।। প্রথম কলকাতা ।।
Side effects of Antacids: সাধারণত রোগের তালিকায় গ্যাসকে খুব একটা পাত্তা দেওয়া হয় না। তবে গ্যাস যদি দিনের পর দিন আপনাকে জ্বালাতে থাকে, আর তার থেকে মুক্তি পেতে যদি মুঠো মুঠো ওষুধ খান তাহলে শিয়রে চরম বিপদ। গ্যাস হওয়া বর্তমানে স্বাভাবিক সমস্যা। আপনি যা খান তার কোন অংশ হজম না হলে সেই হজম না হওয়া খাবার পৌঁছে যায় বৃহদন্ত্রে। সেখানেই চলে বিপাকক্রিয়া, যার থেকে উৎপন্ন হয় গ্যাস। সব থেকে বেশি গ্যাস হয় দুগ্ধ জাতীয় খাবার খেলে। এই সমস্যাকে বলা হয় ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স। শুধু দুগ্ধজাত খাবার না, অনেকের আবার গাজর, ফুলকপি, বাঁধাকপি, বিন, বরবটি খেলেও গ্যাস হয়। ব্যক্তিভেদে কোন খাবার খেলে গ্যাস হবে তার পার্থক্য রয়েছে। আসলে গ্যাসের সমস্যার মূল রয়েছে খাবার। এখানেই দিতে হবে বিশেষ নজর। বদল আনতে হবে ডায়েটে। খেয়াল রাখতে হবে কোন খাবার খেলে গ্যাস হচ্ছে। তার বদলে যদি মুঠো মুঠো গ্যাসের ওষুধ কিংবা অ্যান্টাসিড খান তাহলে চাপা পড়বে আসল সমস্যা। উপরন্তু শরীরে বাসা বাঁধবে ক্যান্সারের মতো মারণ রোগ। আপনার সামান্য ভুলেই গ্যাসের মত হালকা একটি সমস্যা মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়াতে পারে। গ্যাস হলেই ওষুধ খাওয়ার ফল যে কতটা ভয়ঙ্কর তার প্রমাণ বিভিন্ন গবেষণায় পাওয়া গিয়েছে। এই অভ্যাস না বদলালে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। অনেকই বাড়িতে রীতিমত অ্যান্টাসিড জাতীয় ওষুধ স্টক করে রেখে দেন। আবার অনেকের কাছে সারা বছর এই ওষুধ খাওয়া রীতিমত অভ্যাসে দাঁড়িয়েছে।
অ্যান্টাসিড কেন প্রাণঘাতী?
ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটির মেডিসিন বিভাগের গবেষণা অনুযায়ী, অতিরিক্ত অ্যান্টাসিড হাড় ভঙ্গুর করে দেয়, মারাত্মক ক্ষতি হয় কিডনির। সবথেকে বড় কথা, হৃদপিণ্ডের এতটাই দফারফা হয়ে যায়, যে কোন মুহূর্তে হৃদরোগের আশঙ্কা তৈরি হয়। তাই যারা প্রয়োজন ছাড়াই শুধুমাত্র মনের শান্তির জন্য অ্যান্টাসিড খাচ্ছেন তারা সাবধান হন। অ্যান্টাসিড জাতীয় ওষুধ মৃত্যুর হার প্রায় ২৫ শতাংশ বাড়িয়ে দেয়। ক্রনিক গ্যাস অম্বলের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে দেদার অ্যান্টাসিড খেলে হয়তো সাময়িক স্বস্তি মিলবে কিন্তু শরীরের ভিতরে ভিতরে তৈরি হবে দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা। এর ফলে পাকস্থলীর ক্যান্সারও হতে পারে। সাধারণত পাকস্থলীর ক্যান্সারের ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে বোঝা যায় না। ক্যানসারের মতো মারণ রোগ দেরি করে শনাক্ত হলে তার পরিণাম যে কতটা ভয়াবহ, তা কম বেশি সবাই জানেন। অ্যান্টাসিড জাতীয় ওষুধ পাকস্থলীতে অতিরিক্ত অ্যাসিড থাকলে তা কমিয়ে দেয়। কিন্তু যদি পাকস্থলীতে অতিরিক্ত অ্যাসিড না থাকে তাহলে ওই অ্যান্টাসিডের উপাদানগুলি আপনার শরীরের অন্যান্য অঙ্গের ক্ষতি করতে থাকে। পাশাপাশি দেখা দেয় রক্তাল্পতার সমস্যা। ওষুধের মারাত্মক উপাদানগুলি জমা হয় কিডনিতে। তখন কিডনিরও ক্ষতি হয়। একদিকে শরীরের অক্সিজেনের মাত্রা কমে অপরদিকে বাড়তে থাকে রক্তচাপ। স্বাভাবিকভাবেই তখন হৃদরোগের আশঙ্কা বাড়ে। তাই গ্যাসের সমস্যাকে একেবারেই হালকা ভাবে নেবেন না। তবে মুঠো মুঠো অ্যান্টাসিডের উপর ভরসা করার কোন দরকার নেই। ওষুধ অবশ্যই খান কিন্তু তা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী। কোলাইটিস, ক্রোনস ডিজিজ, ডায়াবেটিস, ডাইভার্টিকুলাইটিস, আলসারেটিভ এবং ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোমের মতো সমস্যায়ও পেটে গ্যাস তৈরি হয়। তাই রোগ পুষে রাখার কোনো দরকার নেই।
গ্যাস থেকে বাঁচতে মেনে চলুন সামান্য নিয়ম
•জাঙ্ক ফুট , ফাস্ট ফুড, স্ট্রিট ফুডকে এক্কেবারে না করে দিন।
•সারাদিন অল্প অল্প করে বারবার খান। ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকলে অ্যাসিড রিফ্লাক্স থেকে অনেকটাই রিলিফ পাওয়া যাবে।
•অতিরিক্ত কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন। এই ধরনের খাবার হজম হতে বেশ সময় নেয়। যার কারণে গ্যাস তৈরি হয় এবং জন্ম নেয় ব্যাকটেরিয়ার।
•পরিমিত পরিমাণে খান সফট ড্রিংকস, কফি এবং ফলের রস।
•রাতে খাবার অন্তত দু’ঘণ্টা পর ঘুমাতে যান। পারলে খাওয়ার পর কিছুক্ষণ হাঁটুন।
•প্রতিদিন নিয়ম করে আধ ঘন্টা এক্সারসাইজ করুন।
•মাঝে মাঝে হালকা গরম জল পান করলে গ্যাসের সমস্যা থেকে মুক্তি মেলে।
•প্রাকৃতিক উপায়ে গ্যাসের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে রসুন, জিরা, আদা প্রভৃতি জিনিস রান্নায় ব্যবহার করতে পারেন। তবে তা যেন অতিরিক্ত না হয়।
• সকালে ঘুম থেকে উঠেই এক গ্লাস চলে তুলসীপাতার রস মিশিয়ে খেলে গ্যাসের সমস্যার দূর হয়। এছাড়াও চায়ের সঙ্গে পুদিনা মিশিয়ে খেতে পারেন।
•গবেষণায় দেখা গিয়েছে খালি পেটে চা পানের অভ্যাস শরীরের জন্য বেশ ক্ষতিকারক। চায়ে থাকা ক্যাফিন নামক যৌগ খালি পেটে পাকস্থলীতে প্রবেশ করলে অম্লের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম