।। প্রথম কলকাতা ।।
সেই ভোর থেকে রাত পর্যন্ত কয়লার উনুনে ফুটছে জল। মানুষের আনাগোনায় ব্যস্ত এই দোকান। এই এলাকায় মানুষ বাড়িতে খুব কমই চা বানান। এখানে জাস্ট ১ টাকায় এক কাপ গরম ধোঁয়া ওঠা চা, স্বাদও ভালো। কোথায় পাওয়া যাচ্ছে জানেন? এই দুর্মূল্যের বাজারে শুনতে অবিশ্বাস্য হলেও এটাই সত্যি। পকেটে ১ টাকা থাকলে জমে যাবে সকাল সন্ধ্যের চায়ের আড্ডা। এই এলাকার লোক তো রীতিমত চা বানাতে ভুলতে বসেছেন। দোকান থেকে মাত্র ১ টাকায় কেনেন চা। এত কম টাকায় চা বিক্রি করে লস হয় না? দুধ চিনি চায়ের যা দাম তাতে লাভ হয় কতটা? কেনই বা বিক্রেতা ১ টাকায় চা বিক্রি করেন? এই দোকানের ঠিকানাটা জেনে রাখুন।
দোকানটা প্রায় ২২ বছরের পুরনো। দোকানের সামনের রাস্তা থেকে শুরু করে এলাকার বহু পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু চায়ের দাম একই আছে। ২২ বছর ধরেই বিক্রি হচ্ছে এক টাকার চা। সাথে মাত্র দু টাকার ঝুড়ি ভাজা। টালির ছাউনি আর ছিটে বেড়ার দেওয়ালের দোকান মন হালকা করার জায়গা। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলে বহু মানুষের আনাগোনা। শুধু চা নয়, তার সাথে আছে বিস্কুট, ঘুগনি, পাপড় সহ আরো অনেক খাবার। সেই ভোর পাঁচটা থেকে রাত দশটা পর্যন্ত জ্বলে কয়লার উনুন। দোকানের মধ্যে আর বাইরে রয়েছে বাঁশের মাচা। চায়ে চুমুক দিয়ে চলে আড্ডা। দোকানটি রয়েছে হাওড়ার দক্ষিণ এবং পশ্চিম পাঁচলার মধ্যবর্তী জায়গায়। দোকানটি চালান শ্যামাপদ করুলি এবং তার স্ত্রী। সামান্য যা আয় হয় তাতে নিজেদের হাত খরচ চলে। আর কিছু টাকা দেন সংসারে। যদিও সংসারের অধিকাংশ দায়িত্ব শ্যামাপদ বাবুর ছেলেদের উপর। তার ইচ্ছা, তিনি চায়ের দাম এক টাকাই রাখবেন। যাতে এলাকার মানুষকে টাকার জন্য চা খাওয়া নিয়ে ভাবতে না হয়।
মাত্র এক টাকাতে চা পাওয়া যায় বলেই বহু মানুষ দূর-দূরান্ত থেকে এখানে চা খেতে আসেন। গ্রামের অধিকাংশ বাড়িতে দুই বেলা পৌঁছে যায় এই দোকানের চা। অনেকে আবার কেটলিতে করে দোকান থেকে চা কিনে নিয়ে যান। বর্তমান বাজারে এক টাকায় কি হয় বলুন তো? সেই জায়গায় শ্যামাপদ বাবু প্রতিদিন ১ টাকায় চা বিক্রি করছেন। তাই তো এখানে দু’বেলা চা খাওয়ার হিড়িক পড়ে যায়। বাঁশের মাচায় গরম চায়ে চুমুক দিয়ে চলে খোশমেজাজের গল্প।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম