দলের যতোদিন প্রয়োজন ততোদিনই দলের হয়ে কাজ করে যাবো, জানালেন অরূপ রায়

।। ময়ুখ বসু ।।
বিতর্কটা উস্কে দিয়েছিলেন বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ (Soumitra Khan) । তিনি বলেছিলেন, হাওড়ার রায় এবং বন্দ্যোপাধ্যায়রা বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছেন। এরপরেই রাজ্য রাজনীতিতে জল্পনা ছড়িয়ে পড়ে। প্রশ্ন উঠতে শুরু করে কে এই রায় এবং বন্দ্যোপাধ্যায়? এরপরেই রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা ধরে নেনে, সৌমিত্র আসলে হাওড়া জেলার তৃণমূল নেতা অরুপ রায় (Arup Roy) এবং রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Rajiv Banerjee) দিকেই ইঙ্গিত করেছে। সৌমিত্র একইসঙ্গে ইঙ্গিত দেন, হাওড়া জেলা থেকে ৭ -৮ জন বিধায়ক বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন।
পাশাপাশি তিনি স্পষ্ট করে দেন, রায় এবং বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যে বিরোধের কারনে যে কোনও একজন খুব শিঘ্রই বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন। এরপরেই ময়দানে নেমে পড়েন তৃণমূল নেতা অরূপ রায়। তিনি সাফ জানিয়ে দেন, দল যতোদিন আমাকে প্রয়োজন মনে করবে ততোদিনই আমি দলের জন্য কাজ করে যাবো। আমি দলের একজন সৈনিক হিসাবেই কাজ করতে অভ্যস্ত। দল যদি ক্ষমতায় নাও থাকে তাহলেও তৃণমূল ছেড়ে যাবো না আমি। দল যেদিন আমাকে বলবে আমার প্রয়োজন দলের কাছে ফুরিয়েছে, সেইদিন অন্য কিছু ভাববো।
তবে কখনই আমি কোনও সাম্প্রদায়িক দলে নাম লেখাবো না। শুক্রবার ১ জানুয়ারি তৃণমূলের প্রতিষ্ঠাদিবসে এমনই সাফ জানিয়ে দিলেন অরুপ রায়। তিনি বলেন, দল হচ্ছে একটি সমুদ্রের মতো। সমুদ্রের জল যেমন কমে যায় ন্না, তেমনি কে দল ছেড়ে চলে গেলো তাতে দলের কোনও ক্ষতি হয় না। যারা তৃণমূলের প্রথম দিনের আন্দোলনের সঙ্গী তারা যতোদিন দলে থাকবেন ততোদিন দলের কোনও ক্ষতি হবে না। যতো ঝড় ঝঞ্জা আসুক না কেন, আমরা লড়াই দিয়ে সমস্ত বাধাকে কাটিয়ে নেবো।
এই বিশ্বাস আমাদের রয়েছে। অরুপ রায় বলেন, হাওড়া জেলায় তিল তিল করে তৃণমূল দলটাকে তৈরি করেছিলাম। ফলে দলের প্রতি আমার আনুগত্য, স্নেহ, ভালোবাসা অটুট রয়েছে। এবং তৃওমূলের প্রতি এই ভালোবাসা চিরকাল থাকবে। আমি ব্যক্তিগতভাবে একটি আদর্শ নিয়েই রাজনীতি ও তৃণমূল দলটা করি। সেই পথ থেকে কখনই বিচ্যুত হবো না। যারা ধান্দাবাজ, যারা সুবিধাবাদী তারাই একদিন এই দল অন্যদিন ওই দল করেন। তাদের সঙ্গে দলের সবাইকে গুলিয়ে ফেলা ঠিক নয়।
তিনি বলেন, আমাদের রাজ্যে বিগত বামফ্রন্ট জমানায় ৩৪ বছর বিরোধী দলে থেকে কেটেছে। সুতরাং রাজনীতির উত্থান পতনকে আমি কখনই ভয় পাই না। যতদিন দলের প্রয়োজন হবে আমাকে, ততদিন দলের জন্য সেবা করে যাব। মানুষের জন্য লড়াই চালিয়ে যাবো। তিনি নতুন প্রজন্মের উদ্দেশ্যে বলে, একজন ভালো মানুষ হিসেবে নিজেকে তৈরি করতে হবে। মানুষের পাশে থাকতে হবে। মানুষের জন্য কাজ করে যেতে হবে। এটাই শেষ কথা। কে কি বললো তারজন্য পিছন ফিরে তাকানোর প্রয়োজন নেই।