কেন আসতে চান লাইভে, প্রথম কলকাতাকে কী জানালেন রাজীব ব্যানার্জী? জানুন

।। শিবপ্রিয় দাশগুপ্ত ।।
এবার আগামী ১৬ জানুয়ারি নেলা ৩টেয় সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের কথা বলবেন বলে নিজের ফেসবুক-এ লিখেছেন রাজ্যের বনমন্ত্রী ও হাওড়া জেলা তৃণমূলের কোঅর্ডিনেটর রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় । এর ফলে দলের চিন্তা আরও বেড়ে গেল। দলের অন্দরে এখন শুধুই দুঃশ্চিন্তার জাল তৈরি হচ্ছে। প্রশ্ন উঠছে তবে কী ১৬ জানুয়ারি রাজীব দল ছাড়তে চলেছেন? রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে সেচমন্ত্রী পদ যেদিন থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল সেদিন থেকেই দলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ছে তাঁর। সেই দূরত্ব এখন পুরোদমে দলে থেকে প্রতিবাদীর জায়গায় তুলে নিয়ে গেছেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় (Rajiv Banerjee)।
তাঁর নামে দাদার অনুগামী বলে পোস্টার পড়েছে। বিভিন্ন সময় তিনি তাঁর ক্ষোভের কথা প্রকাশ্যে জানিয়েছেন। এই ক্ষোভ প্রশমনে তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Perth Chatterjee) তাঁর নাকতলার বাড়িতে দুবার হাওড়া জেলা তৃণমূলের কোঅর্ডিনেটর ও রাজ্যের বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। একটি বৈঠকে তৃণমূল দলের স্ট্র্যাটেজিস্ট প্রশান্ত কিশোরও উপস্থিত ছিলেন। তাতেও বরফ গলেনি। এরপর দলের তরফে ফিরহাদ হাকিম রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Rajiv Banerjee) সঙ্গে বৈঠক করে রাজীবের মানভঞ্জনের চেষ্টা করলে রাজীব তাতে সম্মত হননি।
আরো পড়ুন : বাংলার কৃষকেরা সবচেয়ে বেশি বঞ্চিত, দিল্লি থেকে কলকাতায় ফিরেই মুখ্যমন্ত্রী কে তোপ দিলীপের
কাজেই জটিলতা একই জায়গায় থমকে আছে। এই আবহে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় (Rajiv Banerjee) জানিয়েছেন তিনি ফেসবুক লাইভে আসছেন ১৬ জানুয়ারি বেলা ৩টেয়। রাজীব তাঁর ফেসবুক-এ লিখেছেন, “সকলের কাছে সহজে পৌঁছতে আমি বরাবরই সমাজমাধ্যমকে বেছে নিয়েছি। অনেক দিন তা করা হয়নি।” এই ফেসবুক পোস্টেই তিনি তারপর তাঁর কর্মসূচির দিনক্ষণ জানিয়েছেন। রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে তাঁর ক্ষোভের কারণ জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেছেন, “স্বাধীনতার পর সেচ দপ্তরে তেমন কোনও উল্লেখযোগ্য কাজ হয়নি। আমি সেচ দপ্তরের দায়িত্ব নিয়ে যা করেছি। অথচ সেই সময় রাজ্যমন্ত্রিসভার সাফল্য উল্লেখ করে যে বই প্রকাশ করা হয়েছে তাতে সেচ দপ্তরের নাম আসেনি।
এমন কী সেচ দপ্তর থেকে কোনও এক অজ্ঞাত কারণে আমায় সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমি সব ছেড়ে মানুষের সেবার জন্য রাজনীতিতে এসেছি। আমি মানুষের সঙ্গেই থাকব।” রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় মানুষের সঙ্গে থাকবেন সেটা স্পষ্ট জানালেও কোন দলের হয়ে জনসংযোগ বজায় রাখবেন তা বলেননি। তবে তাঁর ফেসবুক লাইভের কথা তিনি ফেসবুকে পোস্ট করার পর সেখানে অসংখ্য কমেন্ট এসেছে। তাতে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে তৃণমূল না ছাড়তে অনুরোধ করা হয়েছে। এমন কী শুভেন্দু অধিকারীর মতো তৃণমূল ছেড়ে তিনি যাতে বিজেপিতে যোগ না দেন সেই অনুরোধও করা হয়েছে।
কেউ লিখেছেন, আপনার দল ছাড়া নিয়ে যে জল্পনা চলছে তার নিয়ে যেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই স্পষ্ট বার্তা দেন। এই কমেন্ট যারা করেছেন তাঁরা যে তৃণমূল ছাড়া অন্য রাজনীতি করেন না সেটা স্পষ্টই কমেন্টের ভাষা দেখে বোঝা যাচ্ছে। তবে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় কী করতে চলেছেন সেটার জন্য ১৬ জানুয়ারি বেলা ৩টে পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। হতেও পারে তিনি সেদিনই দল ছাড়ার কথা ঘোষণা করবেন। আবার তা নাও হতে পারে। তবে যাই তিনি করুণ আপাতত তিনি শাসকদল তৃণমূলের হার্টবিট যে আরও কিছুটা বাড়িয়ে দিতে পেরেছেন তাতে কোনও সন্দেহ নেই।