হিন্দু হলেই দেশভক্ত , হিন্দুত্ববাদের জিগির তুলে দিলেন….

।। ময়ুখ বসু ।।
রাজ্যে ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে যে বিজেপি পাখির চোখ করে নিয়েছে সেটা খুব স্পষ্ট। বাংলা দখলের লক্ষমাত্রা নিয়ে বিজেপি বঙ্গে লড়াই আন্দোলন দিতে পিছপা হচ্ছে না। তবে শুধুমাত্র বিজেপিই নয় একুশের ভোটকে টার্গেট করে বাংলায় সংগঠন বাড়াতে শুরু করে দিয়েছে রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘ (আরএসএস)। ইতিমধ্যেই বাংলায় এসে সংগঠনের হাল চালের খোঁজ খবর নিয়ে গিয়েছেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘের প্রধান মোহন ভাগবত। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, মূলত হিন্দুত্ববাদের উপরে জোর দিয়ে বাংলা দখলের ক্ষেত্রে হিন্দু ভোটারদের মন জয় করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে বিজেপি (bjp ) এবং আরএসএস (RSS)।
সেক্ষেত্রে বিজেপির পালে হাওয়াকে আরও জোরদার করে দিতে ময়দানে নেমেছেন স্বয়ং মোহন ভাগবত। সম্প্রতি তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, কেউ হিন্দু হলে তিনি দেশভক্ত হবেনই। ভাগবতের এই মন্তব্য মূলত বঙ্গে হিন্দুত্ববাদের হাওয়ায় বাড়তি উৎসাহ জুগিয়ে দেবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহল। মাত্র একদিন আগেই ‘মেকিং অফ অ্যা হিন্দু প্যাট্রিয়ট, ব্যাকগ্রাউন্ড অফ গান্ধীজিস হিন্দ স্বরাজ বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে মোহন ভাগবত বলেন, কেউ হিন্দু হলে তিনি দেশভক্ত হবেনই, সেটাই তাঁর চরিত্র এবং প্রকৃতি। তবে শুধু হিন্দুত্ববাদের তাস খেলার পাশাপাশি ভাগবত বলেন, সমস্ত ভারতীয় দেশকে মায়ের চোখে দেখে এবং পুজো করে।
আরো পড়ুন : কর্মীদের নাম ভাঙিয়ে খাচ্ছেন নেতারা, ঔদ্ধত্য দেখাবেন না, সুর বদলাচ্ছেন রাজীব?
তিনি গান্ধীজির প্রসঙ্গ টেনে বলেন, মহাত্মা গান্ধী বলেছিলেন, ধর্ম থেকেই এসেছিলো তাঁর দেশপ্রেম। সুতরাং আপনি যদি হিন্দু হন, তাহলে নিজের থেকেই দেশপ্রেমিক হয়ে উঠবেন। গান্ধীজি স্বরাজের জন্য আন্দোলন শুরু করেছিলেন। তবে যতোক্ষন না আপনি স্বধর্ম বুঝতে পারবেন ততোক্ষন আপনি স্বরাজ বুঝতে পারবেন না। ভাগবতের দাবি, অনেকেই সচেতনভাবে হিন্দু হয়ে উঠতে পারে না। তখন তাদের জাগিয়ে তোলার প্রয়োজন হয়। তবে হিন্দুরা কোনওদিনই ভারত বিরোধী হতে পারবেন না। ভাগবতের এই মন্তব্যে বাংলার রাজনৈতিক মহলের ধারনা, মোহন ভাগবতের এই মন্তব্য বাংলার ভোট বাজারে বিজেপির পালে সুবাতাস দিতে স্বাভাবিকভাবেই সাহায্য করবে।
পশ্চিমবাংলায় মোটের উপর ৭০ শতাংশের কাছাকাছি হিন্দু ভোটার। আর বিভিন্ন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ভোটার প্রায় ৩০ শতাংশ। সেখানে দাঁড়িয়ে বাংলা দখলের ক্ষেত্রে বিজেপি কার্যত হিন্দু ভোটকেই টার্গেট করেছে। সেক্ষেত্রে অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের থেকে যেটুকু ভোট বিজেপির ঘরে ঢুকবে তা তারা উপরি পাওনা হিসাবেই ধরে এগোচ্ছে। সেখানে দাঁড়িয়ে বিজেপির অন্যতম শরীক সংগঠন আরএসএস যতো হিন্দুত্ববাদের হাওয়া তুলে দিতে পারবে তার ফসল ঘরে নিতে পারবে বিজেপি (bjp)। সেক্ষেত্রে মোহন ভাগবতের এই মন্তব্য বাংলার ভোট বাজারে বিজেপিকে যে অনেকটাই বাড়তি অক্সিজেন জুগিয়ে দেবে সেকথা মেনে নিয়েছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ।