।। প্রথম কলকাতা ।।
Sandhya Mukhopadhyay: বাড়ির নম্বর ডি/৬১৩। কালজয়ী স্মৃতি বিজড়িত বাড়িটা আর নেই। কদিন পর গেলে এখানে একটা নতুন বাড়ি দেখতে পাবেন ঠিকই, কিন্তু বাঙালির মনে তার কোন তাৎপর্য থাকবে না। এর আগেও কলকাতার বুকে বহু বিখ্যাত ব্যক্তিদের বাড়ি ভেঙে মাথা তুলেছিল বহুতল, এবার সেই তালিকায় যোগ হল সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি।
একাধিক কালজয়ী গানের সাক্ষী গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের বাড়িটা আর নেই। সেখানে গজিয়ে উঠবে একটা বহুতল ভবন। ভীষণ মন খারাপ গীতশ্রীর ভক্তদের। তাঁর গান বাঙালির ঐতিহ্য। বাঙালির বহু মধুর স্মৃতির বুননের নেপথ্যে রয়েছে তাঁর সুরের জাদু। কয়েকটা প্রজন্ম শৈশব থেকে বড় হয়ে উঠেছে গীতশ্রীর গান শুনে। সেই ষাটের দশক থেকে তাঁর সুরের ভুবনে মেতে আছে গোটা বাংলা। লেক গার্ডেন্সে সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের বাড়িটি তাঁর বহু কালজয়ী গানের সঙ্গী। যার সঙ্গে যোগ রয়েছে বাংলা গানের স্বর্ণযুগের ২ কিংবদন্তির। বাড়িটি সম্পর্কে যত বলা হবে ততই যেন কম। গীতশ্রীর স্বামী গীতিকার শ্যামল গুপ্ত ছিলেন একজন স্বনামধন্য ব্যক্তি। বাড়িটাতে এমন কোন শিল্পী নেই যে তাঁদের পা পড়েনি। এমনকি বিদেশ থেকেও বহু শিল্পী এসে প্রথমে এই বাড়িতে এসে ঢুকতেন। এই বাড়িতেই শেষ জীবন কাটিয়েছিলেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। তাঁর প্রয়াণের এক বছর হল, কিন্তু বাড়িটাকে ধরে রাখা গেল না। গীতশ্রীর স্মৃতি বিজড়িত মহামূল্যবান এই বাড়ি যে কীভাবে অকেজো হয়ে গেল তা যেন ভাবনারও বাইরে। বাড়িটা শুধুমাত্র কংক্রিটের ইমারত নয়, মহামূল্যবান সম্পদ। স্বাভাবিকভাবেই ভারাক্রান্ত ভক্তদের মন।
গীতশ্রীর মৃত্যুর পর বাড়ির হাত বদল হতেই সেখানে পড়েছে প্রোমোটারের থাবা। বিষয়টি সামনে আসতেই ব্যাপক হইচই শুরু হয়েছে। বাড়িটি ব্যক্তি মালিকানায় থাকায় পুরসভার তরফ থেকে সংরক্ষণও করা যায়নি। ‘প্রথম কলকাতার’ তরফ থেকে গীতশ্রীর মেয়ে সৌমি সেনগুপ্তর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান এই বিষয়ে “কোনো মন্তব্য নেই। কোন প্রয়োজন নেই কোনো মন্তব্য করার। আমার প্রয়োজন, আমার চাহিদা, আমার সিদ্ধান্ত”। বাড়িটা যে ভেঙে পড়ছিল এমনটাও নয়। গীতশ্রীর মেয়ের সিদ্ধান্তে বাড়িটা ভাঙা হয়েছে। গীতশ্রীর স্মৃতি বিজড়িত স্থান এখন আর নেই। যে বাড়িটা হেরিটেজ তকমা পাওয়ার কথা সেখানেই কদিন পরে মাথা তুলবে ঝাঁ চকচকে বহুতল। গীতশ্রীর স্মৃতিমেদুর বাড়ি এখন স্মৃতির অতলে।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম