মদনমোহন বাড়ির কাঠামিয়া দুর্গাপুজো

।। শর্মিলা মিত্র ।।
কোচবিহারের প্রাচীন পুজোগুলির মধ্যে অন্যতম মদনমোহন বাড়ির কাঠামিয়া দুর্গাপুজো। ১৩০ বছরের বেশি সময় ধরে হয়ে আসছে এই দুর্গাপুজো। রাজা নৃপেন্দ্রনারায়ণের হাত ধরে শুরু হয় এই পুজো। জানা যায়, মদনমোহনের প্রতিষ্ঠার পরপরই শুরু হয় এই দুর্গাপুজো। প্রতিমা তৈরির ক্ষেত্রে কোনও বাঁশ ব্যবহার না করে প্রতিমার পুরো কাঠামোটিই কাঠ দিয়ে তৈরি করে তার উপরে খড় ও মাটি দিয়ে এই প্রতিমা তৈরি করা হয় বলে কাঠামিয়া দুর্গা বলে পরিচিত এই পুজো।
যে মন্দিরে এই পুজো হয়, সেই মন্দিরটিকেও কাঠামিয়া মন্দির বলে। দেবী ভবানীর প্রতিমূর্তি হিসেবে পূজিতা হন কাঠামিয়া দুর্গা। কোচবিহারের বড় দেবী, দেবী ভবানী ও এই কাঠামিয়া দুর্গা এক এবং অভিন্ন। কাঠামিয়া দুর্গার দুপাশে থাকেন দেবী দুর্গার দুই সুখী জয়া ও বিজয়া। আজও রাজবাড়ির ঐতিহ্য বহন করে চলেছে এই পুজো। প্রতি বছরের রীতি মেনে ষষ্ঠীর দিন মদনমোহন মন্দিরে নিয়ে আসা হয় প্রতিমা।
আরো পড়ুন : বৃষ্টি ও করোনা আতঙ্কের মধ্যেই শুরু হয়ে গেল ২০২০-র দুর্গাপুজো
ওই দিন বিল্বপত্র বরণ অনুষ্ঠান হওয়ার পর পুজো শুরু হয়ে যায়। ষষ্ঠীর দিন পাঁঠা বলি হয়। সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমীতেও বলি হয়। এই পুজোর বিশেষত্ব অষ্টমীর দিন মোষ বলি। পাশাপাশি, ১১ জন ব্রাহ্মণকে ব্রাহ্মণ ভোজন করনো রীতি রয়েছে এই কাঠামিয়া দুর্গাপুজোয়।দশমীর দিন বিকেলে তোর্সা নদীতে বিসর্জনের পর অনুষ্ঠিত হয় অপরাজিতা পুজো।
প্রথা মেনে বিসর্জনের পর কাঠামো তুলে এনে গুঞ্জবাড়ি মন্দিরে রেখে দেওয়া হয়। রীতি মেনে গুঞ্জবাড়ির নির্দিষ্ট একটি পরিবারের সদস্যরা এই কাঠামিয়া দুর্গা প্রতিমা তৈরি করেন। তবে, এবছর করোনা আবহের মধ্যে সবকিছু নিয়ম রীতি মেনে করা হলেও, অন্যান্যবারের মতো দেবী দুর্গাকে এবছর অন্নভোগ দিতে পারবেন না ভক্তরা বলে জানা গিয়েছে।