।। প্রথম কলকাতা ।।
Wintersfood: শীতকাল অনেকেরই পছন্দের। শীত মানেই নানান রকমারি খাবার। ফল সবজিতে ভরা থাকে এই মরশুম। আবার এই সময় শরীর সুস্থ রাখাও বেশ কঠিন কাজ। এই সময় ঠান্ডা, ফ্লু, ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা যেন লেগেই থাকে। স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের মাধ্যমে শীতকে উপভোগ্য করে তোলার চাবিকাঠি লুকোনো আছে শীতের খাবারের মধ্যেই। সেগুলি নিয়মিত খাদ্যতালিকায় রাখলে শরীর মন সবই সুস্হ থাকবে। শীত মানে প্রচুর খাবারের সমারোহ। ভালো থাকতে হলে প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় কোন বারোটি খাবার রাখতেই হবে দেখে নেওয়া যাক।
গ্রিন টি
শীতের কুয়াশা মোড়া সকালটা শুরু হোক গ্রিন টি তে চুমুক দিয়ে। তাতে মন ও শরীর দুইই চনমনে হবে। গ্রিন মধ্যে রয়েছে শক্তিশালী অ্যান্টি অক্সিডেন্ট অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান। শীতের দিনে দুই থেকে তিন কাপ গ্রিন টি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করবে।
মধু
ব্রেকফাস্টে অন্য কিছুর সঙ্গে দু চামচ মধুও থাক। জ্বর ও ঠান্ডা প্রতিরোধে মধুর জুড়ি নেই। মধুর মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান। এটি ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করে।
মটরশুটি
শীত মানেই সবুজ মটরশুটি। কাঁচা বা তরকারিতে দিয়ে আমরা খেয়ে থাকি। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন কে, ম্যাগনেসিয়াম ও ক্যালসিয়াম থাকে। এতে পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিনও পাওয়া যায়। মটরশুটিতে পলিফেনল এর উপস্থিতি ক্যানসার, হৃদরোগের সমস্যা ও শর্করা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এছাড়াও এতে থাকা স্যাপোনিন ক্যানসারের প্রতিরোধক হিসাবে কাজ করে।
ফুলকপি
ফুলকপি ছাড়া শীত ভাবা যায় না। ফুলকপির তরকারি, রোস্ট, বা ঝুরঝুরে করে কেটে ফুলকপি ভাজা দিয়ে ভাত রুটি সবই খাওয়া যায়। ফুলকপিকে সুপার ফুড বলা হয় এর পুষ্টিগুণের কারণে। ফুলকপিতে প্রায় ৯২ ভাগ জল থাকে যা শরীরে আর্দ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। এতে থাকা পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার ওজন নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে। এছাড়াও এতে উপস্থিত গ্লুকোসিনলেট লালা রসের সংস্পর্শে এসে আন্টি ক্যানসার যৌগ তৈরি করে। ১৭ শতাংশ ভিটামিন সি, ২০ শতাংশ ভিটামিন কে ও ফলিক অ্যাসিড পাওয়া যায় ১০০ গ্রাম ফুলকপি থেকে। এতে ফাইটোক্যামিক্যাল ও আন্টিঅক্সিডেন্টে এর উপস্থিতির কারণে এটি সুপারফুডে পরিণত হয়েছে।
ব্রকলি
শীতের আরেকটি সুপারফুড হচ্ছে ব্রকলি। এতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার, ভিটামিন সি থাকায় এটি কোষ্ঠোকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। ব্রকলিতে ক্যালসিয়াম এর উপস্থিতি থাকায় এটি হাড়ের গঠনে সাহায্য করে । এতে থাকা ভিটামিন কে হৃদরোগজনিত সমস্যা প্রতিরোধ করে। এছাড়াও যাদের অ্যানিমিয়া আছে তাদের জন্য ব্রকলি বেশ উপকারী।
গাজর – স্যালাড বা রান্না করে গাজর খাই আমরা। শীতের খাবার হিসেবে গাজরও বেশ ভালো। গাজরের মধ্যে রয়েছে উচ্চ পরিমাণ বিটা ক্যারোটিন। গাজর বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ প্রতিরোধ করে এবং শ্বাসতন্ত্রের সমস্যা কমিয়ে ফুসফুসকে সুরক্ষা দেয়।
বিট
শীতে নিয়মিত খাদ্য তালিকায় রাখতে পারেন বিট। এতে নাইট্রেটের পরিমাণ বেশি থাকায় এটি উচ্চ রক্তচাপ ও রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে। এছাড়া এতে উপস্থিত পেকটিন কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। সেই সঙ্গে ওজন কমাতেও সহায়তা করে। এতে থাকা ক্যালসিয়াম ও ফসফরাসের উপস্থিতি থাকায় এটি হাড়ের সুরক্ষা করে। বিটে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফোলেট থাকায় এটি মানসিক স্বাস্থ্য উন্নত করে। হৃদরোগের কার্যক্ষমতা ভালো রাখতেও বিট বেশ উপকারী।
সজনে
শীতের সবজির মধ্যে অন্যতম সেরা হচ্ছে সজনে। এটা এমনই এক জাদুকরি সবজি যেটার পাতা, ফলমূল, বীজ, ফুল সব কিছুতেই ভরপুর পুষ্টিগুণ থাকে। সজনে পাতায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, সি, বি কমপ্লেক্স ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, জিঙ্ক, বিটা ক্যারোটিন ও অ্যামাইনো অ্যাসিড থাকে। এছাড়া সজনেতে অ্যান্টি মাইক্রোবিয়্যাল উপাদান, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। প্রতিদিন সজনে পাতার রস খেলে হজমশক্তি বৃদ্ধি পায়।
পালং শাক
শীতের খাবারের ডিসে নিয়মিত পালং থাকবেই। পালংয়ের নানান পদ হয়। ভিটামিন সি তে ভরপুর পালং শাক। এতে থাকা ভিটামিন এ, কে, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন যা অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমিয়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এইসব কারণে শীতে নিয়মিত খাদ্য তালিকায় পালং শাক রাখুন।
কমলা লেবু
শীতের মিষ্টি রোদ পিঠে নিয়ে কমলা লেবু খাওয়ার মজাই আলাদা। শীতকালের উপকারী একটি ফল কমলা। প্রচুর ভিটামিন সি থাকায় সর্দি কাশি ঠান্ডা লাগা থেকে রক্ষা করে। এটি ওজন কমানোর জন্যও উপকারী। কম ক্যালরিযুক্ত এই ফলে প্রচুর ফাইবার আছে। এই ফলে সোডিয়াম ও পটাশিয়ামের পরিমাণ কম থাকায় এটি হৃদরোগীদের জন্যও ভালো। এতে কোলিন ও জিয়ানথিনের উপস্থিতি থাকায় এই ফলটি নার্ভ, চুল ও ত্বকের জন্য উপকারী।
আঙুর
শীতের আরও একটি জনপ্রিয় ফল হল আঙুর। কালো ও নীল আঙুরে বেশি অন্থসায়ানিন থাকে। এছাড়াও এতে বিটা ক্যারোটিন, লাইকোপিন, ইলজিক অ্যাসিড ইত্যাদি অ্যান্টি ক্যান্সার উপাদান থাকে। নিয়মিত এ ফল থেকে কোলেস্টেরল ও হৃদরোগের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে থাকে।
আমলকি
শীতে নিয়মিত আমলকি খেতে পারেন। অনেক বাড়িতেই এই সময় আমলকি কিনে রোদে শুকিয়ে সারা বছরের জন্য তৈরি করে রাখা হয়। সব ফলের মধ্যে একমাত্র আমলকিতে সবচেয়ে বেশি ভিটামিন সি-এর উপস্থিতি রয়েছে। এছাড়াও এতে থাকা পলিফেনল হজমশক্তি বৃদ্ধি করে। সেই সঙ্গে লিভারের কার্য ক্ষমতা বাড়াতেও এই ফল সহায়তা করে।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম