।। প্রথম কলকাতা ।।
বড় রিস্কে রয়েছে যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট ভবন। যখন তখন ধসে পড়তে পারে, হতে পারে প্রাণ সংশয়। এমপিদের মধ্যে জোর আলোচনা শুরু হয়ে গেছে। কেন ২৪ টি ঘণ্টা ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ভবনটি পাহারা দেন? জানেন আপনি? এরপর আদৌ কি এই ভবনের সংস্কার করা সম্ভব হবে? থাকবে কি সেই সুযোগ? বহু ইতিহাসের সাক্ষী ব্রিটিশ পার্লামেন্ট ভবন ঘিরে অনিশ্চয়তা বাড়ছে। রিপোর্টে আশঙ্কা আরও তীব্র হচ্ছে। মনে রাখতে হবে, যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট ভবন একটা ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ। কিন্তু, ওয়েস্টমিনিস্টারের এই হেরিটেজ সৌধের পরিস্থিতিটা জানেন? বলা উচিৎ দুরবস্থা। জল চুঁইয়ে পড়ছে, ফাটল দেখা যাচ্ছে। আর আগুন লাগলে কি হবে? না, নেভানো যাবে না, যথেষ্ট ব্যবস্থাই নেই।
এক বার নয়, দু বার নয়, ৪৪ বার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। যুক্তরাজ্যের এই পার্লামেন্ট ভবনে। তাই, বার বার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ভবনটা। আর যেনো অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা না ঘটে সেই কারণে এখন পাহারা বসানো হয়েছে। ২৪ টি ঘণ্টা দমকলকর্মীরা ভবনটি পাহারা দেন। কারণ বড় কোনো বিপর্যয় ঘটলে ভবনটা কিন্তু ভেঙে পড়তে পারে। হতে পারে প্রাণ সংশয়। রীতিমতো আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে হাউস অফ কমন্সে পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির রিপোর্টে।
এমপিরা বলছেন, ভবনটার এখন যা অবস্থা তা সংস্কার করতে প্রচুর টাকা ব্যয় করতে হবে। করদাতাদের টাকা থেকেই হবে খরচ। এমনকি সময় যত যাবে, খরচ ততই বেড়ে যাবে। তাও এক্কেবারে আগের অবস্থায় নিয়ে আসা সম্ভব হবে না। আর আরও বেশি অপেক্ষা করলে ভবনটা সংস্কারের অযোগ্যও হয়ে পড়তে পারে। কিছুটা কাজ হয়েছে বৈকি। তবে, এখনো পর্যন্ত যা কাজ হয়েছে সেটা ওই ধর তক্তা মার পেরেক গোছের, জানিয়েছে পার্লামেন্টের কমিটি। তাতেই সপ্তাহে দুই মিলিয়ন পাউন্ড করে খরচ হয়েছে। কম তো নয়।
আসলে, ওয়েস্টমিনিস্টার রাজপ্রাসাদটিই যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এমন নয় যে এই প্রথম। এর আগেও এই ভবনের সংস্কার নিয়ে বার বার আলোচনা হয়েছে। তবে, সেই আলোচনা এগিয়েছে খুব ধীর গতিতে। ফলে, কখনোই সামগ্রিক সংস্কারের ব্যবস্থা হয়নি আর, তাতেই ভবনের পরিস্থিতি খারাপ থেকে আরও খারাপ হয়েছে। সংস্কার যে হয়নি তার নেপথ্যেও কারণ রয়েছে। ২০১৮ সালে এমপিরা ভোটাভুটির মাধ্যমে ঠিক করেছিলেন, ২০২০ সালে ভবনটা কিছুদিনের জন্য খালি করে দেওয়া হবে। সেই সময় সংস্কারের কাজ করা যাবে কিন্তু ২০২০ সালে সকলে পার্লামেন্ট ভবন ছেড়ে যেতে আর রাজি হননি, ফলে সংস্কারও সম্ভব হয়নি। যারা ভবনটা ছেড়ে যেতে চাননি, তারা বার বার বলেছেন, পার্লামেন্ট ঠিকমতো সংস্কার করতে হলে বহু বছর সময় লেগে যাবে। এতদিন ওই ভবন ছেড়ে অন্যত্র পার্লামেন্ট চালানো সম্ভব নয়।
উল্লেখ্য, শতাব্দী প্রাচীন এই ভবন বহু ইতিহাসের সাক্ষী। ১৮৩৪ সালের অগ্নিকাণ্ডেই নষ্ট হয়ে গিয়েছিল পুরনো ওয়েস্টমিনিস্টার প্রাসাদ। তারপর চার্লস ব্যারি নামক এক স্থপতি নতুন ভবন তৈরি করেন। নিও গথিক স্থাপত্যের সেই ভবনই এখন যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট বলা চলে এটা ব্রিটিশদের অহংকারের জায়গা। কিন্তু সেই ভবন, সেই অহংকার আর কতদিন রক্ষা করা যাবে, তা নিয়ে চারিদিকে জোর আলোচনা শুরু হয়ে গেছে।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম