।। প্রথম কলকাতা ।।
Hang Son Doong: প্রযুক্তি যতই উন্নত হোক না কেন, এই পৃথিবীতে প্রকৃতির কাছে সবকিছু যেন তুচ্ছ। ভিয়েতনামে রয়েছে রহস্যের বেড়াজালে মোড়া একটি বিশেষ গুহা। এটিকে দৈত্যাকার বলে ভুল হবে না। এখানে অনায়াসে বানানো যাবে ৪০ তলা উঁচু ভবন। এই গুহার মধ্যে রয়েছে তার নিজস্ব এক জলবায়ু। গুহার বাইরের জলবায়ু একরকম, গুহার ভিতরের জলবায়ু আর একরকম। এই গুহার রহস্য উন্মোচন করতে বিজ্ঞানীদের মাথার ঘাম পায়ে ফেলতে হয়েছে। এই গুহা সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা পাওয়া গিয়েছিল ২০০৯ সালে। এটি হলো পৃথিবীর সবথেকে বড় গুহা, ভিয়েতনামের কোং বিন প্রদেশের বো টাচ জেলায় অবস্থিত হ্যাংসনডুং (Hang Son Doong)।
১৯৯১ সালে সর্বপ্রথম স্থানীয় হো- খানহ নামক এক ব্যক্তি জঙ্গলে কাঠ কাটতে গিয়ে পাথরের একটি ফাটল দেখতে পান। সেই ফাটল দিয়ে জল বেরিয়ে আসছিল। পরেই খোঁজখবর করে জানা যায় সেখানে রয়েছে বিশাল এক গুহা। তবে প্রথম আন্দাজেই তার রহস্য এবং ভয়ঙ্কর রূপ সম্পর্কে জানতে পারেননি অনেকেই। ২০০৯ সালে এপ্রিল মাসে ব্রিটিশ গুহা গবেষণা সংগঠনের প্রধান হাওয়ার্ড ও ডেভ লেমবার্ট এই গুহাটি নিয়ে গবেষণা করেন, তারপর উঠে আসে চাঞ্চল্য সব তথ্য। আপাতত আবিষ্কৃত হওয়া পৃথিবীর সবথেকে বৃহত্তম গুহা হল এটি। প্রথমে এই গুহাটির সঠিক পরিমাপের পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল চুনাপাথরের দীর্ঘ একটি দেওয়াল। যায় নাম রাখা হয় গ্রেট ওয়াল অফ ভিয়েতনাম। যদিও পরবর্তীকালে গুহাটি পরিমাপ করা সম্ভব হয়েছিল। এখানে বর্তমানেও শুধুমাত্র বিশেষভাবে অনুমতি মেলে গবেষক এবং বিজ্ঞানীদের।
প্রায় ৯ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই গুহাটি অত্যন্ত বিপ্পজনক। গুহার মধ্যে রয়েছে বিষধর সাপ এবং নানান অজানা সব প্রাণী ও বিষাক্ত গাছ। নিকষ কালো ঘন অন্ধকারের মধ্যে পথচলা একেবারেই সহজ নয়।তাছাড়া এই রকম দুর্গম পরিবেশে ভ্রমণের জন্য কমপক্ষে চারদিনের খাবার সঙ্গে নিতে হবে। এছাড়াও গুহার মধ্যে রয়েছে নদী, তার জন্য প্রয়োজন নৌকা এবং বেশ কয়েকদিন থাকার জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। যা বহন করা অনেকের পক্ষেই অসম্ভব। এই গুহায় পৌঁছাতে গেলে গভীর বনের মধ্যে প্রায় দুদিন ধরে পায়ে হেঁটে যেতে হবে। সেই পথ অত্যন্ত দুর্গম। তাই সবাই চাইলেই এই গুহায় প্রবেশ করতে পারে না। তবে ২০১৩ সাল থেকে খুব অল্প স্থানের জন্য পর্যটন চালু করা হয়েছে।
রয়েছে নিজস্ব জলবায়ু, উড়তে পারবে বিমান
এই গুহার নিজস্ব নাকি একটি জলবায়ু রয়েছে। গুহার মধ্যে থাকা ব্যক্তির মনে হবে, পুরো বাইরের জগত থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন। গুহার মধ্যে থাকা নদীর জল বাষ্পীভূত হয়ে ওখানেই মেঘে পরিণত হয়। এর মধ্যেই রয়েছে একটি বিশাল ভূগর্ভস্থ নদী। প্রায় ১৫০ টি গুহার সমন্বয়ে এই বড় গুহাটি তৈরি হয়েছে। স্থানীয় ভাষায় হ্যাংসনডুং এর অর্থ হল, পাহাড়ি নদীর গুহা। এর মধ্যেই রয়েছে স্রোতস্বিনী নদীর পাশাপাশি প্রাকৃতিক ভাবে তৈরি হওয়া কিছু সুইমিং পুল।
গুহাটি সর্বোচ্চ উচ্চতা হলো প্রায় ৬৫০ ফুট। সর্বোচ্চ প্রস্থ ৪৯০ ফুট, গুহাটির দৈর্ঘ্য প্রায় ৯ কিলোমিটার। গুহার সাথেই সংযুক্ত রয়েছে প্রায় ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি সুড়ঙ্গ। যা যোগ সাধন করেছে গুহাটির পাশে থাকা একটি পাহাড়ের সাথে। গুহাটির মধ্যে সবথেকে চওড়া জায়গা দিয়ে ছোটখাটো একটি বিমান সহজে উড়ে যেতে পারবে। কথিত আছে এই বৃহৎ উচ্চতার কারণে এই গুহার মধ্যে অনায়াসে তৈরি করা যাবে ৪০ তলা বাড়ি।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম