।। প্রথম কলকাতাb।।
Maha Shivratri 2023: হিন্দু ধর্মে যত কোটি দেবতা রয়েছেন তার মধ্যে সর্বোচ্চ আরাধ্য হলেন মহাদেব (Mahadev)। তিনি দেবতাদের কাছেও পূজিত। ফাল্গুন মাসের কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশী তিথিতে মহাদেবের ভক্তরা পালন করেন মহা শিবরাত্রি ব্রত (Shivratri )। হিন্দু ধর্মে এই ব্রতের গুরুত্ব অপরিসীম। রয়েছে এর একাধিক আচার অনুষ্ঠান। শিবের নামে উদযাপিত রাত্রি, এটাই মহা শিবরাত্রির আক্ষরিক অর্থ। এদিন ভক্তরা শিবলিঙ্গে গঙ্গাজল, বেলপাতা, ফুল, দুধ সবকিছু দিয়ে পুজো করেন। উপবাস করে পালন করেন ব্রত। তবে যদি মনে করা হয় শিবরাত্রির ব্রত কেবলমাত্র মহিলাদের জন্য তাহলে সেটা পুরাণ অনুযায়ী ভুল হবে।
মহিলারা শিবরাত্রির ব্রত পালন করেন সুন্দর সংসার, ভালো গুণবান স্বামী, সুস্থ সন্তান এবং বৈধব্য খণ্ডনের জন্য। তাই বলে এই ব্রত একেবারেই মেয়েলি নয়। শিবরাত্রি ব্রত পালন করতেন মধ্যযুগীয় পুরুষরাও। এখনও পর্যন্ত পুরুষরা শিবরাত্রি ব্রত পালন করেন। এর নেপথ্যে রয়েছে পুরাণ বর্ণিত এক ব্রত কাহিনী। সেই কাহিনীতে ব্যাখ্যা করা হয়েছে প্রথম শিবরাত্রি পালন করেছিলেন একজন পুরুষ। যদিও হিসাব মতো তিনি নিজেই জানতেন না যে তাঁর ওই রাতের প্রত্যেকটি কর্মকাণ্ড শিবের উদ্দেশ্যে হয়ে চলেছেন।
পুরাণে বর্ণিত ওই ব্রতকথা অনুযায়ী, প্রাচীনকালে বারাণসী (Baranasi) তথা কাশি ধামে এক নিষ্ঠুর ব্যাধের বসবাস ছিল। তাঁর সারাদিনের কাজ বলতে পশুহত্যা। সেটাই তাঁর খোরাক জোগাত। প্রতিদিনের মতো একদিন জঙ্গলে শিকার করতে বেরিয়ে সে কোনভাবে পথভ্রষ্ট হয়। রাস্তা খুঁজে না পাওয়াই সন্ধ্যা নেমে আসে। জঙ্গলের মধ্যে হিংস্র জন্তু জানোয়ারের হাতে পড়ে প্রাণ হারানোর ভয়ে একটা গাছের উপরে উঠে রাত কাটানোর সিদ্ধান্ত নেয় সেই ব্যাধ। কিন্তু সারাদিন কোন খাবার জোগাড় না হওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েন তিনি। আনমনেই গাছের উপরে বসে একটা একটা করে পাতা ছিঁড়ে নিচের দিকে ফেলতে থাকেন। আর সেই গাছটি ছিল বেল গাছ। যা দেবাদিদেব মহাদেবের পুজোয় সব থেকে প্রয়োজনীয় বস্তু।
বলা হয়, সেই বেল গাছের নিচেই একটি শিবলিঙ্গ ছিল। আর ব্যাধের ছিঁড়ে ফেলা পাতাগুলো একটা একটা করে পড়ছিল শিবলিঙ্গের ওপরে। সেই দিন ছিল ফাল্গুন মাসের কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশী তিথি। ভোরের আলো ফুটতেই খাবার জোগাড় করে বাড়িতে আসে সেই ব্যাধ। কিন্তু বাড়িতে এসে দেখে এক অতিথি এসেছেন। নিজের জন্য আনা খাবার অতিথিকে খাওয়ান তিনি। এই সবকিছুই এক প্রকার ব্রতের আচার অনুষ্ঠানের মতোই ছিল। পরবর্তীতে যখন সেই ব্যাধের মৃত্যু হয় তখন শিবদূত এবং যমদূত তাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য ধুন্ধুমার কাণ্ড বাধায়। বলা হয় শিবচতুর্দশী পালন করলে সেই ভক্তের উপর যমের আর কোন অধিকার থাকে না। কাজেই মৃত্যুর পর শিবদূতেরাই নিয়ে যায় ব্যাধকে।
শিবরাত্রির আচার অনুষ্ঠান
শিবরাত্রিতে শিবলিঙ্গে পুজো দেওয়া হয় বেলপাতা, নীলকন্ঠ ফুল, আকন্দ ,ধুতুরা , অপরাজিতা প্রভৃতি দিয়ে। জপ করা হয় মহামন্ত্র । এছাড়াও রাতে না ঘুমিয়ে ব্রত কথা পাঠ করা হয় । ভক্তরা ব্রতের আগের দিন নিরামিষ খাবার খান এবং বিছানায় ঘুমান না। ব্রতের দিন উপবাস চলে তাদের। আর সেই উপবাসের মধ্যেই রাতে চার প্রহরে শিবলিঙ্গে গঙ্গাজল, মধু ,ঘি, দই, দুধ অর্পণ করেন।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম