।। প্রথম কলকাতা ।।
Neha Kakkar: একটা সময়ে মাত্র ৬০০ টাকা রোজগারের জন্য ভজন গাইতেন নেহা কক্কর। অভাবের সংসারে ঠিকমতো খাবার জোগাড় করতেই হিমশিম খেতে হত। নিজের বাড়ি বলতে কিছুই ছিল না। জরাজীর্ণ ভাঙা ঘরে ভাড়া থাকতেন নেহারা। এখন যিনি প্রায় ১০০ কোটির মালিক। নেহার জন্ম হোক চাননি তাঁর মা। জীবন কতটা কঠিন তা বলিউডের এই গায়িকা জানেন খুব ভালো করে তাই এখনও কারোর কষ্ট দেখলে নেহার চোখ জলে ভরে যায়। ঋষিকেশের মতো ছোট শহর থেকে মুম্বইয়ের জনপ্রিয় গায়িকা হলেন কীভাবে নেহা?
বলিউডের অন্যতম উজ্জবল নক্ষত্র। ছোটবেলা কাটিয়েছেন অভাবের সংসারে। গরিব পরিবার থেকে উঠে এসেছেন নেহা। কিন্তু অভাবকে সঙ্গী করেই গানের চর্চা চালিয়ে গিয়েছেন এই গায়িকা। সেই কঠিন তপস্যার ফল এখন গোটা দেশ জানে। নেহার বাবা ঋষিকেশ কক্কর স্কুল কলেজের বাইরে সিঙাড়া বিক্রি করতেন। তিন ছেলে মেয়েকে নিয়ে সংসার টানা সম্ভব হচ্ছিল না। দুই মেয়েকে নানা ধর্মীয় অনুষ্ঠানে গান গাইতে পাঠাতেন তাঁর বাবা। সেখান থেকেই শুরুটা। নেহা যখন গান গাওয়া শুরু করেন তখন বয়স মাত্র ৪ বছর। দিদিকে সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ভজন আরতির গান গাইতেন নেহা। দিদি সোনুর থেকেই এই ভজন গান শিখেছিলেন। সেখান থেকে রোজগার ছিল মাত্র ৬০০ টাকা কখনও তার থেকেও কম।
ছোটবেলায় নেহার পুরো পরিবার থাকত ভাঙাচোরা একটি বাড়িতে। তাও আবার ভাড়া করা ঘর। একটা ঘরেই পুরো পরিবার কীভাবে যে থাকত তা নেহার এখনও খুব ভালো করে মনে আছে। একটা সময় এত খারাপ ছিল যে সন্তানদের ঠিকমতো খাবার দিতে পারছিলেন না নেহার মা-বাবা। তখন নেহা ছিলেন মায়ের পেটে। তার মা চেয়েছিলেন গর্ভপাত করাবেন। কিন্তু তত দিনে দেরি হয়ে গিয়েছিল। ভাগ্যিস দেরিটা হয়েছিল। নাহলে এরকম একটা গুণী শিল্পীকে হারিয়ে ফেলতাম আমরা।
ছোটবেলা থেকেই গানের প্রতি প্রবল ঝোঁক ছিল নেহার।খুবই সামান্য পারিশ্রমিকের বিনিময়ে গান গাইতেন তিনি। মাত্র ১৪ বছর বয়সেই ইন্ডিয়ান আইডলের দ্বিতীয় সিজনে অংশ নিয়েছিলেন নেহা। বি-টাউনের নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার যাত্রাপথটাও অতটা সহজ ছিল না। তাঁর গায়েকি নিয়ে কিছু মানুষের নাক উঁচু মনোভাব থাকতেই পারে, তবে তাঁর জনপ্রিয়তা অস্বীকার করবার কোনও জায়গা নেই। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে দীপিকা পাড়ুকোন, আলিয়া ভাটদের টক্কর দিতে পারেন নেহা কক্কর। অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই বলিউডের প্রথম সারিতে নিজেকে তুলে ধরেছেন। পরিশ্রম করলে জীবনে সাফল্য আসবেই তা প্রমাণ করেছেন এই গায়িকা।
ঋষিকেশের যেখানে ছোট এক কামরার ভাড়া বাড়িতে ছোটবেলা কাটিয়েছেন, আজ সেখানেই নিজের বিলাসবহুল বাংলো কিনেছেন নেহা। মার্সিডিজ থেকে একাধিক দামী গাড়ি তাঁর গ্যারেজে। কোটি কোটি টাকা রোজগার তার। নেহা সিনেমায় একটি গান গাওয়ার জন্য ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা নেন। কখনও তারও বেশি। তা বলে নেহার কোনও অহঙ্কার নেই। আসলে অভাবকে খুব কাছ থেকে দেখেছেনে। তাই এখনও কোনও রিয়েলিটি শোয়ে কারোর জীবনের স্টাগলের কথা শুনলেই তার চোখ বেয়ে জল মেনে আসে। অভাবী মানুষদের সাহায্য করেন তিনি। নিজের প্রথম অডিশন ক্লিপে নেহা নিজের স্বপ্নের কথা জানিয়েছিলেন। যেই স্বপ্নগুলো আজ সত্যি করে ছেড়েছেন তিনি। আসলে প্রতিযোগিতায় জয়টা বড় নয়, জীবনের দৌড়ে জয়ী হওয়াটা বেশি জরুরি। এটাই বিশ্বাস করেন নেহা কক্কর।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম