।। প্রথম কলকাতা ।।
Russia Pakistan: পাকিস্তান রাশিয়া থেকে একটা হিউজ ডিসকাউন্টে তেল কিনলো, কিন্তু সেটাই সবথেকে বড় ব্লান্ডার। ডিজেলের চাহিদা থাকা পাকিস্তান রাশিয়ার ক্রুড তেল কিনে বোকা হয়ে গেল। ভারতকে সাইড করতে চিনের নতুন খেলা এখানেই, আর ঘুঁটি হয়ে গেল মস্কো। এক্ষেত্রে ইমরান খান কিছু না করেই বোকা বানিয়ে দিল শাহবাজ সরকারকে। পাকিস্তান রাশিয়ার তেল কেনার পর যেভাবে ঢাকঢোল পেটাচ্ছে বাস্তবে ততটাই অর্থনৈতিক লাভ হবে তো পাকিস্তানের? হবে না বরং কয়েকগুণ লস হওয়ার আশঙ্কা এমনটাই বলছে রিপোর্ট। পাকিস্তানিরা কি এখনও মূর্খের স্বর্গে বাস করবে? ইমরান খান প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন যা করতে পারেনি শাহবাজ সরকার সেই ডিল ক্র্যাক করে ফেলেছে। পাকিস্তানের জন্য এটা গর্বের দিন। টুইট করে হোক বা নিউজে হোক ঠিক এমনটাই প্রচার করছে পাকিস্তানের জোট সরকার৷ বিশেষজ্ঞরা বলছেন এটা হতে পারে কফিনের শেষ পেরেক। তবে হ্যাঁ এতে একটা লাভ অবশ্যই হয়েছে পাকিস্তানের ইউক্রেনকে লাগাতার অস্ত্র সাপ্লাই করার পরও মস্কোর সঙ্গে মারাত্মক একটা ঘনিষ্ঠতার শুরু হল ইসলামাবাদের।
এই গোটা ইকুয়েশনের নেপথ্যে যে চিন রয়েছে সেটা আন্দাজ করা যায়। কিন্তু রাশিয়ার থেকে ক্রুড তেল কিনে লাভের লাভটা কি হবে পাকিস্তানের? এটাই এখন সবথেকে বড় প্রশ্ন। খবরটা এরকম রাশিয়ার তেল পৌঁছল পাকিস্তানে, হিসেবে ভারতের থেকেও সস্তায় পেট্রোল বিকোচ্ছে সেদেশে। কিন্তু গভীরে ঢুকে দেখুন এখানেই তো লস। ডিজেলের চাহিদা থাকা পাকিস্তান ফেঁসে গেল পুরোপুরি। পাকিস্তানে পরিবহন থেকে শুরু করে সবেতেই ডিজেলের চাহিদা। ধরে নিন মোট তেলের ৩৯ শতাংশ ডিজেলেই যায়, ১৫ শতাংশ ফারনেস তেল লাগে। রাশিয়া এক ব্যারেলে ক্রুড তেল পরিশোধিত করার পর ৫০ শতাংশ ফারনেস তেল ও ৩২ শতাংশ ডিজেল বের হয়। আর আরব তেলে সেখানে ৪৫ শতাংশ ডিজেল ২৫ শতাংশ ফারনেস তেল বের হয়। তাহলে লাভের লাভটা কি? ফারনেস তেল কী কাজে লাগে? পাকিস্তানের বিভিন্ন পাওয়ার প্ল্যান্টে বিদ্যুত তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। কিন্তু এই পাওয়ার প্ল্যান্টগুলোই এখন এলএনজির দিকে ঝুঁকছে। পাকিস্তান আরব রিফাইনারি লিমিটেড (parco) এবং পিআরএল প্রতিবছর ৩০ টন ফার্নেস তেলের লস করছে।
দ্বিতীয় পয়েন্ট, রাশিয়ান তেল পরিবহনে দ্বিগুণ খরচ পাকিস্তানের। মস্কোর পাকিস্তানকে এক লক্ষ মেট্রিক টন তেল করাচী বন্দরে পাঠানোর কথা ছিল। কিন্তু ইসলামাবাদ জানায় তাদের করাচী বন্দর এত বড় নয়। তাই ওমান থেকে ৫০ হাজার মেট্রিক টন করে দুটো জাহাজে তেল পাঠানো হয়। এর মানে এখানেই খরচ দ্বিগুণ হয়ে গেল। রাশিয়া বলেছে ১৬-১৮ ডলার ছাড় দেওয়া হবে এই সংখ্যা প্রকাশ্যে আসে না। বিশেষজ্ঞদের দাবি, এখানে ১৬-১৮ ডলার ছাড় কোনও কাজেই আসবে না, কারণ পরিবহন খরচ অনেক বেশি। সেখানে পাকিস্তানের রিফাইনারিগুলো এতদিন আরবের লাইট ভেরিয়েন্ট তেল পরিশোধন করত। এমনকি আরব কিন্তু অনেকটা রিফাইন করেই পাঠায় পাকিস্তানকে এই তেল। কিন্তু রাশিয়া বলে দিয়েছে তারা ক্রুড তেলই পাঠাবে ইসলামাবাদকে। এবার বুঝতে পারছেন রাজনৈতিক একটা ইস্যু সফল করতে গিয়ে কতটা বড় বিপদ যেচে ডাকল শাহবাজ শরিফের দেশ৷
ইমরান খান যা করতে পারেনি শাহবাজ করে দেখাল প্রচার চলছে এমনই। অথচ খানের আমলে শাহবাজ দলই এই ডিলের বিরোধ করেছিল। কারণ এটাকে তারা অ্যান্টি-আমেরিকা ডিল বলছিল। যদিও তখনও তেল কিনলে একইভাবে ঠকত পাকিস্তান। কূটনৈতিক মহল বলছে, তবে এক্ষেত্রে ভারতের ভাবনার কারণ রয়েছে। যত দিন যাবে পাকিস্তানের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক আরও মজবুত হবে। রাশিয়া জানে চিনের প্রভাবে পুরোপুরি পাকিস্তান প্রভাবিত
চিন হয়ত প্রমোটও করেছে। পাকিস্তানকে রাশিয়ার কাছে ২০১৭ সালে আমেরিকার বহু থিঙ্কট্যাঙ্ক প্রেডিক্ট করেছিল পাকিস্তান রাশিয়া চিন সম্পর্ক বাড়তেই থাকবে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতির নিরিখে পাকিস্তানের রাশিয়ান তেল কেনা যে চরম ব্লান্ডার এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞমহল৷
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম