।। প্রথম কলকাতা ।।
Baba Harbhajan Singh: মৃত্যুর পরও ভারতের এই সৈনিক ডিউটি করেন প্রতি রাতে। চিনের ঘাম ছোটে এই জওয়ানের নাম একবার উঠলে। নাথুলা সীমান্তে এক অদৃশ্য শক্তি আটকে দেয় ড্রাগনকে। হরভজন সিংয়ের কাহিনী জানলে গায়ে কাঁটা দেবে। মৃত্যুর পরও দেশের টানে ফিরে আসা। কেন মৃত জওয়ান হরভজন সিংয়ের ডিউটি পরে ১৩০০০ ফুট ওপরে চীন সীমান্তে? দেশভক্তি জলন্ত উদাহরণ আজ জেনে নিন। বরফে ঢাকা চীন সীমান্তে পাহারায় থাকা কোন জওয়ানের মনোযোগ একটু সরলেই বিপদ। বাবা হরভজন সিংয়ের হাতে চড় থাপ্পর খেয়েছেন এমনও দাবি করেছেন অনেকে। মৃত্যুর ৫৫ বছর পরও ভারতের মহানায়কের নাম শুনলে বুক শুকিয়ে যায় চীনের খলনায়কদের। যেন পিএলএর খেল খতম হলেই মুক্তি পাবে শহিদের জওয়ান আত্মা।
কেন একজন শহিদের ক্ষমতাকে চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করে ভারতীয় আর্মি? সিকিমের নাথুলা পাস থেকে ৮ কিলোমিটার দুরত্বে বাবা মন্দিরে ঘুরতে যান বহু পর্যটক
কিন্তু এই বাবা কোনও সাধু সন্ত নন ভারতকে রক্ষা করা এক বীর জওয়ান। ইন্ডিয়ান আর্মি বিশ্বাস করে আজও নাথুলার নায়ক একইভাবে রক্ষা করছেন ভারতের বর্ডার।
তাঁর বাঙ্কারকেই মন্দির করা হয় পরবর্তীকালে। ১৩১২৩ ফুট উচ্চতায় ৫০টা সিঁড়ি বেয়ে পৌঁছতে হয় বাবার মন্দিরে। সীমান্তবর্তী অঞ্চল নাথুলা সবসময় স্পর্শকাতর। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে সাড়ে ১৪ হাজার ফুট উচ্চতায় টাকা মারাত্মক ঠান্ডা, দুর্গম ও সঙ্কীর্ণ এলাকায় ১২ মাস ২৪ ঘন্টা ডিউটি করে যান বাবা হরভজন সিং। ভারতীয় আর্মি তার প্রমাণ পেয়েছে হাতেনাতে। চীনের কোনও স্ট্র্যাটেজিই কাজে আসে না এই এলাকায়।
কীভাবে মৃত্য হয়েছিল ভারতের এই বীরপুত্রের?
জওয়ানদের সঙ্গে সঙ্গে সিকিমের মানুষের বিশ্বাস শত্রুপক্ষ থেকে কোনও এলে আগাম ইঙ্গিতে সেনাদের সতর্ক করে দেন বাবা হরভজন। তাঁর এই অবদানের কারণে তাঁর মাসিক বেতন বাড়িতে পাঠানো হত। বার্ষিক ছুটিও পেতেন তিনি। তাঁর জন্য আলাদা করে ট্রেনে সিট বুক করা হত। তাঁর ব্যাগ গোছানো হত এবং তিনজন সেনা জওয়ান তাঁর বাড়িতে সেটা পৌঁছে দিতেন। ১৯৬৫ সালে মাত্র ১৯ বছর বয়সে ভারতীয় সেনাবাহিনীর পঞ্জাব রেজিমেন্টে যোগ দেন পঞ্জাবের হরভজন সিং। ১৯৬৮ সালে ২২ বছর বয়সি হরভজন কর্মরত ছিলেন নাথুলায়।
তখন নাকি তিনি বলতেন চীনের সেনা দেখলে তাক রক্ত টগবগ করে ফোটে। তার বছরখানেক আগে এই অঞ্চল সাক্ষী ছিল ইন্দো-চিন যুদ্ধের। ১৯৬৮ সালের অক্টোবরে প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে হরভজন সিংহ রওনা দিয়েছিলেন আউটপোস্টের পথে। কিন্তু শেষ অবধি তিনি তাঁর গন্তব্যে পৌঁছাননি। টানা ৩-৪ দিন ধরে খোঁজ চালানোর পরও হরভজনের কোনও সন্ধান পাওয়া যায়নি। শোনা যায়, তিনি এক সেনা জওয়ান প্রীতম সিংহের স্বপ্নে দেখা দিয়েছিলেন। বলে দিয়েছিলেন তাঁর দেহ কোথায় পাওয়া যাবে সেখান থেকে উদ্ধার হয় বাবার নিথর দেহ।
বাবা মন্দিরে গেলে দেখতে পাবেন হরভজন সিংহের সামরিক উর্দি, জুতো সযত্নে সংরক্ষণ করা আছে। তাঁর জন্য বিছানাও তৈরি করা রয়েছে। নাথুলায় কর্মরত সেনা জওয়ানদের দাবি, সেখানে মাঝে মাঝে হরভজন সিংহ বিশ্রাম নেন এবং বিছানা এলোমেলো হয়ে যায়। একই জিনিস দেখা যায়, তাঁর জুতোর ক্ষেত্রেও। জুতোতেও মাঝে মাঝে কাদা, ধুলো লেগে থাকে। যেন বাইরে থেকে ঘুরে এসে ঘরে ঢুকেছে কেউ। একেই বলে দেশভক্তি, যা মৃত্যুর পরও অমর করে রেখেছে বাবাকে, বাবা হরভজন সিংকে৷
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম