।। প্রথম কলকাতা ।।
Trade war: জ্বালানি তেল নয় আগামী বাণিজ্য যুদ্ধ হবে ধাতুর বাজার ঘিরে। প্রত্যেকটা দেশ ধাতু নিয়ে লড়াই করবে। যার কাছে যত নিত্য নতুন ধাতু সেই দেশের ভবিষ্যৎ ততই খুলে যাবে। যুদ্ধে প্রথমেই টেক্কা ভারতের, দেশে প্রথমবার লিথিয়াম খনির খোঁজ মিলে গেল। বাংলাদেশ ও কিন্তু বিশ্বের দেশগুলোকে টেক্কা দিতে পারে তাদের হাতে এমন জিনিস আছে।ভারতের উপর নির্ভরশীলতা বাড়াতে হবে বাংলাদেশ সহ বিশ্বের অন্য দেশগুলোকে ?নাকি ই বর্জ্য নিতে বাংলাদেশের উপর ডিপেন্ড করতে হবে ভারতকে ?এই লিথিয়াম কী?কেনো এতো গুরুত্বপূর্ণ? ই বর্জ্য কী কিভাবে তা বাংলাদেশের হাতে?
বহু খোঁজাখুঁজির পর ভারতে সাত রাজার মানিক মিলল। জম্মু-কাশ্মীরে লিথিয়াম খনি আবিষ্কার করে ফেলল জিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া। এতদিন আফ্রিকার দেশগুলো থেকে লিথিয়াম আমদানি করতে হতো ভারতকে। তবে এবার ভারতের ভবিষ্যতে বড় বদল আসবে। জম্মু-কাশ্মীরের রিয়াসি জেলায় ৫৯ লক্ষ টন লিথিয়ামের সন্ধান মিলেছে ।এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ খনির খোঁজ পাওয়া মানে ভাগ্য খুলে যাওয়া। ২০২৩ ২৪ অর্থবছরে গুরুত্বপূর্ণ দরকারি খনিজ পদার্থের খনি খোঁজার চেষ্টা করছে ভারত।আগেই বললাম এবার যুদ্ধটা হবে ধাতু নিয়ে। রাসায়নিক সার তৈরীর খনিজ পদার্থের খোঁজ চালাবে ভারত। জিএসআই আগামী দিনে ৯৬৬ টি প্রকল্প শুরু করতে যাচ্ছে। যার মধ্যে ৩১৮ টি খনিজ পদার্থের খোঁজে। বারটি সামুদ্রিক খনিজ পদার্থ খোঁজার প্রকল্প নিয়েছে ভারত। বাংলাদেশ ই বর্জে সম্ভবনা খোঁজার চেষ্টা করছে ।বাংলাদেশে ১৬ কোটির মত মানুষ মোবাইল ফোন ও ইলেকট্রনিক্স পণ্য ব্যবহার করে। এগুলো ফেলে দেওয়ার পর তা পরিণত হচ্ছে ই বর্জ্যে এইসব ই বর্্যে রয়েছে ৬০টির মত বিভিন্ন ধরনের উপাদান। এর থেকেই বাংলাদেশ পেয়ে যেতে পারে দুষ্প্রাপ্য সব ধাতু। ভারতের হাতে লিথিয়াম থাকলে বাংলাদেশের তুরুপের তাস ই বর্জ্য।। খনি থেকে সরাসরি ধাতু উঠিয়ে তা শোধনের চেয়ে অনেক দ্রুত ও কম খরচে পুরনো কম্পিউটার মোবাইল ও অন্যান্য ইলেকট্রনিক্স থেকে শিশা ইরিডিয়াম প্লাটিনাম এমনকি স্বর্ণও পেতে পারে বাংলাদেশ। ই বর্জ্য হতে পারে বাংলাদেশের বড়ো ধরনের আয়ের উৎস।
বর্তমানে বিভিন্ন দেশ নতুন এনার্জির প্রতি ঝুঁকেছে । তাই আগামী দিনের বাণিজ্যিক লড়াইটা জমে উঠবে বিভিন্ন প্রকার ধাতু ক্লিন এনার্জি সংশ্লিষ্ট খাতের কাঁচামাল কে ঘিরে। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে তুমুল আলোচনা শুরু হয়েছে। আপনিও আর কয়েকদিন পর থেকে এই বিষয়টা মিলিয়ে নিতে পারবেন। বর্তমানে চীন একচ্ছত্রভাবে ধাতব পদার্থের উৎপাদন নিয়ন্ত্রণ করছে। বৈশ্বিক লিথিয়াম পরিশোধনের ৫৮ % একা করে চীন। নিকেল কোবাল্ট প্যালাডিয়ামের এর বড় উৎপাদক আবার মস্কো ।রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ দেখিয়ে দিয়েছে জ্বালানি চাহিদা মেটানোর জন্য অন্য কোন একনায়কতন্ত্রী দেশের উপর নির্ভর করলে তার পরিণাম কি হতে পারে। গ্যাসের বিকল্প হিসেবে বিভিন্ন ধাতু বিরল মৃত্তিকা ধাতু সংশ্লিষ্ট খাতের কাঁচামাল আগামীদিনে বাণিজ্যিক লড়াইয়ের মূল বিষয়বস্তু হতে যাচ্ছে।
লিথিয়াম এমন একটা ধাতু যা সোনার চেয়েও দামি। লিথিয়াম ব্যবহৃত হয় ব্যাটারি বানাতে। বর্তমানে ব্যাটারি চালিত গাড়ির দিকে ঝুকছে গোটা বিশ্ব। আপনার আমার মোবাইল ল্যাপটপ সহ অন্যান্য এক্সেসরিজ ব্যাটারি ছাড়া অকাজের । অধিকাংশ ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি শক্তি পাচ্ছে লিথিয়াম আয়ন ব্যাটেরিথেকে। জানেন কি বর্তমানে লিথিয়াম ব্যবহারের দরুন প্রতিবছর ৭ থেকে ১০ শতাংশ বাড়ছে বৈশ্বিক চাহিদা। বিশ্বের দেশগুলো জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে সবাই দিন দিন ঝুঁকছে বিকল্প উৎসের দিকে । দুদিন পর গাড়ি চলবে ব্যাটারিতে। আর তখন লিথিয়াম ই ভরসা । লিথিয়ামের কথা মানুষ ২০০ বছর ধরে জানে। যখন থেকে লিথিয়াম ব্যবহৃত হচ্ছে ব্যাটারি বানাতে তখন থেকে এর চাহিদা বাড়তে থাকে। এখন লিথিয়ামকে বলা হয় এযুগের স্বর্ণ। পৃথিবীপৃষ্ঠে সব জায়গায় লিথিয়ামের ঘনত্ব সমান নয়। ধারণা করা হয় আন্দিয়ান আমেরিকান দেশগুলোতে লিথিয়ামের বড় ধরনের মজুত আছে। হঠাৎ করে যেমন মধ্যপ্রাচ্য ধনী হয়েছিল বিশাল তেলের খনির জন্য। কোন কোন দেশ মধ্যপ্রাচ্য হয়ে উঠতে পারে লিথিয়ামের জন্য। তবে পৃথিবীতে মোট কতটুকু লিথিয়াম মজুত আছে তার সঠিক হিসাব কারোর কাছে নেই।এই দুষ্প্রাপ্য লিথিয়াম আবিষ্কারের ফলে ভারত আত্মনির্ভর হবে এটা সত্যি ।সাদা সোনা রপ্তানির স্বপ্ন দেখতে পারে ভারত । বাংলাদেশ কে কি অপেক্ষা করে থাকতে হবে ভারতের লিথিয়ামের জন্য ?ভারত যদিও এখন রপ্তানির ব্যাপারে কিছু ভাবে নি ।কিন্তু তেমন টা হলে বাংলাদেশের হাতে আছে ই বর্জ্য তারাও ভারতকে কামাল দেখাতে পারে।
মূল্যবান ধাতুর সংগ্রহে বাংলাদেশের বেশ কিছু স্থানে নির্মাণ করা হয়েছে ই বর্জ্য প্লান্ট। এ যেন বাংলাদেশে স্বর্ণের খনি। বাংলাদেশে গত ১০ বছরে প্রযুক্তি পণ্য ব্যবহার বেড়েছে ৩০ থেকে ৪০ গুণ। এই বছর অর্থাৎ ২০২৩এ ই বর্জ্যের পরিমাণ দারাবে ১২লাখ টন। বাংলাদেশ চাইলেই বাংলাদেশের আয়ের বড় উৎস হতে পারে ই বর্জ্য। বাতিল একটি সাধারন cr ttv-তে গড়ে ৪৫০ তামা 225গ্রাম অ্যালুমিনিয়াম। ০.৬ গ্রাম স্বর্ণ থাকে । এক একটি মোবাইল ফোনে ৩৪ থেকে ৫০ মিলিগ্রাম পর্যন্ত স্বর্ণ থাকে। বিশ্বের প্রতিবছর বাতিল মোবাইল ফোন সেট থেকে চার হাজার কোটি টাকার স্বর্ণ পাওয়া যায়। ই বর্জ্য থেকে তাই ব্যাপক অর্থ আনা সম্ভব বাংলাদেশের। ই-বর্জ্য থেকে মূল্যবান সব ধাতু পাওয়া যেতে পারে। এক গবেষণায় দেখা গেছে প্রতিবছর বাংলাদেশে টেলিভিশন কম্পিউটার মোবাইল ফোন থেকে চিকিৎসা বর্জ্য থেকে ১২৪ মিলিয়ন টন ই বর্জ্য উৎপন্ন হয়। ভারতেও ই-বর্জ্য ব্যাপক উৎপন্ন হয়। বছরের কুড়ি লক্ষ টন এই বর্জ ্য তৈরি হয় ভারতে। ভারত এখনো রিসাইক্লিং করতে পারছে না এই সমস্ত বর্জ্য সঠিকভাবে। ই বর্জ্য রিসাইক্লিং করতে কোন দেশ আগে পারবে ভারত নাকি বাংলাদেশ ? বাংলাদেশ পারলে ভারত লিথিয়াম পেলেও টক্কর দিতে পারবে বাংলাদেশ। তবে এ কথা সত্যি যে লিথিয়াম পাওয়ার পরে ভারতের বুক চওড়া হল।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম