।। প্রথম কলকাতা ।।
Saudi Arabia: তেল সম্পদে ভরপুর সৌদি আরবের (Saudi Arabia) বিলাসিতা দেখে গোটা বিশ্ব থ বনে যায়। একটা দেশ ঠিক কতটা ধনী হলে এতটা বিলাসী হতে পারে? এর উত্তর অনেকেরই জানা নেই। তবে এখনো পর্যন্ত এই দেশটির মোট সম্পত্তি কত কিংবা কতটা ধার দেনা করেছে তা প্রকাশ্যে আসেনি। সেই নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে প্রচুর প্রশ্ন রয়েছে। অথচ প্রায়ই সময দেখা যায়, এশিয়ার বিভিন্ন দেশে সৌদি আরব বিলিয়ন বিলিয়ন টাকা ঋণ দিচ্ছে। এত টাকা সৌদি আরব কোথায় পায়? এটাও একটা বড় প্রশ্ন। যদিও শুধু সৌদি আরব নয় উপসাগরীয় বেশিরভাগ দেশই তাদের মোট ঋণ আর সম্পদের পরিমাণ খুব একটা প্রকাশ্যে আনে না। সৌদির সরকারি বিনিয়োগ তহবিল অর্থাৎ পিআইএফ-কে কেন্দ্র করে সৌদির যুবরাজ মহাম্মদ বিন সালমান একটি অর্থনীতি সংস্কার পরিকল্পনা সাজিয়েছেন।
তবে যতটুকু জানা যায়, সৌদি আরবের (Saudi Arabia) সম্পত্তির পরিমাণ বিপুল। ২০১৫ সালে দেশটির সরকারি বিনিয়োগ তহবিলে ছিল প্রায় ১৫ হাজার কোটি ডলার। ২০২০ সালে মাত্র পাঁচ বছরের মধ্যে তা লাফিয়ে বেড়ে দাঁড়ায় ৪০ হাজার কোটি ডলারের বেশি। পাশাপাশি সৌদির তেল কোম্পানিগুলি শেয়ারের জন্য কোটি কোটি ডলার বিনিয়োগ করে রেখেছে। দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভে রয়েছে প্রায় ৪ হাজার কোটি ডলারের বেশি পরিমাণ অর্থ। সৌদির যুবরাজের ভাষ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সাল পর্যন্ত দেশটির অর্থনীতিতে বার্ষিক ১৫ হাজার কোটি রিয়াল অর্থাৎ প্রায় ৪ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগ করার পরিকল্পনা রয়েছে। লক্ষ্য অনুযায়ী, তারা নিজেদের সম্পত্তি বাড়াবে প্রায় ৪ লক্ষ কোটি রিয়ালে।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলির মধ্যে সৌদি আরব যে ঠিক কতটা ধনী তা বলার অপেক্ষা রাখে না। বিশ্বজুড়ে যত পরিমাণ তেল সঞ্চিত আছে তার পাঁচ ভাগের এক ভাগ রয়েছে শুধুমাত্র সৌদি আরবে। চারিদিকে ধু ধু বালি ঘেরা মরুভূমি দেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি এই তেল। তবে প্রাকৃতিক সম্পদের একটি নির্দিষ্ট সীমারেখা থাকে। তাই তেল নির্ভর অর্থনীতি থেকে বহুদিন আগেই বেরিয়ে এসেছে সৌদি। নিজেকে আরো ধনী করতে সৌদি হাঁটছে বিকল্পপথে। ২০১৬ সালে সৌদির যুবরাজ ‘ ভিশন ২০২৩’ এর ঘোষণা করেছিলেন। যেখানে একাধিক অর্থনৈতিক বৈচিত্র্যময় পরিকল্পনা নেওয়া হয়। যার কারণে গোটা বিশ্বের কাছে সৌদি স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বিনোদন, পর্যটন আর জনসভার দিক থেকে আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে। সৌদির লক্ষ্য দেশটিকে তারা বৈশ্বিক বাণিজ্যে কেন্দ্রে পরিণত করবে। ভিশন-২০৩০ এর পরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রায় পঞ্চাশ হাজার কোটি ডলার টাকা খরচ করে দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে তৈরি করা হবে ২৬ হাজার বর্গ কিলোমিটার এর একটি মহানগর। এটাই হবে গোটা বিশ্বের মধ্যে সবথেকে আধুনিক সামাজিক ব্যবস্থা, ট্রাফিক জ্যামহীন, টেক শক্তিশালী অত্যাধুনিক শহর। পাশাপাশি সৌদি ইতিমধ্যেই প্রায় ৮০টি বৃহৎ প্রজেক্ট গ্রহণ করেছে, যা শেষ হবে ২০৩০ সালের মধ্যে। অ্যাকচুয়ালি ভিশন ২০৩০ একটা বিরাট কর্মযজ্ঞ, যার কারণে আমুল পরিবর্তন ঘটবে সৌদির অর্থনীতির।
সম্প্রতি সৌদি আরবে মিলেছে বিরাট সোনা আর তামার খনি। যাকে গুপ্তধনের কম বললে ভুল হবে না। সৌদির অর্থনীতিতে যে নতুন জোয়ার আসছে তা আশা করা যায়। কোথায় চীন, কোথায় আমেরিকা, কোথায় রাশিয়া, বিশ্বসেরা ধনী হয়ে উঠবে সৌদি। বর্তমানে সৌদির পিআইএফ একটি সাধারণ সার্বভৌম সম্পদ তহবিল থেকে বৈশ্বিক বিনিয়োগকারীতে পরিণত হয়েছে। বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি ডলার বিনিয়োগ করছে। উবারের মতো হাইটেক কোম্পানিতেও সৌদি বিনিয়োগ করেছে। এছাড়াও যা জাপানের সফট ব্যাংক পরিচালিত তহবিলে প্রায় ১০০ কোটি ডলারের বেশি বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সৌদি। দেশটির এই সার্বভৌম তহবিল শুধুমাত্র ২০১৮ থেকে ২০১৯ অর্থাৎ এই ১ বছরের মধ্যে ঋণ তুলেছে প্রায় ২১০০ কোটি ডলার।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম