।। প্রথম কলকাতা ।।
Military Exercises: নভেম্বরেই পাল্টে যাবে সব ছক। শত্রু দেশের হৃদকম্প বাড়াতে ভারতের ঘুরপথে হুঁশিয়ারি! ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের পরিনাম দেখে ভারত শিক্ষা নিয়েছে। যুদ্ধে জিততে গেলে শুধু হাতিয়ার নয়, প্রয়োজন জবরদস্ত কূটনীতি। বেজিংয়ের চোখ রাঙানির পাল্টা জবাব দিতে ভারত আমেরিকা, ফ্রান্স এবং অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে শুরু করেছে যুদ্ধের মহড়া। ভারত একদিকে যেমন রাশিয়ার পাশের স্ট্রং ভাবে দাঁড়িয়ে রয়েছে, তেমনি আমেরিকা ও পশ্চিমা দেশগুলির সঙ্গে যুদ্ধ অভ্যাসে মজবুত করছে কূটনৈতিক সম্পর্ক। রণনীতির ময়দানে আগামী দিনের ভারতের সবথেকে খতরনাক শত্রু হল চীন। এক্ষেত্রে দুনিয়ার শক্তিশালী দেশগুলিকে নিজেদের পাশে রাখতে হবে। ভারতের একের পর এক যুদ্ধ মহড়ায় এবার নাস্তানাবুদ হতে হবে চীনকে। রাশিয়া এবং আমেরিকা দুই দেশকেই সাথে নিয়ে চলছে ভারত। হিসাব অনুযায়ী ভারত এই সময়ে প্রায় তিনটি বড় যুদ্ধ মহড়ায় অংশগ্রহণ করেছে, যা জানলে হয়রান হয়ে যাবেন। এবার বন্ধ হবে চীন পাকিস্তানের সব চালাকি।
সম্প্রতি ভারত আমেরিকা, ফ্রান্স এবং অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে যুদ্ধের মহড়ায় অংশ নিয়েছে। একদিকে পাকিস্তানি সীমার গা ঘেঁষে ফ্রান্সের সাথে গরুর এক্সারসাইজ, যা চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে পাকিস্তানের কপালে। এছাড়াও চীনকে কড়া বার্তা দিতে ভারত অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে মালাবার যুদ্ধ অভ্যাসে অংশগ্রহণ করেছে। যেখানে চীন সীমার কাছে পাঠানো হয়েছে ভারতের যুদ্ধ জাহাজ। অপরদিকে চীন সীমান্তের কাছেই হয়েছে ভারত আমেরিকার যৌথ ওয়ার গেম। ভারতের কাছে নভেম্বর মাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি সময়।
গত তিন বছর হল চীন ভারতের সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। তাইওয়ান ইস্যুতে পারদ চড়েছে এশিয়ার দেশগুলিতে। তিব্বতে চীনের একাধিক মহড়া ভালো চোখে দেখেনি বহু দেশ। এবার বেজিংকে পাল্টা জবাব দিতে পশ্চিমের শক্তিশালী দেশের সঙ্গে যৌথ সামরিক মহড়া শুরু করেছে ভারত। সম্প্রতি চীন সীমান্তের খুব কাছেই যৌথ সামরিক মহড়া চালিয়েছে ভারত-আমেরিকা। প্রায় ১০ হাজার ফুট উচ্চতায় উত্তরাখণ্ডের অউলিতে এই যৌথ সামরিক মহড়ায় দুই দেশ গুরুত্ব দিয়েছে উচ্চতায় যুদ্ধ অনুশীলনের উপর। ঠান্ডা এবং উচ্চতার সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে জওয়ানরা কিভাবে যুদ্ধ করবেন সেই বিষয়ে অনুশীলন চলে। তবে এই বার্ষিক যুদ্ধ অভ্যাস একেবারে অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু মহড়ার স্থান এবং কাল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর আগেও ২০১৪, ২০১৬ এবং ২০১৮ সালের উত্তরাখণ্ডে যুদ্ধ মহড়া হয়েছিল, তবে তা চীন সীমান্ত থেকে অন্তত ৩০০ কিলোমিটার দূরে। কিন্তু সম্প্রতি ভারত আমেরিকার এই যৌথ মহড়া হয় প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা থেকে মাত্র ৯৫ কিলোমিটার দূর।
অপরদিকে জলপথ এবং আকাশ পথে বিপদের আশঙ্কা রয়েছে পাকিস্তান এবং চীনের। আকাশ পথে ইতিমধ্যেই ভারত-ফ্রান্সের যৌথ মহড়া ব্যাপক সফলতা পেয়েছে। শনিবার ছিল রাজস্থানের যোধপুর এয়ারফোর্স স্টেশনে চলমান ভারতীয় বায়ু সেনা অনুশীলন গরুড় 7এর সপ্তমতম সংস্করণের শেষ দিন।জলপথেও যৌথ নজরদারি চালাতে প্রস্তুত ভারত এবং ফ্রান্স। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের জারি করা একটি বিবৃতি অনুসারে, ভারতীয় বিমান বাহিনীর বহরের Su-30 MKI, Rafale, LCA তেজস এবং জাগুয়ার যুদ্ধবিমান ‘গরুড় সপ্তম’ মহড়ায় অংশ নিয়েছিল। এছাড়াও ছিল লাইট কমব্যাট হেলিকপ্টার (LCH) প্রচন্ড এবং MI-17 হেলিকপ্টারগুলির পাশাপাশি বিমানবাহিনীর কমব্যাট অ্যানাবলিং অ্যাসেটস ফ্লাইট রিফুয়েলিং এয়ারক্রাফ্ট, এয়ারবর্ন ওয়ার্নিং অ্যান্ড কন্ট্রোল সিস্টেম (AWACS) এবং এয়ারবর্ন আর্লি ওয়ার্নিং অ্যান্ড কন্ট্রোল সিস্টেম (AEWC)। ফরাসি বিমান বাহিনীর পক্ষ থেকে 4টি রাফাল যুদ্ধবিমান, একটি A-330 মাল্টি রোল ট্যাঙ্কার ট্রান্সপোর্ট (MRTT) বিমান এবং 220 FASF কর্মীদের একটি দল মহড়ায় অংশগ্রহণ করে।
চীনের উদ্বেগ বাড়িয়ে ভারত মহাসাগর জুড়ে দাপিয়ে বেড়াবে ভারত ফ্রান্সের নৌ বাহিনী। এমনি থেকেই ভারত মহাসাগরে ইন্দোনেশিয়ার অংশে ঘুরে বেড়াচ্ছে চীনের গুপ্তচর জাহাজ ইউয়ান বাগ ৬ । স্বাভাবিকভাবেই ভারত এবং ফ্রান্সের এই মহড়া চীনের জন্য যে ভালো হবে না এ কথা বলাই যায়। এই প্রথম নয় , ২০২২ এর মার্চ এবং এপ্রিল মাসেও ভারত ফ্রান্সের নৌ বাহিনী আরব সাগরে যুদ্ধের মহড়া চালিয়েছিল। যেখানে অংশ নিয়েছিল দুই দেশের জাহাজ, সাবমেরিন, মেরিটাইম, টহল বিমান, যুদ্ধ বিমান এবং হেলিকপ্টার। এবারের মহড়া আরও গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এখানে যুক্ত হয়েছে ফরাসি নৌ বাহিনীর পারমাণবিক শক্তি চালিত বিমানবাহী রণতরী চার্লস ডি গল এবং স্ট্রাইক গ্রুপ। ৯ থেকে ১১ই নভেম্বরে চলা ভারত ফ্রান্সের এই যৌথ মহড়ায় অংশ নিয়েছিল ভারতীয় নৌ সেনার P81 এবং ফ্রেঞ্চ নেভির ফ্যালকন50। এই মহড়া চলেছে মোজাম্বিক চ্যানেল, মরিশাস ও দক্ষিণ-পশ্চিম ভারত মহাসাগরে। মূলত যৌথ নজরদারি এবং মহাসাগরে ম্যাপিং এর কাজ করতে এই মহড়া। যা দুই দেশের সমঝোতার গভীরতা বাড়িয়েছে, আর অপরদিকে চীন পেয়েছে কড়া বার্তা।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম