ফের বাংলায় আসছে আরও দুই কোম্পানী সিআরপিএফ বাহিনী, কেন? জানুন

।। ময়ুখ বসু ।।
পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম এবং বাঁকুড়ায় তিন কোম্পানী বাহিনীর পর ফের রাজ্যে আসতে চলেছে আরও দুই কোম্পানী সিআরপিএফ (CRPF) বাহিনী। একুশের বিধানসভা ভোটের আগে বাংলাকে নিরাপত্তার মোড়কে রীতিমতো ঢেকে ফেলতে যে কেন্দ্রীয় সরকার বদ্ধ পরিকর তা ফের প্রমাণিত হলো। ভোটের আগেই রাজ্যে একটু একটু করে পাঠানো হচ্ছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। জানা গিয়েছে, বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সহ বাংলায় সফররত ভিআইপি এবং ভিভিআইপিদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, কিছুদিন আগেই রাজ্য সফরে এসে ডায়মন্ডহারবার যাওয়ার পথে আক্রান্ত হন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা (JP Nadda) সব বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বরা।
তারপরেই বিষয়টিকে যে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ভালো নজরে নেয়নি তা বোঝা গিয়েছিলো। এরপর থেকেই বাংলাকে নিরাপত্তার মোড়কে ঢেকে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়ে গুটি গুটি পায়ে কেন্দ্র এগোচ্ছে বলে রাজনৈতিক মহলের অনুমান। পাশাপাশি রাজনৈতিক মহল মনে করছে, ভোটের এতো আগে থাকতে যেভাবে বাংলায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে তাতে রাজ্যের নিরাপত্তা নিয়ে অস্বস্তিও বাড়ছে রাজ্যের শাসক দলের। সেখানে দাঁড়িয়ে কার্যত এক ঢিলে দুই পাখি মারার কৌশল নিয়েছে বিজেপি (bjp)। রাজ্যের রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছেন, যেভাবে একুশের ভোটের আগে থেকেই রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানো হচ্ছে তাতে ভোটের অনেক আগে থেকেই বাংলায় নির্বাচনী আচরণবিধি লাগু করা হতে পারে।
সেই লক্ষ্যেই সম্ভবত এখন থেকেই রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে। যদিও রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানো নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে জোর জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে। তৃণমূল নেতা ফিরহাদ হাকিম কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে তীব্র ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, বর্তমানে তৃণমূল কংগ্রেস স্বাধীনতা সংগ্রাম লড়ছে। যদিও রাজ্যে সিআরপিএফ (CRPF) বাহিনী বাড়ানো প্রসঙ্গে সিআরপিএফ সুত্রে জানা গিয়েছে, বাংলায় অতিরিক্ত বাহিনীর পাঠানোর পিছনে কোনও রাজনৈতিক কারন নেই। তবে রাজনৈতিক মহল মনে করছেন, একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে বাংলায় রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়তে পারে সেটা আঁচ করেই এখন থেকে সাবধানী পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে কেন্দ্র।
এর আগে রাজ্যের পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম এবং বাঁকুড়াতে বিক্ষিপ্ত কিছু ঘটনায় বিজেপির কর্মী সমর্থকদের উপর আক্রমণের অভিযোগ ঊঠতেই সেখানে সিআরপিএফ বাহিনী মোতায়েন করা হয়। এছাড়া ইতিপূর্বে টিটাগড়ে বিজেপি নেতা মনীষ শুক্লা খুন, নাড্ডার গাড়ি বহরে হামলা, সম্প্রতি বিজেপিতে যোগ দেওয়া পূর্ব বর্ধমানের সাংসদ সুনীল মন্ডলের উপর কলকাতার হেস্টিং অফিসে যোগ দেওয়ার আগে যে বিক্ষোভের ঘটনা ঘটেছে সেই সমস্ত ঘটনাকে লঘু করে দেখতে নারাজ কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। যার ফলে এখন থেকেই বাংলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী বাড়ানোর সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হচ্ছে।