।। প্রথম কলকাতা ।।
Republic Day 2023: প্রতিবছর ২৬শে জানুয়ারি প্রজাতন্ত্র দিবস (Republic Day) উপলক্ষে নানান আয়োজনে সেজে ওঠে গোটা দেশ। ইতিমধ্যেই সরকারি তরফ থেকে আয়োজিত নানান অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি ঘিরে তুমুল ব্যস্ততা। প্রজাতন্ত্র দিবস (Republic Day) ভারতবাসীর কাছে একটা ব্যতিক্রমী আবেগ। ১৯৫০ সালে সর্বপ্রথম এই দিনটিকে বেছে নেওয়া হয়েছিল প্রজাতন্ত্র দিবস হিসেবে। এই দিন সকাল ১০ টা ২৮ মিনিটে কার্যকর হয়েছিল ভারতের সংবিধান। সেই উপলক্ষে কুচকাওয়াজ এবং জাতীয় সংগীত গাওয়া হয়। তারপর গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সম্মতি এবং উপস্থিতিতে সারা ভারতবর্ষে গৃহীত হয় সংবিধান। যদিও সেই অনুষ্ঠান পালনের নিয়মের কোথাও খামতি বা ছেদ পড়েনি আজ পর্যন্ত। প্রতিবছর নিয়ম করে দিল্লির রাজপথে আয়োজন করা হয় কুচকাওয়াজের। প্রজাতন্ত্র দিবসের অন্যতম আকর্ষণ হল কুচকাওয়াজ যার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে বিভিন্ন রাজ্যের ট্যাবলো। দিল্লির (Delhi) রাজপথে দেখা যায় সুসজ্জিত সামরিক বাহিনী।
১৯৫০ সালে ভারতের সর্বপ্রথম এই বিশেষ কুচকাওয়াজ দেখা গিয়েছিল। প্রতি বছর প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষে কুচকাওয়াজ বিভিন্ন গণমাধ্যমে দেখানো হয়। কুচকাওয়াজ শুরু হয় রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে, তারপরে রাজপথ আর ইন্ডিয়া গেট পেরিয়ে পৌঁছায় লালকেল্লায়। সেখানে রাষ্ট্রপতি উত্তোলন করেন জাতীয় পতাকা। এই অনুষ্ঠানে বিদেশি রাষ্ট্রনায়কদের উপস্থিত থাকতে দেখা গিয়েছে। ১৯৫০ সালের কুচকাওয়াজের উপস্থিত ছিলেন তৎকালীন ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রপতি (Former President of the Republic of Indonesia) সুকর্ণ (Sukarno)। তিনি ভারতের এই অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হয়ে এসেছিলেন। প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষে কুচকাওয়াজে একত্রে দেখা যায় ভারতের সামরিক বিভাগের স্থলবাহিনী, নৌবাহিনী এবং বায়ুসেনাকে। পাশাপাশি বাদ্যযন্ত্রের তালে তাল মিলিয়ে দেখা যায় রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের সুসজ্জিত ট্যাবলো, যার মধ্যে ভারতের কোনায় কোনায় থাকা নানান সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের আঙ্গিক ফুটে ওঠে। এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। ২৬শে জানুয়ারিতে কুচকাওয়াজের জন্য বিভিন্ন রাজ্য কিংবা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল থেকে কোন ট্যাবলো বেছে নেওয়া হবে তার জন্য রয়েছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের এক বিশেষজ্ঞ কমিটি। যেখানে নানান শিল্পী থেকে শুরু করে গুণী মানুষরা রয়েছেন।
এই দিন দিল্লির রাজপথে দেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন রাষ্ট্রপতি। সকাল হলেই সারা ভারতবাসী টিভির সামনে বসে পড়েন কুচকাওয়াজ দেখার জন্য। সাধারণ মানুষের জন্যই তার সরাসরি লাইভ টেলিকাস্ট করা হয়। ।কুচকাওয়াজ হয় প্রায় আট কিলোমিটার রাস্তা জুড়ে। এইদিন রাষ্ট্রপতি নিজের হাতে পদ্মশ্রী পুরস্কার প্রদান করেন। এছাড়াও বীর সেনাদের জন্য থাকে অশোক চক্র, বীর চক্র এবং পরম বীর চক্র। এই দিবস উপলক্ষে প্যারেডে থাকে দেশের বিভিন্ন রাজ্যের ট্যাবলো। প্রত্যেক ট্যাবলোর সাথে জড়িয়ে থাকে ভারতবর্ষের নানান সংস্কৃতি।
২৬ শে জানুয়ারি ভারতের সংবিধান গৃহীত হওয়ার শুভ মুহূর্ত হলেও, তার পিছনে রয়ে গেছে বিস্তর সংগ্রামের ইতিহাস। ১৯৪৭ সালের ১৫ই আগস্ট ভারত স্বাধীনতা লাভ করেছিল, কিন্তু ভারতের শাসনব্যবস্থা সেভাবে শক্তপোক্ত ছিল না। তাই কোন সংবিধান না থাকায় শাসনকার্য পরিচালনায় নানান সমস্যা দেখা দেয়। ১৯৩৫ সালের গভর্নমেন্ট অফ ইন্ডিয়া অ্যাক্ট অনুযায়ী দেশ পরিচালনা করেছিলেন তৎকালীন প্রশাসকরা। অবশেষে নানান সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে তৈরি করা হয় সংবিধান। সংবিধান কমিটি সংবিধানের একটি খসরা জমা দেয় নভেম্বরের ৪ তারিখে। সেই খসরা সংশোধন ও পরিবর্তন করতে প্রায় দুবছর সময় কেটে যায়। সব বাধা পেরিয়ে অবশেষে ২৬শে জানুয়ারি কার্যকরী হয় ভারতের সংবিধান। সেই সংবিধানের আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ড. রাজেন্দ্র প্রসাদ।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম