।। প্রথম কলকাতা ।।
Indian Ocean Gravity Hole: ভারত মহাসাগরের অতলে কিভাবে তৈরি হলো এতো বড় গর্ত? কোন রহস্য লুকিয়ে আছে ওই ‘গ্র্যাভিটি হোলে’? ‘গ্র্যাভিটি হোল’ আসলে কী? গর্তের গভীরে পৌঁছানোর চেষ্টা বিজ্ঞানীদের। এবার মাধ্যাকর্ষণ নিয়ে আপনার চেনা ধারণা পাল্টে যাবে। তাহলে কী সমুদ্রের তলদেশ নীচের দিকে বসে যাচ্ছে? কোন বিপদ ধেয়ে আসছে? দৈত্যাকার গর্তের উৎপত্তি ও উৎসস্থল নিয়ে শুরু জোরদার গবেষণা। রহস্যের জাল আরো গভীর পর্যন্ত বিস্তৃত। কী বলছেন দুই বাঙালি সমুদ্র বিজ্ঞানী। ভূত্বকের নীচ দিয়ে বয়ে চলা তরল তপ্ত ম্যাগমাতেই লুকিয়ে আসল কারণ। শ্রীলঙ্কার দক্ষিণে ভারত মহাসাগরের নিচে তোলপাড় চলছে। বিরাট বড় গর্তের হদিস। আর তা নিয়েই এবারে চাঞ্চল্যকর দাবি সমুদ্র বিজ্ঞানীদের।
সমুদ্রের মেঝেতে অনেকটা এলাকাজুড়ে বিস্তৃত ওই গর্তটিকে ‘গ্র্যাভিটি হোল’ বা মাধ্যাকর্ষণজাত গর্ত বলা হচ্ছে। গবেষকরা বলছেন গর্তটির নিচের অংশের ভর পৃথিবীর অন্য যে কোনও জায়গার তুলনায় অনেকটাই কম। ফলে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাব সেখানে অনেকটাই হ্রাস পেয়েছে। আজ বলে নয়, দীর্ঘদিন ধরেই এই গর্তটিকে নিয়ে বিজ্ঞানীদের মধ্যে কৌতূহলের শেষ নেই। ভারত মহাসাগরের নিচে এই বিশাল গর্ত কীভাবে তৈরি হলো, সেটাই এখন বড় প্রশ্ন। প্রাচীন সমুদ্রের তল থেকে ঐ গর্তের উৎপত্তি হয়েছে। প্রায় ১৪০ মিলিয়ন বছর আগে ধীরে ধীরে সরতে শুরু করেছিল টেকটোনিক প্লেট। দুটি প্লেটের সংঘর্ষের ফলে সমুদ্রগর্ভের ওই অংশ ডুবে গিয়েছিল। পৃথিবীর সবচেয়ে দুর্বল মহাকর্ষ বলের টানে সমুদ্রতলের কোনো অংশ নিচের দিকে বসে গেলে ‘গ্র্যাভিটি হোল’ তৈরি হয়। ভারত মহাসাগরের নিচেও তা হয়েছে। ভারত মহাসাগরের কেন্দ্রস্থলে দুর্বল মাধ্যাকর্ষণ শক্তির টানের কারণ হিসেবে ভূত্বকের নিচে পৃথিবীর ম্যান্টেল স্তরের গলিত ম্যাগমাকে দায়ী করা হচ্ছে। এই ম্যাগমাই দু কোটি বছর আগে পৃথিবীর আকৃতি গড়ে দিয়েছিল।
আসলে মাথায় রাখতে হবে আমাদের পৃথিবী নিখুঁত গোলক নয়। যদি সেটা হত তাহলে ভূপৃষ্ঠের প্রতিটি বিন্দুতে মাধ্যাকর্ষন সমান হতো। কিন্তু ওই গর্তের মধ্যে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাব বা টান অনেকটাই কম। কিন্তু, সেই মাধ্যাকর্ষণের টান ওই গর্তে এতটা কম কেন তা খতিয়ে দেখার কাজ শুরু করেছেন ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স এর সেন্টার ফর আর্থ সায়েন্সেস বিভাগের বিজ্ঞানীরা। যে দলটির নেতৃত্বে রয়েছেন দুই বাঙালি ভূতাত্ত্বিক দেবাঞ্জন পাল এবং আত্রেয়ী ঘোষ। তারাই ভারত মহাসাগরের নিচে এত বড় গর্ত বা গ্র্যাভিটি হোল পাওয়া নিয়ে তাৎপর্যপূর্ণ ব্যাখ্যাও দিয়েছেন। আরো প্রশ্ন রয়েছে। বাইরে থেকে এই গ্র্যাভিটি হোল বোঝা সম্ভব নয়। সেক্ষেত্রে আদৌ কী ওই গর্তের গভীরে পৌঁছানো সম্ভব? সেক্ষেত্রে কিন্তু মাধ্যাকর্ষণ নিয়ে অনেক চেনা ধারণা পাল্টে যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে, যে ম্যাগমা একসময় পৃথিবীর আকার আকৃতি গড়ে দিয়েছিল, সেই তরল তপ্ত ম্যাগমা ভূত্বকের নিচ দিয়ে দু কোটি বছর ধরে বয়ে চলেছে। বিজ্ঞানীদের ধারণা, ম্যাগমার স্রোত যদি কখনো থমকে যায়, ভারত মহাসাগরের তলদেশে তৈরি হওয়া গর্তটিও মিলিয়ে যাবে। আগামী দিনে এই বিষয়ে আরও নতুন তথ্য উঠে আসতে পারে। সেদিকেই তাকিয়ে বিশ্ব।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম