।। প্রথম কলকাতা ।।
Bangladesh: বিশ্বজুড়ে খাদ্য সংকটের অশনি সংকেত। খিদেয় কাতরাচ্ছে কোটি কোটি মানুষ। বাঁচবে কীভাবে ? পথ দেখাল বাংলাদেশ। জাতিসংঘে প্রস্তাব পেশ করলেন শেখ হাসিনা। হাতে হাত মিলিয়ে সবাইকে একসাথে চলার আহ্বান। জলবায়ু পরিবর্তনের কাছে কিছুতেই হার মানবে না বাংলাদেশ। প্রতিমুহূর্তে খাপ খাইয়ে নেওয়ার চেষ্টা। তাহলে কি ভবিষ্যতে বাংলাদেশই হবে পথপ্রদর্শক? এত সহজে কিভাবে দেশটা খাদ্য সংকট মোকাবিলা করছে? জানুন তবে।
ভবিষ্যতে ভয়ঙ্কর দিন আসতে চলেছে। গোটা বিশ্বকে দেখতে হবে খাদ্য সংকট। বিষয়টি নিয়ে, অনেক আগে থাকতে সচেতন বাংলাদেশ। জাতিসংঘের খাদ্য সম্মেলনে, গোটা বিশ্বজুড়ে টেকসই, নিরাপদ আর পুষ্টিকর খাদ্য ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পাঁচ দফা প্রস্তাব পেশ করলেন। যার প্রত্যেক পয়েন্ট ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর কথায় উঠে এসেছে বিশ্বজুড়ে দারিদ্র আর অপুষ্টিতে ভোগা মানুষের দুর্দশা কষ্ট আর হাহাকারের কথা। বিশ্বে অপুষ্টিতে ভুগছে, প্রায় ৬৯০ মিলিয়ন মানুষ। ২ বিলিয়ন মানুষের কাছে খাদ্যের কোন নিরাপত্তাই নেই। ৩ বিলিয়ন মানুষের মুখে পৌঁছায় না সুষম খাবার। একদিকে ইউক্রেন রাশিয়ার যুদ্ধ, অপরদিকে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা। সার, জ্বালানি, আর্থিক সংকটে জর্জরিত গোটা বিশ্ব। এই সময় টেকসই খাদ্য ব্যবস্থাপনা যে কতটা ইম্পর্ট্যান্ট তা সুন্দর করে বুঝিয়ে বলেন শেখ হাসিনা। শুধুমাত্র কৃষি আর খাদ্য পণ্যের উপর জোর দিলে হবে না, চাই সম্মিলিত প্রচেষ্টা।
- তাঁর ৫ প্রস্তাবের মধ্যে ছিল –
উন্নয়ন ব্যাংক এবং বেসরকারি উদ্যোক্তাদের আধুনিক কৃষিতে বিনিয়োগে আগ্রহী করতে হবে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নীতি সহায়তা এবং আর্থিক প্রণোদনার প্রয়োজন। - চালু রাখতে হবে ‘ব্ল্যাক সি গ্রেইন ডিল’। খাদ্য ও সার রপ্তানির উপর বিধিনিষেধ তুলে নেওয়া দরকার।
- জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় বৈশ্বিক এবং আঞ্চলিকভাবে ফুড ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনেও খাদ্য উৎপাদন যাতে সঠিক হয়, সেই লক্ষ্যে উন্নয়নশীল দেশগুলোর সহায়তায় এগিয়ে আসতে হবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে।
- চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। কৃষি শিক্ষা থেকে শুরু করে গবেষণা, সব ক্ষেত্রেই নতুন প্রযুক্তি, বায়ো ইনফরমেটিক্স এবং অত্যাধিক কৃষি প্রযুক্তিগুলো সবার জন্য উন্মুক্ত করা দরকার।
- প্রতিবছর বিশ্বজুড়ে যে পরিমাণ খাদ্য উৎপন্ন হয় তার এক তৃতীয়াংশ অংশ অপচয় হয়। সেটা আটকাতে হবে।
শেখ হাসিনার কথা অনুযায়ী, ২০০৯ সাল নাগাদ বাংলাদেশে খাদ্য ঘাটতি ছিল প্রায় ২৬ লক্ষ মেট্রিক টন। নতুন নতুন পদক্ষেপ আর কৃষকদের সহযোগিতায় ২০১৩ সালের মধ্যে দেশটা নিজেদের খাদ্য নিজেরাই অর্জন করে। উপরন্ত প্রচুর খাদ্য বেঁচেও যায়। বর্তমানে বিশ্বের শীর্ষ খাদ্য উৎপাদনকারী ১০টা দেশের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ। ধান, মাছ এবং সবজি উৎপাদনে বাংলাদেশ তৃতীয়, আলু উৎপাদনে ষষ্ঠ, পাট উৎপাদনের দ্বিতীয়। বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে হাইড্রোপনিক এবং অ্যারোপনিক কৃষি পদ্ধতিতে চাষ হয়, যা জলবায়ু অভিযোজনের অন্যতম উদাহরণ। কৃষকদের সহায়তার জন্য রয়েছে ডিজিটাল প্রযুক্তি। গোটা দেশ জুড়ে প্রায় ৫০০টি কৃষি তথ্য ও যোগাযোগ কেন্দ্র রয়েছে। দীর্ঘদিন জলাবদ্ধতা আর খরা প্রতিরোধে ধানের জাত নিয়ে কাজ করছে বাংলাদেশের বিজ্ঞানীরা। পুষ্টির উন্নতির জন্য দেশটি প্রায় আটটি ধানের জাত প্রবর্তন করেছে। ধীরে ধীরে দেশটা জলবায়ুর পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিচ্ছে। যাই হয়ে যাক, সাধারণ মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা আগে দরকার। এভাবেই বাংলাদেশ গোটা বিশ্বের কাছে হয়ে উঠছে উজ্জ্বল উদাহরণ।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম