।।প্রথম কলকাতা।।
Potato cultivation: রাজ্য জুড়ে চাহিদা বাড়ছে হেমালিনী আলু বীজের। চন্দ্রমুখীর মতো সোনা রং এই আলুর। দেখতেও একেবারেই চন্দ্রমুখীর মতোই। অথচ এই আলু চাষে খরচ কম, আবার ফলনও বেশি। সেজন্যই দিন দিন বাড়ছে পাঞ্জাবের হেমালিনী আলু বীজের চাহিদা।
ধান কাটার সঙ্গে সঙ্গেই রাজ্য জুড়ে আলু চাষের মরশুম শুরু হয়ে গিয়েছে। একটু বাড়তি লাভের আশায় শীত পড়তেই অর্থাৎ নির্ধারিত সময়ের কিছুটা আগেই আলু চাষ শুরু করে দিয়েছেন অনেকে। পূর্ব বর্ধমান, হুগলি, দুই মেদিনীপুর সহ দক্ষিণবঙ্গের একটা বড় অংশে একটু আগেই আলু চাষ শুরু হয়ে যায়। জমি প্রস্তুত করার পর শীত পড়তেই আলু চাষ শুরু করে দিয়েছেন কৃষকরা। এই সময় মূলত পোখরাজ আলুর চাষ হয়। হিমঘর বন্ধ হয়ে যাবার পর নতুন আলুর একটা চাহিদা তৈরি হয়। ভালো দামও মেলে। সেই সময় এই আলু তুলে বাজারে পাঠানো হয়। এছাড়া এই রাজ্যে ব্যাপক পরিমাণে জ্যোতি আলু ও চন্দ্রমুখী আলুর চাষ হয়।
কৃষকরা বলছেন, চন্দ্রমুখী আলু দেখতে যেমন সুন্দর, তেমনই তার ভালো দাম মেলে। কিন্তু প্রতিকূল আবহাওয়ায় এই আলুর ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনাও অনেকটাই বেশি থাকে। সেই তুলনায় হেমালিনী আলু চাষের ঝুঁকি কম। এই আলু বীজের দামও যেমন কম, তেমনই আবার তার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেশি থাকায় চাষের খরচটাও কম হয়। আবার চন্দ্রমুখীর মতো দেখতে হওয়ায় তার ভালো দামও মেলে। সাধারণ ক্রেতার পক্ষে চন্দ্রমুখীর সঙ্গে হেমালিনী আলুর ফারাক করা মুশকিল।তবে হেমালিনীর স্বাদ চন্দ্রমুখীর মত নয়। কৃষকদের দাবি এই আলুর স্বাদ জ্যোতির তুলনায় অনেক ভালো। ক্রেতাদের মধ্যে চাহিদাও রয়েছে। স্বাভাবিকভাবে দামও বেশি পাওয়া যাবে।
এই আলু দেখতে লম্বাটে হয়। নয়া জাতের এই আলু মূলত পাহাড়ি অঞ্চলে চাষের জন্য বাছাই করা হয়েছিল। কিন্তু সমতলে ভালো ফলন দেওয়ায় চাষে প্রসার বাড়তে থাকে। কৃষি আধিকারিকেরা বলছেন ভালো ফলন পেতে ১৫ থেকে ২৫ নভেম্বরের মধ্যে আলুর বীজ বুনে দেওয়া উচিত। জমিতে জো আসার পরেই আলু চাষ শুরু করতে হবে। এরপর বুনলে ফলনে প্রভাব পড়বে। এক হেক্টর জমিতে আলু চাষ করতে ১৮ থেকে ২০ কুইন্টাল বীজ প্রয়োজন। এই আলুর বেশিরভাগ রোগ বীজ বাহিত। ফলে আলুর বীজ লাগানোর আগে সঠিক পদ্ধতিতে শোধন করে নিতে হবে। সেক্ষেত্রে ম্যানকোজেব, মিথকসি ইথাইল মারকিউরিক ক্লোরাইড ব্যবহার করা যেতে পারে। এছাড়াও কার্বক্সিন ও থাইরাম জাতীয় ওষুধের মিশ্রণ প্রতি লিটার জলে এক গ্রাম মাত্রায় মিশিয়ে আলু বীজ শোধন করা যেতে পারে।
প্রতি লিটার জলে আড়াই গ্রাম ম্যানকোজেব দিয়ে দশ মিনিট ডুবিয়ে রাখতে হবে। ইথক্সি মিথাইল দিতে হবে এক লিটার জলে দুই গ্রাম। আলু বীজ ভিজিয়ে রাখতে হবে তিন থেকে চার মিনিট। বীজ আলু শোধনের পর ছায়ায় শুকিয়ে দিতে হবে। সবার আগে ভালো বীজ সংগ্রহ করতে হবে। বীজ আলু কেটে বসানোর ক্ষেত্রে যে ছুরি বা বটি দিয়ে কাটা হবে সেটি ভালো করে পটাশিয়াম প্যারম্যাঙ্গানেট দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে। বীজ আলু কাটার সময় মরা চোখ যুক্ত আলু বাতিল করতে হবে। এই আলুর জমি তৈরি করার জন্য শেষ চাষের সময় ভালোভাবে পচা গোবর সার বা অন্য কোনো জৈব সার কমপক্ষে হেক্টরে ৩০ থেকে ৪০ টন দিতে হবে।
কৃষকরা বলছেন, লাভের আশায় চাষ করি আমরা। তাই কম খরচে বেশি ফলন পাওয়ার আশা সবাই করেন। সেই কারণেই দিন দিন হেমালিনী আলু চাষের প্রতি ঝোঁক বাড়ছে। ফলনে ইতিমধ্যেই হুগলী জেলায় এই আলুর চাষ অনেকটাই বেড়েছে। এখন পূর্ব বর্ধমান, দুই মেদিনীপুর জেলাতেও এই আলুর চাষের পরিমাণ বাড়ছে।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম