।। প্রথম কলকাতা ।।
Bangladesh: বাংলাদেশের (Bangladesh) পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের (United States) দক্ষিণ এবং মধ্য এশিয়া বিষয়ক দপ্তরের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লুয়ের (Donald Lu) পর্যবেক্ষণ যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। মার্কিন কর্মকর্তারাও বাংলাদেশে তাদের মন্ত্রীর সফরকে বেশ গুরুত্ব সহকারে নিয়েছেন। বাংলাদেশ সরকার যখন পশ্চিমা রাষ্ট্রদূতদের নানান কর্মকাণ্ডে একটু অস্বস্তিতে রয়েছে, ঠিক তখনই ঢাকা শহরে এসেছিলেন মি. লু। তাঁর সফরের অন্যতম আলোচনার বিষয়গুলির তালিকায় ছিল বাণিজ্য, নিরাপত্তা, জ্বালানি, ধর্মীয় স্বাধীনতা, শ্রম, মানবাধিকার প্রভৃতি। এছাড়া এই বৈঠকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের (United States) পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন স্টাফ অফিসার উইলিয়াম শিবার এবং রাষ্ট্রদূত পিটার হাস।
ডোনাল্ড লু (Donald Lu) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ এবং মধ্য এশিয়া বিষয়ক দপ্তরের সহকারি পররাষ্ট্রমন্ত্রী (Assistant Secretary Bureau Of South And Central Asian Affairs) হিসেবে রয়েছেন। ১৫ই জানুয়ারি রবিবার তিনি বাংলাদেশের সফরের অংশ হিসেবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডক্টর এ.কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এছাড়াও সেখানে ছিলেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহরিয়ার আলাম এবং পররাষ্ট্র সচিব রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন। সেখানে বাংলাদেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কিত নানান বিষয়ে আলোচনা করা হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মন্ত্রীর সম্মানে মধ্যাহ্নভোজনের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের গবেষক, শিক্ষক, ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তাগণ সহ সুশীল সমাজের নানান প্রতিনিধিবৃন্দ। ডোনাল্ড লু ব্যুরো অফ সাউথ অ্যান্ড সেন্ট্রাল এশিয়ান অ্যাফেয়ার্সয়ের সহকারী সেক্রেটারি অফ স্টেট হিসেবে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরের নিয়োগ পেয়েছিলেন ।
তাঁর সফরের আগে বাংলাদেশের পরমরাষ্ট্রমন্ত্রী একটি সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, বাংলাদেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ভালো সম্পর্ক থাকা খুবই স্বাভাবিক। গত বুধবার বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব জানিয়েছিলেন ডোনাল্ড লু আসার পর সব বিষয় নিয়ে খোলামেলা আলোচনা হবে। ডোনাল্ড লু বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় পাওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশের বেশ প্রশংসা করেন। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। বাংলাদেশ যেভাবে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন প্রদানের লক্ষ্যমাত্রা পূরণের সাফল্য অর্জন করেছে, সেক্ষেত্রে তিনি প্রশংসা করেন। ভবিষ্যতে এই ধরনের অতিমারিতে দুই দেশ একসাথে কাজ করতে ইচ্ছুক। পাশাপাশি এই বৈঠকে উঠে এসেছে দুই দেশের উন্নয়ন সহায়তা, প্রতিরক্ষা, বিনিয়োগ, বাণিজ্য, নিরাপত্তা, ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল, গণতন্ত্র, মানবাধিকার এবং শ্রম সংক্রান্ত নানান বিষয়।
এই বৈঠক নিশ্চিত করেছে যে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক বেশ ভালো। আর এই ধারা তারা অব্যাহত রাখতে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি এবং পারস্পরিক সহযোগিতার উপর বিশেষভাবে গুরুত্ব দিচ্ছে। বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় ১০ লক্ষেরও বেশি বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিকদের মানবিক সহায়তা এবং তাদের বাসস্থানের বিষয় সমূহ নিয়ে এই বৈঠকে আলোচনা করা হয়। মি. লু জানান, বাংলাদেশের সকল ইতিবাচক প্রচেষ্টার ক্ষেত্রে মার্কিন প্রশাসন সর্বদা সহযোগিতা এবং সমর্থন করবে।
এই বৈঠকে র্যাবের বিষয়ে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। যা বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি দিক। র্যাব বিচারবহির্ভূত হত্যার সংখ্যা কমানোর ক্ষেত্রে যেভাবে কাজ করছে তার অগ্রগতির কথা স্বীকার করেছেন লু। তিনি জানান, দুই দেশের বন্ধুত্বকে শক্তিশালী করতেই বাংলাদেশে এসেছেন। শ্রমিক অধিকারের বিষয় যে আলোচনা হয়েছে তা নিয়ে গর্ববোধ করেন। শ্রম অধিকারের ক্ষেত্রে একে অপরের সহযোগিতার করার বিষয়ে আত্মবিশ্বাস রয়েছে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এই বৈঠক সম্পর্কে জানান, দুই দেশের মধ্যে গঠনমূলক আলোচনা হয়েছে। যা আগামী পঞ্চাশ বছরকে আরো সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। যদি কোন সমস্যা থাকে তাহলে তা নিয়ে অবশ্যই আলোচনা হবে আর গঠনমূলক পরামর্শ এলে তা বাংলাদেশ অবশ্যই গ্রহণ করবে। পাশাপাশি যদি দুর্বলতা থাকে সেই দুর্বলতা দূর করার চেষ্টা করবে বাংলাদেশ।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম