।। প্রথম কলকাতা ।।
Black Day of India: আগামীকাল ১৪ ফেব্রুয়ারি। সারা বিশ্বে দিনটি উদযাপিত হবে ভ্যালেন্টাইন্স ডে (Valentine’s Day) হিসেবে। এই দিনটিকে ভালোবাসা দিবস বলা হয়ে থাকে। দিনটি উদযাপন করা হয় কাছের মানুষদের উদ্দেশ্যে। কিন্তু এই ১৪ ফেব্রুয়ারি নিয়ে একটা ভয়ঙ্কর ঘটনা এখনও পর্যন্ত ভারতীয়দের মন- মস্তিষ্কে সতেজ হয়েছে। রাত পোহালেই সেই দিন, যে দিনটি ভারতের ইতিহাস ‘কালো দিবস’ (Black Day) হিসেবে মেনে নিয়েছে। কারণ এই দিনেই প্রায় চার বছর আগে ঘটেছিল পুলওয়ামা অ্যাটাক। শহীদদের মর্মান্তিক পরিণতি, তাদের আত্মবলিদানের কাহিনী চোখ ভিজিয়েছিল গোটা দেশের। ১৪ ফেব্রুয়ারি ছাড়াও ভারতের বুকে আরও বেশ কয়েকটি দিনে ‘কালো দিবস’ পালন করা হয়। আর তার পেছনে রয়েছে এমন কিছু ঘটনা যেগুলি ইতিহাসের পাতা থেকে মুছে দেওয়া সম্ভব নয়।
১/ ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯: চার বছর আগে ২০১৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি সিআরপিএফ জাওয়ানদের ৭৮ টি বাসের কনভয়ে ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণ ঘটে। জম্বু থেকে ওই বাসগুলি করে ২৫০০ জন সিআরপিএফ জওয়ান শ্রীনগরে যাচ্ছিলেন। সেই সময় জম্বু ও কাশ্মীরের পুলওয়ামায় (Pulwama Attack) জাওয়ানদের কনভয়ে এক আত্মঘাতী জঙ্গি বিস্ফোরণ ঘটায়। সেই বিস্ফোরণের জেরে নিহত হয়েছিলেন ৪০ জন সিআরপিএফ জওয়ান। ঘটনাটিতে সারা দেশ জুড়ে শোকের ছায়া নেমেছিল। ভারতের সীমা রক্ষাকারী জাওয়ানদের এই করুণ পরিস্থিতি মেনে নিতে পারেনি গোটা দেশের মানুষ। সেদিন চোখের জলে সামনের পথ ঝাপসা দেখেছিলেন সেই ৪০ জন নিহত জাওয়ানের পরিবারসহ গোটা দেশবাসী। ভারতীয় জাওয়ানদের এই আত্মবলিদানের দিনটিকে ভারতে ব্ল্যাক ডে বা কালো দিন হিসেবে পালন করা হয় তারপর থেকে।
২/ ৬ ডিসেম্বর ১৯৯২: ভারতের উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের ফৈজাবাদ জেলায় অবস্থিত রামায়ণ খ্যাত অযোধ্যা শহর। তার কাছেই অবস্থিত রামকোট পর্বত। ১৫২৮ সালের সম্রাট বাবরের আদেশে সেখানে একটি মসজিদ নির্মাণ করা হয়। যে মসজিদের নাম ধীরে ধীরে জনমুখে প্রচারিত হয় বাবরি মসজিদ (Babri Mosque) হিসেবে। কিন্তু ১৯৯২ সালে এক ভয়ঙ্কর ঘটনা সারাদেশে চাঞ্চল্যকর অবস্থা সৃষ্টি করেছিল। সেই বছর ৬ ডিসেম্বর গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল বাবরি মসজিদকে। যার ফল স্বরূপ ভারতের হিন্দু ও মুসলিমদের মধ্যে ব্যাপক দাঙ্গা বাঁধে। আর সেই দাঙ্গায় গোটা ভারত জুড়ে প্রায় ২০০০ জন মানুষ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। এই ঘটনা ভারতের ইতিহাসে সর্বকালে ‘কালো দিন’ হিসেবে মনে করা হবে। এমনটাই দাবি জানিয়েছিলেন AIMIM ন্যাশনালের প্রেসিডেন্ট আশাদুদ্দিন ওয়াইসি (Asaduddin Owaisi)।
৩/ ২৬/১১ মুম্বাই অ্যাটাক: ২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বর এই দিনটি ভারতের কাছে একটি অভিশপ্ত দিন। কারণ বাণিজ্য নগরীর মুম্বাই এদিন নিরস্ত্র নিরীহ মানুষদের রক্তে ভিজেছিল। মুম্বাইয়ের (Mumbai) আলিশান তাজ হোটেলে ২৬ নভেম্বর দিনটিতে হামলা চালায় পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদী জঙ্গি সংগঠন। তাঁরা অস্ত্রশস্ত্রসহ তৈরি হয়ে হানা দিয়েছিল হোটেলে। আর সেই সময় হোটেলের মধ্যে থাকা কয়েকশ অতিথি ছিলেন। জঙ্গিদের চালানো গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যায় ১৬৪ জনের দেহ। মৃত্যু হয় তাদের। আহত হন অন্ততপক্ষে ৩০৮ জন। পাকিস্তান থেকে জলপথে মুম্বাইয়ে ঢুকে বিভিন্ন জায়গায় হামলা চালায় সেই জঙ্গি সংগঠন। যে ১৬৪ জনকে ঠান্ডা মাথায় খুন করা হয়েছিল তাদের মধ্যে বিদেশি নাগরিক ছিলেন ২৮ জন। এখনও পর্যন্ত মুম্বাই অ্যাটাকে নিহতদের পরিবার সেই দগদগে আঘাত বয়ে নিয়ে চলেছে। ভারতের ইতিহাসে সত্যিই এই দিনটি অত্যন্ত অন্ধকারময়। যা পরিচিত ২৬/১১ নামে।
৪/ ২৬ মে: ২০২০ সালের ২৬ নভেম্বর থেকে ২০২১ সালের ২৬ মে টানা ছয় মাস ধরে দিল্লি সীমান্তে কৃষকদের প্রতিবাদ চলে। কৃষি আইন (Farmers Bill) বাতিলের দাবিতে দেশ জুড়ে সেসময় আন্দোলন শুরু হয়েছিল। দিল্লি সীমান্তে এসে উপস্থিত হয়েছিলেন বহু আন্দোলনকারী। তাদের অবস্থান বিক্ষোভ চলে। সেই বিক্ষোভের আঁচ অবশ্য সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছিল। আন্দোলনকে নিয়ন্ত্রণ করতে রীতিমতো নাকানিচোবানি খায় প্রশাসন। ওই আন্দোলনের ৬ মাস পূর্তিতে সংযুক্ত কিষাণ মোর্চা দেশ জুড়ে ‘কালো দিবস’ পালনের ডাক দিয়েছিল সেই সময়।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম