।। প্রথম কলকাতা ।।
দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান! ৩৬ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে বিশ্বকাপ জয় আর্জেন্টিনার। ১৯৮৬ সালে মারাদোনার পর মেসির হাত ধরে স্বপ্নপূরণ আলবিসেলেস্তেদের। টাইব্রেকারে ৪-২ গোলে ফ্রান্সকে হারিয়ে বিশ্বজয়ের মুকুট উঠল আর্জেন্টিনার মাথায়। সেই সঙ্গে শেষ হলো মেসি সাম্রাজ্যের। নিজের ক্যারিয়ারের শেষ বিশ্বকাপে রাঙিয়ে দিয়ে গেলেন বিশ্ব ফুটবলকে। ২০১৪ সালে বিশ্বজয়ের খুব কাছে পৌঁছেও ছুঁতে পারেননি সোনালী ট্রফি। অবশেষে সোনার পরির স্পর্শ পেলেন ফুটবলের এই জাদুকর। নিজের কাঁধে দলকে নিয়ে গেলেন ফাইনালে, স্বপ্ন দেখালেন এবং জয় করলেন। এটাই তো চেয়েছিল ফুটবলবিশ্ব।
কাতারের লুসাইল স্টেডিয়ামে ম্যাচের শুরু থেকেই চেনা ছন্দে ধরা দিল আর্জেন্টিনা। প্রথমার্ধে ৬০ শতাংশ বল নিজেদের দখলে রেখে ফ্রান্স রক্ষণে একের পর এক আক্রমণ শানিয়ে গেল মেসি-ডি মারিয়ারা। ফ্রান্স আক্রমণের ত্রি-ফলা গ্রিজমান-এমবাপে-জিরুদকে খুঁজেই পাওয়া গেল না। ২৩ মিনিটে মেসির পেনাল্টি থেকে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। ডি-বক্সে ডি মারিয়াকে ফাউল করে বসেন উসমান দেম্বেলে। পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। হুগো লরিসকে ডানদিকে ফেলে বাঁ দিক দিয়ে বল জড়িয়ে দেন মেসি। সেই সঙ্গে চলতি আসরে ১২ গোল করে সর্বোচ্চ গোলের তালিকায় কিংবদন্তি পেলেকে ছাড়িয়ে গেলেন মেসি।
৩৬ মিনিটে ব্যবধান বাড়ান অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া। এই গোলেও অবদান সেই লিওনেল মেসির। মেসির দুর্দান্ত একটি পাস ধরে এগিয়ে যান আলভারেজ। এরপর বল বাড়ান আলিস্টারকে। আলিস্টারের থেকে বল পেয়ে অসাধারণ দক্ষতায় লরিসকে ফাঁকি দিয়ে বল জালে জড়িয়ে দেন ডি মারিয়া। ম্যাচের ৪১ মিনিটে জোড়া পরিবর্তন করেন ফরাসি কোচ দিদিয়ে দেশচ্যাম্প। উসমান দেম্বেল ও অলিভিয়ে জিরুদকে তুলে নিয়ে দুই ফরোয়ার্ড মার্কাস থুরাম ও রন্দাল কোলো মুয়ানিকে মাঠে নামান। তবে তাতেও গোলের মুখ খুলতে পারেনি ফ্রান্স।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে আক্রমণের ঝাঁঝ বাড়াল ফ্রান্স। ৬৪ মিনিটে ডি মারিয়াকে তুলে নিতেই খেলায় ফিরল ফরাসিরা। একের পর এক সুযোগে গোলের মুখ খুলতে মরিয়া হয়ে ওঠে দিদিয়ের দেশচ্যাম্পের দল। ৭৯ মিনিটে মোয়ানিকে ডি-বক্সে ওতামেন্দি ফাউল করলে পেনাল্টি পায় ফ্রান্স। কিলিয়ান এমবাপের সফল পেনাল্টি কিকে ব্যবধান কমায় ফ্রান্স। সেই গোলের ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার আগেই ১ মিনিটের মধ্যে দলকে সমতায় ফেরালেন সেই এমবাপে। কোনাকুনি শটে দুর্দান্ত গোল করে মেসিকে টপকে চলতি বিশ্বকাপে সাতটি গোল করে গোল্ডেন বুটের দৌড়ে এগিয়ে যান পিএসজি ফরোয়ার্ড। ছন্নছাড়া ফুটবলে আর গোলের মুখ খুলতে পারল না আর্জেন্টিনা। খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।
অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধে গোল পায়নি দুই দলই। ১০৮ মিনিটে ফের এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। আলবিসেলেস্তেদের ত্রাতা সেই লিওনেল মেসি। ১১৮ মিনিটে এমবাপের হ্যাটট্রিকে ফের সমতায় ফিরল ফ্রান্স। পেনাল্টি থেকে দলকে সমতায় ফেরালেন কিলিয়ান এমবাপে। গোলের খাওয়ার পরই আক্রমণে ধার বাড়াল আর্জেন্টিনা। শেষ মুহূর্তে সহজ সুযোগ মিস করলেন লাউতারো মার্টিনেজ। খেলা গেল টাইব্রেকারে। টাইব্রেকারে ৪-২ গোলে জিতে স্বপ্নপূরণ মেসির।