।। প্রথম কলকাতা ।।
Rickshaw Puller: কদিন ধরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় একটা ছবি ঘোরাফেরা করছে নাকে অক্সিজেনের নল লাগিয়ে রিকশা চালাচ্ছেন মাঝবয়সী এক ব্যক্তি। তিনি এতটাই একা, অসহায় সোশ্যাল মিডিয়ায় এই মানুষটিকে দেখে চোখের জল ফেলেছেন অনেকেই। তাদেরকে জানিয়ে দিআর সেন্টুকে অক্সিজেন নল লাগিয়ে টানতে হবে না রিকশা। সোশ্যাল মিডিয়াই সেন্টুর জীবনের মোড় বদলে দিল। এবার বাতাস থেকে স্বাভাবিকভাবে আর পাঁচটা মানুষের মতনই অক্সিজেন টেনে নিতে পারবেন বাংলাদেশের এই রিকশাচালক। কীভাবে এই ম্যাজিক হল? জানতে ইচ্ছে করছে ? চলুন আজ বিশ্ব সংসারে যাঁর পাশে কেউ নেই তাঁর একার লড়াইটা শেয়ার করি আপনাদের সঙ্গে।
অসহায় মানুষদের জীবনে যা হয়, সেন্টুর সঙ্গেও তাই হয়েছে। কারও কাছে হাত পাততে পারেন না। নিজের ডাল-ভাত নিজেকেই জোগাড় করতে হবে তা সে শরীর যতই খারাপ হোক। পেটের দায় যে বড় দায়। তাই সেই জ্বালা মেটাতে অক্সিজেন নল লাগিয়েই রিকশা টানছিলেন মাইনুজ্জামান সেন্টু। ফুসফুসে সমস্যা কিন্তু তা নিয়ে বসে থাকলে সেন্টুর চলবে না এই গরমেও রিকশার পাশে অক্সিজেন সিলিন্ডার আটকে কত মানুষকে গন্তব্যে পৌঁছে দিয়েছেন প্রতিদিন। কষ্ট হয়েছে প্রচন্ড কিন্তু পেটের জ্বালা কি সেসব বোঝে?
সাত বছর ধরে জীবনযুদ্ধ অবশেষে শেষ হল। সেন্টুকে আর সবসময় অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে ঘুরতে হবে না। বাংলাদেশের রাজশাহীর সেন্টুর ছবি গত কদিন ধরে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল এবার তাঁর রোজগারের ব্যবস্থা করল বাংলাদেশ সরকার। সেন্টুর কথা জানতে পেরেই তাঁর চিকিৎসা ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার কথা ঘোষণা করেছেন বাংলাদেশের শ্রম ও কর্মসংস্থাপন প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান। বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন তহবিল থেকে সেন্টুর চিকিৎসার জন্য সহায়তার ঘোষণা করা হয়েছে। চিকিৎসকরা বলছেন সিওপিডি ও যক্ষ্মার জন্য সেন্টুর ফুসফুস দুর্বল হয়ে গিয়েছে। হৃদযন্ত্রের সমস্যাও আছে। এই জন্য তিনি ঠিকমতো অক্সিজেন টানতে পারতেন না বৈদ্যুতিক কনসেনট্রেটর নামের যন্ত্র ব্যবহার করে এবার থেকে তিনি বাতাস থেকে স্বাভাবিকভাবে অক্সিজেন টেনে নিতে পারবেন। বাংলাদেশের এক গণমাধ্যমে এই তথ্য দাবি করা হয়েছে।
পাঁচ বছর আগে একটি বেসরকারি সংস্থা থেকে ৮০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে একটি রিকশা কিনেছিলেন সেন্টু। দুবছরের মাথায় রিকশাটি চুরি হয়ে যায়। পরে আবার ঋণ নিয়ে আরেকটি রিকশা কেনেন। চরম সংকটের মধ্যে লড়াই করে চালাচ্ছিলেন কোনওরকমে। প্রতি সপ্তাহে বাংলাদেশী টাকায় ১ হাজার ৩৫০ টাকা করে কিস্তি দিতে হয় সেন্টুকে। এতদিন তিনটি করে অক্সিজেন সিলিন্ডার লাগত।ওষুধ ও অক্সিজেন সিলিন্ডার বাবদ রোজ ৬০০ টাকা খরচ দুবেলা খাওয়ার খরচও রয়েছে। সেই লড়াই থেকে হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন সেন্টু।
রিকশায় তাঁর আসনের পাশেই অক্সিজেন সিলিন্ডার বসানোর জন্য একটি জায়গা বানিয়ে নিয়েছিলেন। সওয়ারি না থাকলেও ওই অক্সিজেন সিলিন্ডারই সেন্টুর সর্ব ক্ষণের সঙ্গী ছিল। সে সাত বছরের সঙ্গী আর থাকবে না। নতুন করে বাঁচবেন সেন্টু। অন্ধকার জীবনটা আলোয় ভরে উঠছে যে।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম