সমবায় ব্যবস্থায় ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ, সিবিআই তদন্ত চাইল বিজেপি

।। প্রথম কলকাতা ।।
দুর্নীতি ইস্যুতে দীর্ঘদিন ধরেই রাজ্যের তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপির সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা তৃণমূল কর্মী তথা নেতাদের একাংশের বিরুদ্ধে দুর্নীতির নানা অভিযোগ এনে আন্দোলনে নেমেছে। তৃণমূলের একেবারে নিচুতলার নেতৃত্ব থেকে প্রথম সারির নেতা,মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে একরাশ অভিযোগ রয়েছে বিজেপির। এবার রাজ্যের সমবায় মন্ত্রী তথা হাওড়া জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান অরূপ রায়ের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সিবিআই তদন্ত চাইল বিজেপি। এ বিষয়ে বুধবার হেস্টিংসের বিজেপি কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নেতা শমীক ভট্টাচার্য একটি সমবায় ব্যাঙ্কের কথা তুলে ধরে অভিযোগ করে বলেন,” সমবায় ব্যাঙ্কের দুর্নীতি বিরাট আকার নিয়েছে।
গোটা সমবায় ব্যবস্থা কার্যত তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে পরিণত হয়েছে। একশ্রেণির নেতাদের লুটের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। আমানতকারীদের টাকা নয়ছয় করা হচ্ছে। উত্তর ২৪ পরগনা থেকে বহু টাকা সরিয়ে হাওড়ায় নিয়ে আসা হচ্ছে। সেই জেলার তৃণমূল বিধায়করা পর্যন্ত এই ইস্যুতে সোচ্চার হয়েছেন। এটা শুধু একটা বা দুটো ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। গোটা সমবায় ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। রাজ্যের সময় ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে তৃণমূল। পুরোটা দুর্নীতিতে ডুবে গিয়েছে। তার দায় এড়াতে পারেন না সমবায় মন্ত্রী অরূপ রায়। অন্যান্য রাজ্যের সমবায় ব্যবস্থায় যেভাবে উন্নতি হয়েছে, তার থেকে পশ্চিমবঙ্গ প্রচুর পিছিয়ে রয়েছে। বেনফেডের টাকা নিয়ে কি করছেন? কত প্রকল্পের কথা বলেন। কিন্তু কার্যত কিচ্ছু হয় না।
আরো পড়ুন : আব্বাস সিদ্দিকীর সভায় বাধার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে
গোটা সমবায় ব্যবস্থা দুর্নীতিতে জর্জরিত। আমরা বিষয়টি নিয়ে সিবিআই তদন্তের দাবি করছি। সেই সঙ্গে আমরা চাই এর দায় নিয়ে পদত্যাগ করুন সমবায়মন্ত্রী অরূপ রায়”। এভাবেই রাজ্যের সমবায়মন্ত্রী অরূপ রায়কে নিশানা করেছেন বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য (Shamik Bhattacharya)। শমীক অভিযোগ করে বলেন, সমবায় ব্যবস্থায় যে দুর্নীতি হচ্ছে তা চিটফান্ড কেলেঙ্কারিকেও ছাপিয়ে যাবে। সমবায় মন্ত্রীর নির্বাচনী কেন্দ্রে এই দুর্নীতি ব্যাপক আকার নিয়েছে। গোটা বিষয়টি নিয়ে কোনো পদক্ষেপ করছেন না মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি নিশ্চুপ রয়েছেন। এটা অত্যন্ত গুরুতর বিষয় রাজ্যের কাছে।
এর পাশাপাশি এদিন গ্রেফতার হওয়া প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ কেডি সিং প্রসঙ্গে তৃণমূলকে বিঁধেছেন তিনি। বিজেপি নেতা বলেন, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডাদের বহিরাগত বলছে তৃণমূল। অথচ ঝাড়খন্ড থেকে পশ্চিমবঙ্গে নিয়ে আসা হয়েছে কেডি সিংকে। তাঁকে সাংসদ করেছে তৃণমূল। তাঁকে কিন্তু তৃণমূল বহিরাগত বলছে না। যেভাবে এদিন শমীক সমবায় ব্যবস্থা নিয়ে গুরুতর অভিযোগ এনেছেন, সেটা নিয়ে বিজেপি আগামীদিনে কতটা আন্দোলনে নামবে সেদিকে চোখ থাকবে রাজনৈতিক মহলের। এমনিতেই হাওড়া জেলায় তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব তীব্র আকার ধারণ করেছে। অরূপ রায়ের বিরুদ্ধে এদিন বিজেপি যে অভিযোগ এনেছে, তা নিয়ে হাওড়ায় অরূপ বিরোধী গোষ্ঠীর নেতা বলে যারা পরিচিত, তাঁরা বিষয়টি নিয়ে কিছু বলেন কিনা, এখন সেটাই দেখার।