।। প্রথম কলকাতা ।।
কোন মন্ত্র বলে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে ইউরোপের অর্থনীতি? কমছে মূল্যস্ফীতি, প্রাণ ফিরে পাচ্ছে ইউরোপ। কোন কারণে আশার আলো দেখছেন ইউরো জোনের নীতি নির্ধারকরা? কী বলছে রিপোর্ট? কিভাবে ইউরোপীয় দেশগুলোর মানুষ চাপমুক্ত হবে? আবহাওয়ার এই চরিত্রই কী সাপে বর হলো? বিশ্ব অর্থনীতির পরিস্থিতি কিরকম? সম্পূর্ণ স্থিতিশীল? সত্যিই কী রিস্কের বাইরে? কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা? ধাক্কা কাটিয়ে ফের চাঙ্গা হতে শুরু করেছে ইউরোপের অর্থনীতি। ওই অঞ্চলের নীতি নির্ধারকরা মনে করছেন, এবছর হয়তো সেখানকার অর্থনীতি আগের অবস্থায় ফিরবে। কিন্তু এমন মনে হওয়ার নেপথ্যে কারণটা কি? আসলে পরিস্থিতি বদলাচ্ছে দেখার মতো। আগের সাথে এখনের তফাৎ অনেক ক্ষেত্রে, অনেক দিকে।
ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযানের পর ও জ্বালানি সংকটের ধাক্কায় মারাত্মক এফেক্ট পড়েছিল ইউরোজনে। জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়ায় গত শীতে ইউরো অঞ্চলের অর্থনীতি ব্যাপক হারে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এমনকি গত গ্রীষ্মেও গ্যাসের দাম ছিল চড়া, যা এখন অনেকটাই কম। খাবারের দাম বেড়ে ভোক্তাদের নাগালের বাইরে চলে গিয়েছিল। তবে মূল্যস্ফীতি কমতে শুরু করার সঙ্গে সঙ্গে কর্মসংস্থান ও মজুরি বাড়ায় যুদ্ধের ধাক্কা সামলে নেওয়া সম্ভব হয়েছে! অসময়ের উষ্ণ আবহাওয়া এক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছে ইউরোজনে। গত অক্টোবরে মূল্যস্ফীতি বেড়ে রেকর্ড ১০.৬% পৌঁছে যায়, যা এখন ক্রমেই কমছে! চলতি মাসেও মূল্যস্ফীতি হ্রাস অব্যাহত রয়েছে। বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদদের মতে, আসন্ন প্রান্তিকে ইউরোপের পরিবারগুলোর আয়ও বাড়তে পারে।
সম্প্রতি প্রকাশিত একটি সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, গত ৩ মাসের তুলনায় বছরের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে ইউরো মুদ্রা ব্যবহার করে এমন ২০টি দেশে জিডিপি বেড়েছে ০.৩ শতাংশ। যেখানে ২০২২ সালের শেষ ৩ মাসে ইউরো এলাকায় জিডিপি ০.১ শতাংশে নেমে গিয়েছিল। আরও স্পষ্ট করে বুঝিয়ে বলছি, চলতি বছরের প্রথম ত্রৈমাসিকের তুলনায় ফ্রান্সের জিডিপি দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে বেড়েছে ০.৫ শতাংশ। যা অর্থনীতিবিদদের প্রত্যাশ্যার চেয়ে অবশ্যই বেশি। না শুধু ফ্রান্স নয়, গত ত্রৈমাসিকে স্থবির হয়ে পড়া জার্মানির অর্থনীতিও ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। তবে, বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে ইউরো জোন মন্দা থেকে মুক্তি পেলেও, টানা মূল্য স্মৃতি উচ্চ সুদের হার ও দুর্বল অর্থনীতির চাপে থাকার কারণে পরিস্থিতি মোটেই খুব ভালো ঠেকছে না। আর, আইএমএফ যা বলছে সেটিও বিশেষ সুবিধার ইঙ্গিত দিচ্ছে না। বলছে, অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার সত্ত্বেও মূল্যস্ফীতি উচ্চ থাকবে বা আরো বাড়বে।
এর পেছনে বড় কারণ ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার দীর্ঘ।মেয়াদী যুদ্ধ এবং প্রতিকূল আবহাওয়া। তাই এই মুহূর্তে দেশগুলোর প্রায়োরিটি লিস্টে থাকতে হবে মূল্যস্ফীতি জয়। এক্ষেত্রে মুদ্রানীতি আরো কঠোর করা প্রয়োজন! যাতে বিশ্ব অর্থনীতিকে অস্থিতিশীলতা থেকে রক্ষা করা যায়। আসলে, অর্থনীতিবিদদের পূর্বাভাসের চেয়েও দ্রুত পুনরুদ্ধার ঘটছে বিশ্ব অর্থনীতিতে। কিন্তু এখনো রিস্ক রয়ে গেছে, যা অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। আর সেই চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতেই এখন থেকেই আরো বেশি তৈরি হতে হবে, প্রস্তুতি নিতে হবে দেশগুলোকে।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম