কেন্দ্রে-রাজ্যে এক সরকার থাকলে কি সুবিধা শুভেন্দুর? বিস্ফোরক অভিষেক

।। প্রথম কলকাতা ।।
সরাসরি নাম না করে তৃণমূলের যুব সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Abhishek Banerjee) তোলাবাজ ভাইপো বলে প্রতিদিন নিশানা করে চলেছেন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। মেদিনীপুর কলেজ ময়দানে ১৯ ডিসেম্বর বিজেপিতে যোগদান করার পরেই জনসভার মঞ্চ থেকে শুভেন্দু তোলাবাজ ভাইপো হটাও বলে সোচ্চার হয়েছেন। সেই থেকে প্রতিটি সভায় শুভেন্দুকে একথা বলতে শোনা গিয়েছে। সেই প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরের জনসভা থেকে নাম না করে শুভেন্দু অধিকারীকে তীব্র আক্রমণ করলেন তৃণমূল যুব সভাপতি। শুভেন্দু বারবার বলছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হাতে বাংলা তুলে দিতে হবে। রাজ্যে এবং কেন্দ্রে একই সরকার প্রয়োজন। এতে বাংলার উন্নয়ন হবে। আর সেই ইস্যুতেই তাঁকে এদিন নিশানা করেছেন অভিষেক।
তিনি বলেন, কেন্দ্র এবং রাজ্যে এক সরকার থাকলে তোমার চুরি করতে সুবিধা হবে তো! সেই কারণে বলছ দুটি জায়গায় এক সরকার প্রয়োজন। আমাকে বলছো তোলাবাজ ভাইপো হটাও। টিভির পর্দায় টাকা নিতে কাকে দেখা গিয়েছে? আমাকে দেখা গিয়েছে, না তোমাকে দেখা গিয়েছে? তুমি তোলাবাজ। তোলাবাজি করে এখন সততার প্রতিমূর্তি সাজছ? বলছো বাংলাটা মোদির হাতে তুলে দিতে হবে। বাংলা কি একটা বস্তু, নাকি একটা মোয়া? আসলে কেন্দ্র এবং রাজ্যে বিজেপি থাকলে চুরি করতে সুবিধা হবে। যে সুবিধা হচ্ছে মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়ের নেতাদের। যদিও অভিষেক এক্ষেত্রে ছত্তিশগড়ের কথা বললেও সেখানে এখন কংগ্রেস সরকার রয়েছে। আগে সেখানে বিজেপি (bjp) ছিল। এদিন দলবদল করায় শুভেন্দুকে ফের উপসর্গহীন করোনা রোগী বলে বিঁধেছেন অভিষেক। তিনি বলেন, আমি তোমাকে বলেছিলাম নিজের বাড়িতে তো পদ্মফুল ফোটাতে পারছ না।
আরো পড়ুন : নেতাই থেকে পেটাই শুরু, শুভেন্দুর মুখোমুখি হয়ে লড়তে চান এই নেতা
তারপরই দেখলাম এক ভাইকে বিজেপিতে যোগদান করিয়েছ। তার মানে বাড়িতে আরো উপসর্গহীন রোগী আছে। এতে আমাদের খুব ভালো হল। আমাদের সুবিধা হয়েছে। মনে রাখবে পদ্ম শুকিয়ে যায় চারদিন রাখলেই। কিন্তু ঘাস যত কাটবে, তত ঘাস গজাবে। তৃণমূল হচ্ছে ঘাসফুলের দল। আমাদের মেরুদণ্ড সোজা আছে। আমরা বাংলাকে গুজরাটের কাছে বিক্রি করব না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) আগেও যেমন জীবন যাপন করতেন, এখনো তাই করেন। অথচ নরেন্দ্র মোদি আগে ১০ লক্ষ টাকা দামের গাড়ি চড়তেন। এখন ৬ কোটি টাকা দামের বুলেটপ্রুফ গাড়িতে চড়েন। এদিন ফের বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বকে গুন্ডা শব্দে আক্রমণ করেছেন তিনি। অভিষেক বলেন, ” আমি নাম করে বলছি কৈলাস বিজয়বর্গীয়র ছেলে আকাশ বিজয়বর্গীয় একজন গুন্ডা। আমি নাম করে বলছি দিলীপ ঘোষ গুন্ডা। নাম করে বলছি অমিত শাহ বহিরাগত। পারলে আমাকে জেলে ঢোকান।
আমি নাকি তোলাবাজ? দায়িত্ব নিয়ে সবার সামনে বলছি, যদি প্রমাণ করতে পারেন কোনো দুর্নীতি করেছি তাহলে ফাঁসিতে ঝুলে যাব। প্রমাণ করুন, সবার কাছে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলাম”। অভিষেকের অভিযোগ, বিজেপিতে দুর্নীতিগ্রস্তদের ভিড় বাড়ছে। তিনি বলেন,” প্রধানমন্ত্রী বলছেন সব কা সাথ, সব কা বিকাশ। এখানে অপরাধীদের বিকাশ ঘটছে। সেখানে তৃণমূল শুধু উন্নয়ন করছে। মানুষ লাইন দিয়ে স্বাস্থ্য সাথীর কার্ড নিচ্ছে। তৃণমূল মানুষের জীবন বাঁচাচ্ছে। দুয়ারে সরকার মানুষকে ভরসা এনে দিয়েছে। আপনারা জিএসটি, নোটবন্দি করে মানুষকে শেষ করে দিয়েছেন। আমরা রিপোর্ট কার্ড পেশ করেছি উন্নয়ন নিয়ে। ক্ষমতা থাকলে আপনারা করে দেখান গত সাত বছরে কি করেছেন সেটা নিয়ে।” রাজ্যে ফের তৃণমূল আসছে এই দাবি তুলে অভিষেক বলেন, হাওয়াই চটি পরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হয়ে তৃতীয়বারের জন্য নবান্ন থেকে রাজ্য শাসনের জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন। এদিন অভিষেকের সভায় বিপুল সংখ্যক মানুষ উপস্থিত হয়েছিলেন। স্বাভাবিকভাবেই বিষয়টি তৃপ্ত করেছে তাঁকে।