লক্ষ্মণ শেঠ- কিষেণজিদের সোজা করেছি, ‘রাবণ’দের হুঁশিয়ারি শুভেন্দুর

।। প্রথম কলকাতা ।।
বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর মূলত অবিভক্ত মেদিনীপুরকে পাখির চোখ করেছেন শুভেন্দু অধিকারী (Subhendu Adhikari)। সেখানে একের পর এক কর্মসূচি গ্রহণ করছেন তিনি। বুধবার পশ্চিম মেদিনীপুরের সবংয়ের তেমাথানিতে জনসভায় যোগ দিলেন শুভেন্দু। আর সবংয়ের প্রাক্তন বিধায়ক তথা বর্তমান রাজ্যসভার সাংসদ মানস ভুঁইয়াকে (Manas Bhuiyan) তীব্র আক্রমণ করেন তিনি। তাঁকে রাবণ বলে নিশানা করেন শুভেন্দু। কংগ্রেসে থাকাকালীন পশ্চিম মেদিনীপুরের সবং বিধানসভা কেন্দ্র থেকে বহুবার জিতেছেন মানস। এটা কার্যত তাঁর গড় হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে।
পরে দীর্ঘদিনের দল কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে গিয়ে তিনি সাংসদ হওয়ার পর উপনির্বাচনে তাঁর সহধর্মিণী গীতারানি ভুঁইয়া এখান থেকে জয় পেয়েছিলেন তৃণমূলের প্রার্থী হয়ে। সেই প্রসঙ্গে শুভেন্দু বলেন,” এখানকার রাবণকে জানাচ্ছি, আপনার সহধর্মিনীকে জেতানোর ব্যাপারে আমার অনেক ভূমিকা ছিল। আমি না থাকলে তৃণমূল এখানে জিততে পারত না। লোকসভা নির্বাচনে জিততে পারতেন ভারতী ঘোষ। কিন্তু আমি জানি কিভাবে কেশপুরে সমস্ত বুথ লুট করে সেখান থেকে বিপুল মার্জিন পেয়ে তৃণমূল জিততে পেরেছে। সবং বিধানসভা এলাকায় বিজেপি এবং তৃণমূল সমানভাবে লড়েছে। এখানেও ৩০ শতাংশ বুথে রাজ্য পুলিশ দিয়ে ভোট করিয়ে লুঠ করা হয়েছে। সবাইকে সাবধান করে দিচ্ছি।
আরো পড়ুন :দলবদলের ১৮ দিনের মধ্যেই গুরুত্বপূর্ণ পদে বসলেন শুভেন্দু অধিকারী
লক্ষ্মণ শেঠ এবং কিষেণজিকে সোজা করেছি। আমি জানি কিভাবে সবাইকে সোজা করতে হয়। নির্বাচনের আদর্শ আচরণ বিধি চালু হোক। কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট হবে। মানুষ নিজের ভোট নিজে দেবে। বাংলা থেকে উৎখাত হবে তৃণমূল”। উল্লেখ্য বাম জমানায় বর্ধমানের মঙ্গলকোটে কংগ্রেসের একটি কর্মসূচিতে গিয়েছিলেন মানস ভুঁইয়া। সেখানে সিপিএমের দুষ্কৃতীরা তাঁকে তাড়া করে। সেই প্রসঙ্গে শুভেন্দু বলেন,” মঙ্গলকোটে তাড়া খেয়ে ছুটছিলেন। আর বুদ্ধবাবুকে ফোন করে বলছিলেন আমাকে বাঁচান।
মানুষ সব মনে রেখেছেন।’ শুভেন্দুর বক্তব্যে একাধিকবার রাবণ শব্দটি উঠে এসেছে। তিনি বলেন, রাবণদের দূর করতে হবে। সেইসঙ্গে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর যেভাবে যুব সভাপতির সমান্তরাল তৃণমূল যুবা সংগঠন তৈরি করে তার মাথায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Abhishek Banerjee) বসানো হয়েছিল, তা এখনও ভুলতে পারছেন না শুভেন্দু। তিনি বলেন, ২০১১ সালে তৃণমূল ক্ষমতায় এল। আর সেই বছরের একুশে জুলাই শহীদ দিবস মঞ্চে তৈরি করা হল তৃণমূল যুবা। মাথায় বসানো হলো ভাইপোকে। এতদিন ধরে আমাকে কোণঠাসা করা হয়েছে।
আর এখন তোলাবাজ ভাইপো বলছে আমি আলাদা দল করলাম না কেন। আমি বিশ্বের বৃহত্তম দল বিজেপিতে যোগ দিয়েছি। এর পাশাপাশি তৃণমূলের বিভিন্ন স্লোগানকে কটাক্ষ করেছেন শুভেন্দু। উল্লেখ্য তৃণমূল প্রচারে তুলে ধরেছে ‘বাংলার গর্ব মমতা’ বিষয়টিকে। সেই প্রসঙ্গে শুভেন্দু বলেন, বিজেপি ক্ষমতায় আসলে বাংলার গর্ব বলা হবে স্বামী বিবেকানন্দ, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, ক্ষুদিরাম বসুদের। সেইসঙ্গে বলেন, সামনের বিধানসভা নির্বাচনে সবং বিধানসভা কেন্দ্রেও পদ্ম ফুটবে। তবে এদিন শুভেন্দুর মুখে নতুন শোনা গেল রাবণ শব্দটি। রাবণের প্রসঙ্গ তুলে অন্যায়, অবিচার বন্ধ করার কথা বলে শুভেন্দু তৃণমূলকে হুঁশিয়ারি দেন মঞ্চ থেকে।