।। সুচিত্রা রায় চৌধুরী ।।
Nepal India: চিনের প্রভাব ফিকে নেপালে? ভারতের জলবিদ্যুৎ প্রকল্প মাস্টারপিস। বিদ্যুৎ নিয়ে ভাবনা শেষ বাংলাদেশের। ভারত বড় উপহার দিচ্ছে। নেপাল কীভাবে ব্যালেন্স করবে চিন আর ভারতের মধ্য। চিন নিজেদের অঙ্ক বুঝে নেবে ঠিকই। নেপালকে এ সেক্টরে স্বাবলম্বী করল ভারত পাল্টা দাম মিলবে তো। ভারত- নেপাল-চিন আর এর মাঝেই বাংলাদেশ৷ আপাদমস্তক জড়িয়ে যাচ্ছে চারটে দেশ৷ নেপালের এত বড় প্রজেক্ট হাতে নিয়ে ভুল করল না তো ভারত। চিনের ইশারায় চলে নেপালের সরকার অভিযোগটা নতুন নয়। নেপাল বলছে ভারত না থাকলে খোঁড়া হয়ে যেতে তারা।
নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুস্পকমল দহল প্রচন্ড আপাদমস্তক কমিউনিস্ট। চিনের পক্ষপাতিত্ব করতে তাঁর জুরি মেলা ভার এনিয়ে কোনও দ্বন্দ্ব হতে পারে না। তাহলে ভারত কিভাবে কূটনৈতিক সম্পর্ক চালাচ্ছে। এক্ষেত্রে কার লাভ হচ্ছে আদতে? নেপাল ঠিকঠাক ব্যালেন্স করতে পারবে তো সমস্তটা? ২০২১ জুন থেকে ডিসেম্বর ভারতের কাছ থেকে ৪০০ মেগাওয়াট করে বিদ্যুৎ কিনত নেপাল। তবে এবার সেই নেপালই ভারতকে বিদ্যুৎ রপ্তানি করছে।
কোথা থেকে সোর্স কী?
ভারত কি চিনা কোম্পানিগুলোর তৈরি ইলেকট্রিক আমদানি করল? না একেবারেই নয়। নেপালের সঙ্গে প্রজেক্ট অরুণ থ্রি চলছে ভারতের যা ২০২৪ সালের মধ্যে পুরোপুরি শেষ হয়ে যাবে। এবার ভারতের সাতলুজ জল বিদ্যুৎ নিগম (এসজেভিএন) লিমিটেডকে দ্বিতীয় জলবিদ্যুৎ প্রকল্প তৈরি করার অনুমতি দিয়ে দিয়েছে নেপাল। শঙ্খুয়াসভা এবং ভোজপুর জেলায় অবস্থিত
লোয়ার অরুণ প্রকল্পে কোনো জলাধার বা বাঁধ থাকবে না। এটি অরুণ-৩ এর একটি একক উন্নয়ন হবে। সাংখুয়াসভা জেলায় নদী থেকে প্রায় ২ হাজার ৩০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে।
বেজিং চটে গেল না তো? ইনভেস্টমেন্ট বোর্ড অব নেপালে সেদেশের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহল প্রচণ্ডর সিদ্ধান্তে। নেপাল স্বীকার করে নেয় ভারতকে তাদের দরকার। ম্যাপটা দেখুন নেপালের পশ্চিমাংশে রয়েছে সেতি নদী আর পূর্বাংশে রয়ছে অরুন নদী। বর্তমানে এসজেভিএন একটি ৯০০ মেগাওয়াট অরুণ- ৩ জলবিদ্যুৎ প্রকল্প তৈরি করছে। এই প্রকল্প পূর্ব নেপালের অরুণ নদীর উপর অবস্থিত। একটি রান-অব-রিভার যা ২০২৪ সাল নাগাদ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। চিনকে ঠিক কি বোঝাচ্ছে নেপাল? নাকি নেপালের লাভ হলে চিনেরই লাভ।
শুধু ভারতই সঙ্গে নয় নেপাল চিনের সঙ্গে একাধিক প্রজেক্টে ইনভল্ভ। পোখরা রিজিওনাল ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট দিয়ে দেদার বাণিজ্য হবে নেপাল ও চিনের মধ্যে। মিলিটারি মুভমেন্ট হলেও হতে পারে। ওয়েস্ট সেতি প্রজেক্ট চিন বিনিয়োগ করলেও বাণিজ্য হত না। আপগ্রেডিং রিং রোড প্রজেক্ট কাঠমান্ডুতে এর কাজ চলছে। তাতোপানি ড্রাই প্রজেক্ট চিনের টাকা কামানোর ভালো চান্স। আর ভারতের জন্য এবার বাংলাদেশেরও লাভ হবে।
ভারত সফরে আসছেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী। ওই বৈঠকে নেপাল থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ রফতানির জন্য ভারত তার ভূখণ্ড ব্যবহারের অনুমোদন দেবে বলে কূটনৈতিক সূত্রে খবর। বিষয়টি নিয়ে এরপর ভারত-বাংলাদেশ-নেপাল ত্রিপক্ষীয় সমঝোতার দিকটি খোলা হবে। কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন আসলে ব্যালেন্স করাটাই হচ্ছে সবথেকে টাফ জব। ভারতকেও তো আমেরিকা-রাশিয়ার মধ্যে ব্যালেন্স করে চলতে হয় নেপালও সেরকমই সম্পর্কের ভারসাম্য রক্ষা করে চলেছে ভারত ও চিনের মধ্যে। প্রত্যেকটা দেশেরই অধিকার রয়েছে দুটো দেশের সঙ্গে ব্যালেন্স করার। তবে দুটো দেশের জেনুইন যে ইন্টারেস্ট আছে তার খেয়াল রাখতে হবে নেপালকে। সেটা ক্ষুন্ন হলে গন্ডগোল বাধবেই৷
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম