।। প্রথম কলকাতা ।।
Primary school: কথায় বলে, ইচ্ছে থাকলে উপায় হয়। ভালো কাজে অর্থ বাধা হয়ে দাঁড়ায় না। উদ্যম থাকলে যে কোনও কাজে সাফল্য আসে সহজেই। তেমনই এক অভিনব কাজ করে দেখালো এ রাজ্যেরই এক প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা। গ্রীষ্মের ছুটির পর স্কুল খুলেছে। কিন্তু জ্বালাপোড়া গরম থেকে রেহাই মেলেনি। এই গরমে অনেক অভিভাবক ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠাচ্ছেন না। আবার অনেক পড়ুয়া বাইরে খেলে বেরালেও স্কুলে যাচ্ছে না।
তাই পড়ুয়াদের স্কুলমুখী করতে উপায় খুঁজছিলেন শিক্ষক শিক্ষিকা। সেখানেই এলো মন ভালো করা এক প্রস্তাব। তা কার্যকর করতেই কেল্লা ফতে। এখন পড়ুয়ারা আসছে আগের থেকে বেশি। ক্লাস শুরুর আগে তারা আসছে তো বটেই, ছুটির পরও যেন বাড়ি ফেরার গরজ নেই তাদের। কী এমন পদক্ষেপ নিল স্কুল কর্তৃপক্ষ? কীভাবে এক লহমায় পাল্টে গেল ছবিটা?
নিয়ম করে স্কুলে যাচ্ছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। কিন্তু আসছে না পড়ুয়ারা। এই গরমে এটাই এখন বহু প্রাথমিক স্কুলের চেনা ছবি। এই ছবিতে বদল আনতে এবার উদ্যোগী হল নদীয়ার হবিবপুরের দোহার পাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষিকারা। তাঁদের উদ্যোগে ক্লাসঘরে বসল এসি। পোড়া গরমে শরীর জুড়োতেও যদি স্কুলে আসে ছোটরা। তাহলেও কিছুটা অন্তত শেখানো যায় তাদের। এই ভাবনা থেকেই এসি বসানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। এতে ফলও মিলেছে হাতে নাতে। ঠান্ডা মেশিনের টানে অনেকেই সকাল সকাল স্কুলে হাজির হচ্ছে।
স্কুলের শিক্ষকরা জানান, এই প্রবল দাবদাহে এবার অনেক আগেই স্কুলে ছুটি পড়ে গিয়েছিল। স্কুল খোলার পরেও গরমের তীব্রতা কমেনি। বহু অভিভাবকই এই গরমে ছোটদের স্কুলে পাঠাচ্ছেন না। অনেকসময় ছোটরাও খেলে বেড়াচ্ছে, কিন্তু স্কুলে আসতে চাইছে না। এই পরিস্থিতিতেই ক্লাসঘরে এসি বসানোর চিন্তাভাবনা মাথায় আসে তাঁদের।
পড়ুয়াদের স্কুলে ফেরানো যাবে কী করে, এই নিয়ে আলোচনা চলছিল। তখনই এসি বসানোর কথা ভাবা হয়। তারপরেই পঞ্চায়েতের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। কথা বলা হয় ডিস্ট্রিক্ট ইন্সপেক্টরের সঙ্গেও। তাঁদের অনুমতি নিয়েই স্কুলের ক্লাসঘরে এসি বসানো হয়েছে।
স্কুলের কিছু ফান্ড ছিল। এসি কেনার বাকি খরচ জুগিয়েছেন শিক্ষক শিক্ষিকারাই। কিন্তু বিদ্যুতের বিল তো আসবে অনেক! সে টাকা কে দেবে? স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, “বারো মাস তো আর এসি চালাব না। এসি চলবে এক মাস। বাড়তি বিল বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নিজেদের অর্থ থেকেই মেটানো হবে।”
হবিবপুরের দোহারপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সব মিলিয়ে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ৫২। স্কুলের একটি ঘরেই চলছে ওয়ান থেকে ফাইভ পর্যন্ত ক্লাস। ঠান্ডা ঘরে বসে ক্লাস করতে মজা পাচ্ছে ছাত্র-ছাত্রীরা। তারা ক্লাসে আসছেও নিয়মিত। পড়াতে পেরে খুশি শিক্ষক শিক্ষিকারাও।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম