।। প্রথম কলকাতা ।।
এই মুহূর্তে বড় খবর। চাল রপ্তানি বন্ধ করে দিতে চলেছে ভারত! আশঙ্কায় গোটা বিশ্ব। কিন্তু কেন? মারাত্মক এফেক্ট পড়বে বাংলাদেশের বাজারে! আগুন লাগতে পারে চালের দামে। বাংলাদেশে যখনই চালের সংকট দেখা দিয়েছে ততবারই চাল পেয়েছে ভারতের কাছে। কিন্তু এবার কি হবে? এক বন্ধু আরেক বন্ধুর পাশে দাঁড়াবে তো? একে বর্ষাকাল, তার উপর বন্যার আশঙ্কা! চালের জন্য হাহাকার অস্বাভাবিক নয়।
ভারতের বাজার দরের আগুনে পুড়তে পারে বাংলাদেশের বাজার। ভারত নিজের দেশের মানুষকে মূল্যস্ফীতি থেকে বাঁচাতে চাল রপ্তানি নিষিদ্ধ করতে চলেছে। এই নিয়ে আলোচনাও চলছে। এমনটা হলে শুধু বাংলাদেশ নয়, বিপদে পড়বে গোটা বিশ্ব। গত তিন মাসের মধ্যে ভারতে খুচরো পণ্যের মূল্যস্ফীতি পৌঁছেছে ৪.৮১ শতাংশে। যার নেপথ্যে মূল কারণ, খাদ্য পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি। বাজারে সবজি থেকে মাছ, সবই আগুন। তাই ভারত বাসমতি ছাড়া অন্যান্য সমস্ত চাল রপ্তানি নিষিদ্ধ করতে পারে। বাসমতি বাদ দিলে ভারতের প্রায় ৮০ শতাংশ চাল রপ্তানি আটকে যাবে। অথচ আন্তর্জাতিক বাজারে ৯০% চাল রপ্তানি করে ভারত সহ এশিয়ার গুটিকতক দেশ। বিশ্ববাজারে ভারত একাই চাল রপ্তানি করে প্রায় ৪০ শতাংশ। বিশ্বের প্রায় ১০০ টি দেশ ভারত থেকে খাদ্যশস্য কেনে, তার মধ্যে একদম উপরের দিকে রয়েছে বাংলাদেশ। প্রকৃতির খামখেয়ালিপনা আর এল নিনোর কারণে বিশ্বে চালের বাজারও খুব খারাপ। চালের মূল্যের সূচক ১১ বছরের মধ্যে রয়েছে সর্বোচ্চ স্থানে। ভারত চাল রপ্তানিতে লাগাম টানলে, দাম বাড়বে আন্তর্জাতিক বাজারে। আর সেই পথ যদি অনুসরণ করে ভিয়েতনামার, থাইল্যান্ড সহ অন্যান্য চাল রপ্তানিকারক দেশ, পরিণতি টা কি হবে ভাবতে পারছেন?
বাংলাদেশের বহু ব্যবসায়ী ভারত থেকে প্রচুর পরিমাণ সিদ্ধ চাল আমদানি করে থাকে। দুই দেশের মধ্যে সরকারিভাবেও লক্ষ লক্ষ টন চাল কেনার চুক্তি হয়। করোনা মহামারির সময়, ভারত থেকে আমদানি খরচ কিছুটা কম থাকায় বাংলাদেশ সরকারি ভাবে প্রচুর চাল কিনেছে। সাধারণত বছরের শেষ দিকটা আমন ধান আসার আগে পর্যন্ত লম্বা সময়ের বাজার স্থির থাকতে বাংলাদেশকে চাল আমদানি করতে হয়। সেখানে ফার্স্ট চয়েজ ভারত। ২০২১ সালে বাংলাদেশ সাশ্রয় মূল্যে ভারত থেকে পেয়েছে প্রায় ৫ লক্ষ টন চাল। বাংলাদেশকে মিয়ানমার থাইল্যান্ড প্রস্তাব দিলেও, ভারতের মতো কম দামে চাল দিতে পারেনি। পরিবহন সহজ, খরচ কম আর চালের ভালো গুণমানের কারণে বাংলাদেশ ভারত থেকে চাল আমদানি করে, তবে প্রয়োজন অনুযায়ী। বাংলাদেশও কৃষি সমৃদ্ধ দেশ। সেখানে চাল উৎপাদনও কিন্তু কম হয় না।
বাংলাদেশের বহু বিশেষজ্ঞ এবং খাদ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা মনে করছেন, আপাতত বাংলাদেশ পাবলিক স্টোরেজে পর্যাপ্ত খাদ্য রয়েছে। এই মুহূর্তে ভারত চাল রপ্তানি নিষিদ্ধ করলে তাৎক্ষণিক কোন সমস্যা হবে না। দেশীয় উৎপাদনও বেশ ভালো। বাংলাদেশের খাদ্য অধিদপ্তরের কাছে ১২ই জুলাই পর্যন্ত মজুদ ছিল প্রায় ১৯ লক্ষ টন খাদ্যশস্য। এছাড়াও দেশটাতে আমদানি শুল্ক এখন প্রায় ৬২ শতাংশ। তাই এই হারে ব্যবসায়ীরা সেভাবে চাল আমদানি করবে না। মূলত দেশটার বেসরকারি খাত চাল আমদানি করে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রায় সাত শতাংশ বেশি চাল আমদানি করেছে। চাল গম সরবরাহের বিষয়ে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সেভাবে পোক্ত কোনো চুক্তিও নেই। কিন্তু পুরো বিষয়টাই আটকে রয়েছে ‘ আপাতত ‘ আর ‘তাৎক্ষণিক’ এর গণ্ডিতে। বর্ষা পরিস্থিতি যদি খারাপ হয় তাহলে চালের জন্য বাংলাদেশকে নির্ভর করতে হবে আমদানির উপর। যেমনটা হয়েছিল করোনার সময়। তখন কি চাল পাবে? তবে প্রার্থনা, এমনটা যেন না হয়।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম