প্রাণ সংশয়ের আশঙ্কা, কী ব্যবস্থা নিচ্ছেন শুভেন্দু?

।। প্রথম কলকাতা ।।
বিধায়ক পদ থেকে পদত্যাগের পর সরাসরি রাজভবনে গিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী (Subhendu Adhikari)। রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। তাঁকে এটাই জানিয়েছিলেন যে তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এর কিছুদিন পরেই শুভেন্দু বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর দেখা যায় কেন্দ্রীয় সরকার জেড ক্যাটাগরির নিরাপত্তা ব্যবস্থা করেছে তাঁর জন্য। সেই নিরাপত্তা নিয়েই শুভেন্দু প্রতিটি কর্মসূচিতে যাচ্ছেন। কিন্তু শুভেন্দুর অভিযোগ পদযাত্রা বা জনসভা কর্মসূচিতে তিনি রাজ্য পুলিশের কাছ থেকে সামান্যতম নিরাপত্তা পাচ্ছেন না। এমনকি তিনি এই ব্যাপারে প্রাণ সংশয়ের আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
এরপরেই আজ বুধবার শুভেন্দু হাইকোর্টে মামলা করলেন নিরাপত্তাজনিত ইস্যু নিয়ে। প্রতিটি জনসভায় তিনি যাতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা পান রাজ্য পুলিশের কাছ থেকে, সেই আর্জি জানিয়ে মামলা করেছেন তিনি। বিষয়টি যে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ব্যাপার, তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। মামলায় তিনি রাজ্য পুলিশের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে পক্ষপাতিত্ব এবং গাফিলতির অভিযোগ করেছেন। উল্লেখ্য জেড ক্যাটাগরির নিরাপত্তা পেলেও জনসভায় সেই দায়িত্বপ্রাপ্তদের কিছু করার থাকে না। কারণ সেটি রাজ্য পুলিশের এক্তিয়ারের মধ্যে পড়ে। এমনটাই মনে করছেন শুভেন্দু। উল্লেখ্য সাম্প্রতিককালে নন্দীগ্রাম এবং পুরুলিয়ায় শুভেন্দুর জনসভায় বিঘ্ন ঘটে।
আরো পড়ুন :কার কার বিয়েবাড়ি দিল্লিতে স্পনসর করেছিল কে ডি সিং! ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য শুভেন্দুর
নন্দীগ্রামের সভায় ইট ছুড়ে বিশৃঙ্খলা বাঁধিয়ে জনসভা ভন্ডূল করার চেষ্টা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। শুভেন্দুর নিশানায় রয়েছে যথারীতি তৃণমূল। এমনকি শুভেন্দুর সভার পর তাঁর কার্যালয়ে আক্রমণ চালায় দুষ্কৃতীরা। অর্থাৎ জনসভা এবং পদযাত্রার মতো রাজনৈতিক কর্মসূচিতে শুভেন্দু অধিকারী (Subhendu Adhikari) রাজ্য পুলিশের কাছ থেকে সহযোগিতা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন। ইদানিং তৃণমূলের আক্রমণের প্রধান লক্ষ্য হয়ে উঠেছেন শুভেন্দু। তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব প্রতিটি জনসভায় মূলত তাঁকেই টার্গেট করে চলেছেন। এরপরই দেখা গিয়েছে শুভেন্দুর দুটি কর্মসূচিতে অশান্তি হয়েছে। পুরুলিয়ার কাশীপুরে শুভেন্দুর জনসভার মধ্যে তৃণমূলের পতাকা লাগানো একটি গাড়ি ঢুকে পড়ে। বিষয়টি নিয়ে তীব্র উত্তেজনা দেখা দেয়।
এর পাশাপাশি নন্দীগ্রামের সভায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে ইট ছোড়ার। সব মিলিয়ে শুভেন্দু মনে করছেন আগামীদিনে এই প্রবণতা আরো বাড়বে। এই ধরনের বিষয়ে শুভেন্দুর জন্য যে জেড ক্যাটাগরির নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে, তাদের হাতে সামলানোর কিছু থাকে না। জনসভা বা পদযাত্রা যাতে নির্বিঘ্নে হতে পারে প্রতিটি দলের, সেটা নিশ্চিত করতে হবে রাজ্য পুলিশকে। ডায়মন্ড হারবারে বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডার কনভয়ে হামলার ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছিল রাজ্য রাজনীতিতে। শুভেন্দু মনে করছেন সেই প্রক্রিয়া এবার শুরু হয়ে গিয়েছে তাঁকে ঘিরেও। বিধানসভা নির্বাচনের দিন যত এগিয়ে আসবে, ততই তৃণমূলের নিশানায় আরো বেশি করে পড়বেন শুভেন্দু। সেটা তিনি ভালো করেই বুঝতে পারছেন। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য পুলিশের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে জনসভা গুলিতে উপযুক্ত নিরাপত্তা চেয়ে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছেন তিনি।