মানভঞ্জন পর্ব শেষ, সোমবার মিছিলে হাঁটবেন শোভন-বৈশাখী

।। প্রথম কলকাতা ।।
যবে থেকে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে এসেছেন শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং তাঁর বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় (Baishakhi Banerjee) , তখন থেকেই তাঁদের নিয়ে অস্বস্তি বেড়েই গিয়েছে গেরুয়া শিবিরে। তাঁদের আচরণে দল প্রতিনিয়ত বিব্রত হয়েছে। বিজেপি অত্যন্ত শৃঙ্খলাবদ্ধ দল। সেখানে শোভন- বৈশাখীকে নিয়ে যে অচলাবস্থা শুরু হয়েছে, তার শেষ কোথায় তা বোধহয় জানা নেই বিজেপির। সদ্য তাঁদের দুজনকে মিছিল করে রাজ্য দপ্তরে নিয়ে আসার পরিকল্পনা করেছিল দল। কিন্তু সেদিন মিছিলে যোগ দেননি তাঁরা। বলাবাহুল্য এতে মুখ পুড়েছে বিজেপির। তারপরই তড়িঘড়ি আসরে নামেন রাজ্য বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। শুরু হয় মানভঞ্জনের পালা।
জানা গিয়েছে শোভন, বৈশাখী এরপরেই রাজি হয়েছেন সক্রিয় ভাবে বিজেপির হয়ে ভোটযুদ্ধে ময়দানে নামতে। সেই লক্ষ্যে সোমবার পথে নামছেন তাঁরা। গোলপার্ক থেকে সেলিমপুর পর্যন্ত একটি মিছিলে অংশ নেবেন শোভন এবং বৈশাখী। স্বাভাবিকভাবেই শোভন, বৈশাখী সক্রিয় হওয়ায় খুশি রাজ্য বিজেপি (bjp)। উল্লেখ্য সপ্তাহ দুয়েক আগে বিজেপি তাদের কলকাতা সাংগঠনিক জেলার পর্যবেক্ষক হিসেবে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের নাম চূড়ান্ত করে। সেই সঙ্গে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Baishakhi Banerjee) সহকারি আহ্বায়ক করা হয়। সেই পদ আনন্দের সঙ্গে গ্রহণ করেছিলেন শোভন। দ্রুততার সঙ্গে বিজেপি কার্যালয়ে শোভন এবং বৈশাখীর জন্য পৃথক ঘরের ব্যবস্থা করা হয় কাজ করার জন্য। দরজায় অস্থায়ীভাবে নেমপ্লেট বসে যায় তাঁদের।
আরো পড়ুন : “খেলা হবে ” দেবাংশুর সুরে সুর মিলিয়ে বলছে মানুষ, নতুন রূপে দেবাংশু
কিন্তু সেদিন মিছিলে অংশ গ্রহণ না করায় দেখা গিয়েছিল বিজেপি নেতৃত্ব কতটা ক্ষুব্ধ হয়েছেন তাঁদের ওপর। সঙ্গে সঙ্গে সেই বরাদ্দ করা ঘরের দরজা থেকে নেমপ্লেট সরিয়ে ফেলা হয়। তালাবন্ধ করে দেওয়া হয় ঘরটিকে। বিজেপিতে শোভন-বৈশাখীর চ্যাপ্টার ক্লোজড, এমনটাই তখন মনে করা হয়েছিল। কিন্তু কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে নির্দেশে বিজেপির রাজ্য নেতারা শোভনের বাড়িতে গিয়ে তাঁর সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে দুজন কেন্দ্রীয় নেতাও ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। সমস্যার সূত্রপাত হয়েছিল মিছিলে বৈশাখীকে আমন্ত্রণ না জানানোয়। যদিও রাজ্য বিজেপির দাবি তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। অবশ্য শরীর খারাপ থাকায় মিছিলে যেতে পারেননি বলে দাবি করেছিলেন বৈশাখী। তবে শোভন কেন যাননি তা নিয়ে সেদিন কোনো সদুত্তর পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য কলকাতা সাংগঠনিক জেলায় থাকা বেশিরভাগ আসনে বিজেপি একেবারেই ভালো জায়গায় নেই। গত লোকসভা নির্বাচনের ফলের ভিত্তিতে দেখা গিয়েছে তারা বহু আসনে তুল্যমূল্য লড়াই দিতে পারেনি। তৃণমূলে থাকার সময় কলকাতা এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার দায়িত্বে ছিলেন শোভন। তাই বিজেপি (bjp) মনে করছে শোভন কলকাতা সাংগঠনিক জেলার পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করলে বিজেপি বিধানসভা নির্বাচনে এই জায়গা থেকে অত্যন্ত ভালো ফল করতে পারবে। সেই কারণেই তাঁরা শোভনকে ধরে রাখার মরিয়া চেষ্টা করে গিয়েছেন। অবশেষে শোভন সক্রিয় হবেন বলে খবর। তাই আগের দিনের ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে নতুন করে মিছিলের কর্মসূচি নিয়েছে রাজ্য বিজেপি। গোলপার্ক থেকে সেলিমপুর পর্যন্ত সেই মিছিলে হাঁটবেন শোভন এবং বৈশাখীসহ রাজ্য বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। যদিও বিষয়টি নিয়ে বিজেপি মনে করছে না আঁচালে বিশ্বাস নেই। শেষপর্যন্ত তাঁরা সে দিনের মিছিলে যোগদান করেন কিনা সে দিকেই চোখ থাকবে রাজনৈতিক মহলের।