।। প্রথম কলকাতা ।।
RATHAJATRA RITUALS: পুরীতে রথযাত্রার পথ পরিষ্কার করা হয় সোনার ঝাড়ু দিয়ে। জগন্নাথধামের রথযাত্রা সম্পর্কে এই অজানা তথ্য জানলে গা শিউরে উঠবে আপনার। শ্রীক্ষেত্রের রথের রশি যদি একবার ছোঁয়া যায় তাতে ১০০ যজ্ঞের সমান পূণ্য লাভ। গুন্ডিচায় যাওয়ার পথে এক স্থানে নিজে থেকেই রথ থেমে যায়। জানেন কেন? রথের দিন জগন্নাথদেবের এই অলৌকিক লীলা জানলে সৌভাগ্যবান হবেন আপনি। পুরাণ অনুযায়ী একদা সুভদ্রা নিজের বড়ভাই কৃষ্ণ ও বলরামের কাছে নগর দেখার ইচ্ছা জানান। তখন দুই ভাই ও বোন রথে বসে নগর ভ্রমণের জন্য বের হন। এই দিনটির জন্য অপেক্ষা করে থাকেন লক্ষ লক্ষ ভক্ত। রথের নাম, কাঠ থেকে রং, সব হয় নির্দিষ্ট রীতি মেনে। রথের দিনই জগন্নাথদেবের নানা অলৌকিক মহিমা দেখতে পাওয়া যায়।
রথযাত্রায় জগন্নাথ, বলরাম, শুভদ্রা ছাড়াও তাঁদের সঙ্গে সহযাত্রী হিসেবে থাকেন অন্যান্য দেব-দেবীও। জগন্নাথের সঙ্গে থাকেন মদনমোহন বলরামের সঙ্গে থাকেন রামকৃষ্ণ শুভদ্রার সঙ্গে থাকেন সুদর্শনা। অনেকেই জানেন না তিনটি রথের আবার আলাদা নাম থাকে। জগন্নাথের রথটির নাম নন্দীঘোষ, বলরামের রথটির নাম তলধ্বজ,শুভদ্রার রথের নাম দর্পদলন। প্রায় আনুমানিক সাতশো বছরের পুরনো পুরীর মন্দির। রথযাত্রা উৎসবের শুরু হয় জগন্নাথ দেবের স্নানযাত্রা থেকে। প্রতি বছর রথযাত্রার উদ্বোধন করেন সেখানের রাজা। রাজতন্ত্র না থাকলেও এখনও বংশপরম্পরা ক্রমে পুরীর রাজপরিবার আছে।
বর্তমান রাজা হলেন দিব্যসিংহ দেব। সুগন্ধী জল ছিটিয়ে সোনার ঝাড়ু রাস্তা পরিষ্কার করেন। তারপর পুরীর রথের দড়িতে টান পড়ে। রথযাত্রার দিন জগন্নাথদেবের লীলা সকলে সাক্ষী থাকেন। বৃষ্টির সঙ্গে এক আজব সংযোগ রয়েছে রথযাত্রার। জগথের নাথের লীলা কেমন কয়েকশো বছর ধরে রথযাত্রার দিন বৃষ্টি হয়ে থাকে। এত বছরে এমন কোনও রথযাত্রার দিন যায়নি যেদিন বৃষ্টি হয়নি।
রথ তৈরি করতে কোনও ধাতব পেরেক বা স্ক্রু-এর ব্যবহার করা হয় না। বদলে প্রাচীন প্রথা মেনে ব্যবহার করা হয় কাঠের খুঁটি এবং জয়েন্ট। বিশেষ ধরনের নিমকাঠ দিয়ে এই রথ তিনটি তৈরি করা হয়। প্রতি বছর রথযাত্রার পর রথটি ভেঙে ফেলা হয়। এবং মন্দিরের রান্নাঘরে জ্বালানি কাঠ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। সেই কাঠের তৈরি খাবার ঈশ্বরকে ভোগ দেওয়া হয়। এবং পরে তা ভক্তদের মধ্যে বিতরণ করা হয়।
রথযাত্রার আগে জগন্নাথ বলরাম এবং সুভদ্রাকে ২০৮ কেজি সোনার গয়না পরানো হয়ে থাকে। আরেক অলৌকিক ঘটনার ব্যাখ্যা যা কারোর কাছে নেই নগর যাত্রার সময় জগন্নাথের রথ তাঁর এক ভক্তের সমাধির সামনে এসে কিছু ক্ষণের জন্য থেমে যায় প্রচলিত লোককথা অনুযায়ী জগন্নাথের এই ভক্তের নাম সালবেগ। জগন্নাথের দর্শনের জন্য মন্দির পৌঁছতে পারেননি তাঁর মৃত্যুর পর তাঁকে সমাধি দেওয়া হয়। তাঁর এই সমাধির সামনে এসে জগন্নাথের রথ নিজে থেকেই দাঁড়িয়ে পড়ে। শত চেষ্টা করও কিছু ক্ষণের জন্য রথের চাকা ঘোরানো যায় না। তার পর সালবেগের আত্মার উদ্দেশে শান্তি কামনা করলে রথ এগোতে শুরু করে।
বোনের কথা রেখেছিলেন জগন্নাথদেব। সেই থেকেই রথযীত্রা শিরি। যত্রাপথের মাঝে গুন্ডিচায় নিজের মাসির বাড়ি যান তাঁরা। এখানে ৭ দিন থাকেন তাঁরা। এ সময়ে নগরের যাত্রা পূর্ণ করে পুরী ফিরে আসেন জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা। তবে শুধু পুরীই নয়, দেশের বিভিন্ন ইস্কন মন্দিরে রথ যাত্রার আয়োজন করা হয়। পশ্চিমবঙ্গে সাড়ম্বরে পালিত হয় রথ। পশ্চিমবঙ্গের মাহেশ, মহিষাদলের রথযাত্রা অত্যন্ত বিখ্যাত।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম