তু কিছু দূর এগোনোর পর বাধ্য হয়েছে ফিরে আসতে। কেউ বলেন এখানে প্রাণ আছে, আবার কেউ বলে এমন পরিবেশে প্রাণ থাকা সম্ভব নয়। তাপমাত্রা প্রায় ১ ডিগ্রি থেকে ৪° ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছে। হাড় হিম করা ঠান্ডা। প্রতি বর্গ ইঞ্চিতে চাপের পরিমাণ প্রায় ৮ টন। এই খাতের শেষ প্রান্তটি চ্যালেঞ্জার ডিপ। এখানে ডুবে যেতে পারে মাউন্ট এভারেস্ট। স্পেনের রাজা চতুর্থ ফিলিপের রানী মারিয়ানার নামে এর নামকরণ। পৃথিবীর উচ্চতম শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্টে বহু মানুষ পৌঁছাতে পেরেছেন , কিন্তু মারিয়ানার গভীরে যেতে পেরেছেন হাতে গোনা কয়েকজন।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম