বাংলাদেশের স্বপ্নপূরণ, শাহজালালের দিকে নজর গোটা বিশ্বের, এক রানওয়েতে এতো বিমান!

।। প্রথম কলকাতা ।।

বাংলাদেশের স্বপ্নপূরণ। শাহজালাল তৃতীয় টার্মিনালের এক রান ওয়েতে এতো বিমান? কি করে চলবে? আসছে বড় চমক, ডিপেনডেন্ট রানওয়ে। কী কী ফেসিলিটি থাকছে থাকছে যাত্রীদের জন্য? শাহজালালের দিকে নজর গোটা বিশ্বের। চালু হতেই বদলে যাবে বিমানবন্দরের অভিজ্ঞতা। “দক্ষিণ এশিয়ার এভিয়েশন হাব” হবে শেখ হাসিনার বাংলাদেশ। সিঙ্গাপুর এর রোহানি বাহারিনের নকশায় তৈরি হচ্ছে বাংলাদেশের শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল। বর্তমানে টার্মিনাল ১ ও ২-এ বছরে প্রায় ৮০ লাখ যাত্রীর পরিষেবা দেওয়ার সুযোগ আছে। থার্ড টার্মিনাল চালুর পর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ২ কোটি ৪০ লক্ষ্য যাত্রীকে পরিষেবা দিতে পারবে। তিন তলা এই টার্মিনাল বর্তমানে চালু থাকা প্রথম ও দ্বিতীয় টার্মিনালের আয়তনের দ্বিগুণেরও বেশি।

বর্তমানে ১৫০ টা ফ্লাইট এর পরিবর্তে পরিচালনা করতে হবে এর দ্বিগুণ। কিন্তু একটা রানওয়ে দিয়ে এত বড় আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর চালানো কতটা কঠিন? হ্যাঁ এটা মানতে হবে অত্যাধুনিক টার্মিনাল, উন্নত অবকাঠামো বিস্তৃত পরিসরের পরেও শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বড় সংকট “সিঙ্গেল রানওয়ে”। তাহলে কী একই সময় দুটো বিমান ওঠানামা করতে পারবেনা? জানিয়ে রাখি ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বাড়ছে ফ্লাইটের সংখ্যা, বাড়ছে যাত্রীর চাপ।
তৃতীয় টার্মিনাল চালু হলে ফ্লাইটের সংখ্যা আরও বাড়বে। এমনিতেই ফ্লাইটগুলোকে টেক অফের আগে অপেক্ষা করতে হয়। তখন চাপ আরও বাড়বে। এই সমস্যা মেটাতেই আরেকটা রানওয়ে নির্মাণের প্ল্যানিং। আরেকটা ইন্ডিপেন্ডেন্ট রানওয়ে নির্মাণের পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায়, একটা ডিপেন্ডেন্ট রানওয়ে নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রথম ধাপের সমীক্ষা শেষ, দ্বিতীয় ধাপের সমীক্ষার পর নির্মাণ কাজ শুরু হবে আগামী বছর শেষে। ডিপেন্ডেন্ট এই রানওয়ের দৈর্ঘ্য হবে ৩২৯২ মিটার। যা বর্তমান রানওয়ের থেকে ৪০০ মিটার কম। সিভিল এভিয়েশন বলছে এতে দুটো বিমান একই সময়ে ওঠানামা করতে না পারলেও কম সময়ে বাড়বে ফ্লাইট সংখ্যা।

২১ হাজার ৩৯৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০১৯ সালে শুরু হয় নির্মাণ কাজ। তারপর থেকে একটু একটু করে ১১ হাজার শ্রমিকের হাতে গড়ে উঠেছে এই স্বপ্ন। নতুন কী কী থাকছে এই থার্ড টার্মিনালে? এখানে সবকিছুই হবে অটোমেটিক ওয়েতে, ঢোকার পর প্রধান গেটে লাগেজ ব্যাগ সহ অন্যান্য ভারী জিনিসপত্র বিমানে পৌঁছতে চলে যাবে আলাদা যন্ত্র। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যাত্রীকে শারীরিকভাবে স্ক্যান ও সাথে থাকা হ্যান্ড ব্যাগ পরীক্ষার জন্য থাকবে বডি স্ক্যানার ও কেবিন স্ক্যানার। অলরেডি পাঁচটা কেবিন স্ক্যানার বসানো হয়েছে, দুটো স্ক্যানার এর মাঝে একটি করে বডি স্ক্যানার বসানো থাকবে। দেশে প্রথম উন্নত এই প্রযুক্তি ব্যবহারে পরীক্ষা করা সম্ভব হবে যাত্রীদের কাছে থাকা তরল দ্রব্য সামগ্রীও। অন্যদিকে লাগেজ ও ভারী জিনিসপত্র স্ক্যানিংয়ের জন্য পরীক্ষায় থাকবে ২৬ টি ব্যাগেজ স্ক্যানার, কনভেয়ার বেল্ট সহ সাতটি স্ক্যানার সেট। আর অবৈধ কোনো কিছু সনাক্ত হলে পরবর্তী প্রক্রিয়ার জন্য চলে যাবে অন্য চ্যানেলে। দেশি-বিদেশি সমস্ত যাত্রীদের ভরসা বাড়বে সেল্ফ চেকিংয়ে, মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

৩ তলা এই টার্মিনালের আয়তন ২ লাখ ৩০ হাজার বর্গমিটার। এতে ১১৫টি চেক-ইন কাউন্টার, ৬৪টি ডিপার্চার, ৬৪টি অ্যারাইভাল ইমিগ্রেশন ডেস্ক, ২৭টি ব্যাগেজ স্ক্যানিং মেশিন, ৪০টি স্ক্যানিং মেশিন, ১২টি বোর্ডিং ব্রিজ, ১১টি বডি স্ক্যানার ও ১৬টি ক্যারোসেল থাকবে। যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, কোরিয়ার মতোই আধুনিক বিমানবন্দর পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশের মানুষ। বাংলাদেশের প্রথম আন্তর্জাতিক মানের এই টার্মিনালের মাধ্যমে অ্যাভিয়েশন খাতে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে। দক্ষিণ এশিয়ার এভিয়েশন হাবে পরিণত হবে বাংলাদেশ। আগামী ৭ অক্টোবর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কবে থার্ড টার্মিনাল ব্যবহার করতে পারবে বাংলাদেশ, আপাতত সেই দিকেই তাকিয়ে ওপার বাংলার মানুষ।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version