।। প্রথম কলকাতা ।।
Hiccups Problem and Solution: আপনি কি হেঁচকির(Hiccups) সমস্যায় নাজেহাল? একবার যদি হেঁচকি হতে শুরু করে আর থামতে চায় না! এ যেন এক বিব্রতকর অবস্থা। এই সমস্যায়(Problem) কম বেশি অনেকেই ভোগেন। অফিসের ব্যস্ত কাজ কিংবা কোন উৎসব অনুষ্ঠানে যদি বারংবার হেঁচকি উঠতে থাকে তাহলে তো মহা সমস্যার। আপনি যদি এই সমস্যায় নাজেহাল হয়ে থাকেন তাহলে এই প্রতিবেদনে রয়েছে আপনার জন্য সোজা কিছু টিপস। যার মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই হেঁচকি(Hiccups) থেকে মুক্তি পেতে পারেন। হেঁচকি এমন একটা জিনিস যা কারণে অকারণে আমাদেরকে বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে ফেলে দেয়। যা রীতিমত কষ্টকর ও বিরক্তিকর। অথচ আপনার কোনো জটিল রোগ না থাকলেও, প্রায় সময় গুরুত্বপূর্ণ কাজের মাঝে উড়ে এসে জুড়ে বসে হেঁচকি।
হেঁচকি কী?
এটি এক ধরনের শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত সমস্যা। মানবদেহের ফুসফুসের নিচে এক ধরনের পাতলা মাংসপেশি থাকে যাকে ডায়াফ্রাম বা মধ্যচ্ছদা বলে। এই পর্দাকে নিয়ন্ত্রণ করে ভ্যাগাস নামক স্নায়ু। এই স্নায়ু কোন কারণে উত্তেজিত হলে অনিয়ন্ত্রিতভাবে ডায়াফ্রাম সংকুচিত ও প্রসারিত হয়। এই পর্দায় সংকোচনের সৃষ্টি হলেই হেঁচকি উঠতে বাধ্য। কারণ সেই সময় শ্বাসকার্য চলাকালীন বায়ু দ্রুতগতিতে শ্বাসনালীতে বাধাপ্রাপ্ত হয়। তখন শ্বাসনালীতে এক খিঁচুনি ভাব উৎপন্ন হয় এবং দ্রুত বাতাস শ্বাস যন্ত্রে প্রবেশ করায় ভোকল কর্ড বন্ধ হয়ে যায়। এই সময় স্বাভাবিক ভাবেই অনবরত বা একটু সময়ের ব্যবধানে হিক করে শব্দ হয়। যাকে বলা হয় হেঁচকি বা হিক্কা। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় একে বলে – সিনক্রোনাস ডায়াফ্রাগমাটিক ফ্লাটার। এই হেঁচকি নিয়ে আবার কুসংস্কারের শেষ নেই। প্রায়ই বাড়ির দাদু ঠাকুমা হেঁচকি উঠলে বলেন, নিশ্চয়ই কেউ নাম করছে। আবার অনেকে মনে করেন, চুরি করে খেলে নাকি হেঁচকি ওঠে। হেঁচকি ওঠার আসল কারণ গুলি চট করে জেনে নিন।
হেঁচকির কারণ
•বেশি পরিমাণে চেতনানাশক, উত্তেজনাবর্ধক ওষুধ ব্যবহার বা কেমোথেরাপির বিভিন্ন ওষুধ দীর্ঘদিন ব্যবহার করলে হেঁচকি হতে পারে।
•বেশি মশলাযুক্ত খাবার খাওয়ার ফলে পরিপাকতন্ত্রে গোলমাল হলে হেঁচকি হয়।
•খুব দ্রুত খাবার গ্রহণ করার সময় অতিরিক্ত বাতাস আমাদের খাদ্য নালী দিয়ে শরীরে প্রবেশ করে, তখন হেঁচকি ওঠে।
•স্ট্রোকের সময় বা কিডনির কার্যক্ষমতা হঠাৎ করে কমে গেলে হেঁচকি সৃষ্টি হয়।
•হঠাৎ ভয় পাওয়া , দীর্ঘক্ষণ জোরে হাসা, বেশি পরিমাণে অ্যালকোহল সেবন , বেশি পরিমাণে শুকনো রুটি খাওয়া এসব কারণগুলির জন্যও হেঁচকি দেখা দিতে পারে।
অধিকাংশ ক্ষেত্রে হেঁচকির জন্য বিশেষ কোনো কারণের প্রয়োজন হয় না। অকারণেই মাঝে মাঝে কখন কিভাবে এটি উদয় হবে আপনি ধরতে পারবেন না। হেঁচকি ক্ষণিকের জন্য হলেও মাঝে মাঝে দীর্ঘ সময় পর্যন্ত থেকে যায়। যদি হেঁচকি ২৪ থেকে ৪৮ ঘন্টা পর্যন্ত স্থায়ী হয় তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। এছাড়াও আপনি বাড়িতেই হাতের কাছে থাকা সামান্য জিনিসের দ্বারাই হেঁচকি বন্ধ করতে পারবেন।
সমস্যার সমাধান
• একটু বড় দানার চিনি জিভের অগ্রভাগে কিছুক্ষণের জন্য রেখে দিলে বা চুষে খেলে হেঁচকিতে উপশম হয়।
•নাক চেপে ধীরে ধীরে জল পান করতে পারেন কিংবা গরম জলে স্নান করলে হেঁচকির উপশম হয়।
• কাগজের ব্যাগের মধ্যে নিঃশ্বাস ফেলতে পারেন। তবে পলিথিনের ব্যাগ একেবারেই ব্যবহার করা চলবে না এবং কাগজের ব্যাগ মাথা দিয়ে ঢোকাবেন না।
•কিছুক্ষণের জন্য বা স্বল্প সময়ের জন্য দমবন্ধ করে রাখতে পারেন । কিংবা বুক ভরে শ্বাস নিয়ে যতক্ষণ সম্ভব তা ধরে রেখে ধীরে ধীরে শ্বাস ছাড়তে হবে। কিছুটা হলেও হেঁচকিতে উপশম পাবেন।
•ঠান্ডা জল বা বরফ মেশানো জল দিয়ে কুলকুচি করতে পারেন বা আস্তে আস্তে পান করতে পারেন।
•সবার বাড়িতেই প্রায় পাতিলেবু থাকে, হেঁচকির সময় লেবুর স্বাদ নেওয়া ভালো।
•বারবার হেঁচকি থেকে পরিত্রান পাওয়ার জন্য দুটো হাঁটু বুক পর্যন্ত টেনে ধরে সামনের দিকে কিছুক্ষণ ঝুঁকে থাকলে অনেক সময় হেঁচকি কমে যায়।
• হেঁচকি উপশমে গরম জলে এক চামচ মধু মিশিয়ে খেতে পারেন বা চুইংগাম চিবাতে পারেন।
• হেঁচকির সময় কিছুক্ষণের জন্য কানে আঙ্গুল দিয়ে থাকলে ভ্যাগাস নার্ভ উদ্দীপ্ত হয়।
•এছাড়াও অনেক সময় তীব্র ঝাঁঝালো গন্ধের কারণে হেঁচকি বন্ধ হয়ে যায়।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম