।। প্রথম কলকাতা ।।
Biggest Mosque in Europe: আজ আপনাদের বলব, ইউরোপের সবচেয়ে বৃহৎ মসজিদের কথা। যে মসজিদ সম্পর্কে আপনি কতটুকু জানেন, তা এই ভিডিও দেখলে প্রমাণ হয়ে যাবে। ধর্ম প্রচার নয়, ইউরোপের এই সর্ববৃহৎ মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছিল ইসলামের আদর্শ সমুন্নত করতে। এখানে সৌন্দর্য যেন কথা বলে। গোটা বিশ্বের কাছে এর আলাদাই কদর। শুরুটা হয়েছিল ২০০ মানুষ দিয়ে, আজ এখানে একসঙ্গে নামাজ পড়েন প্রায় ১২ থেকে ১৫ হাজার মানুষ। বিশেষ বিশেষ অনুষ্ঠানগুলোতে তো সংখ্যা ছাড়িয়ে যায় ৫০ হাজারেরও বেশি। এটি ইতালির রোমে অবস্থিত গ্র্যান্ড মসজিদ।
রোমের উত্তরাঞ্চলের প্যারিওলিতে অবস্থিত এই মসজিদে একই সাথে রয়েছে ইসলামিক কালচারাল সেন্টার লাইব্রেরী এবং ইসলামিক স্কুল। এখানে ধর্মীয় কার্যক্রমের পাশাপাশি নানান অনুষ্ঠান এবং সমাজ সেবামূলক তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়। শুধু তাই নয়, কখনো কখনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ক পাঠদান থেকে শুরু করে বিবাহ অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন সেমিনার এবং ইভেন্ট হতে দেখা গিয়েছে। মসজিদটি তৈরির ইতিহাস বহু বছরের। জানতে গেলে আপনাকে ফিরে তাকাতে হবে প্রায় ৯৫ বছর আগে। সময়টা তখন ১৯২৯ সাল। ইতালিতে এসেছিলেন আফগান যুবরাজ মুহাম্মদ হাসান এবং তার স্ত্রী প্রিন্সেস রাজিয়া। তাদেরই হাত ধরে এই মসজিদ প্রতিষ্ঠার প্রথম যাত্রা শুরু হয়। অর্থায়ন করে বাংলাদেশসহ প্রায় ২২টি দেশ। অবাক করার বিষয় হল, এই মসজিদের এক একটি বর্গফুটে খরচ হয়েছে প্রায় তিন হাজার মার্কিন ডলার। আর এসবের নেপথ্যে থেকে আরেকজনের নাম না করলেই নয়। তিনি হলেন তৎকালীন সৌদি বাদশাহ। ১৯৭৪ সালে তিনি ইতালিতে গিয়ে এই মসজিদ স্থাপনের আহ্বান জানান। তাঁর কথাতে সেই বছরই রোমান সিটি কাউন্সিল মসজিদের জন্য দান করেন জমি। এটা তৈরি করতে যত টাকা খরচ হয় তার ৭০ শতাংশ বহন করে সৌদি আরব। তারপর একটা দশকে এসেছে নানান বাধা বিপত্তি। ১৯৮৪ তে এসে মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হয়। ঠিক তার ১১ বছর পর অর্থাৎ ১৯৯৫ তে হয় উদ্বোধন। মসজিদটি তৈরীর সময় থেকেই বহু সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে। সেই সময় উপসাগরীয় যুদ্ধের কারণে হঠাৎ করে সৌদির অর্থায়ন বন্ধ হয়ে গেলে, পাশে দাঁড়ায় মরক্কো।
গোটা বিশ্বজুড়ে মসজিদটি নজর কাড়ে তার আন্দালুশিয়ান শৈলির জন্য। যার প্রথম তলায় রয়েছে নামাজের জন্য বিশাল পরিসর। দ্বিতীয় তলাতে রয়েছে প্রশাসনিক অফিস এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠান। তৃতীয় তলায় রয়েছে সেমিনার রুম। মোজাইক পাথরে খোদাই করা হয়েছে আরবি শিলালিপি। জানালা গুলি কাঁচের। জানালা দিয়ে যখন রোদ এসে মসজিদের মধ্যে এসে পড়ে, তখন এটি আরো বেশি সুন্দর হয়ে ওঠে। ডিজাইন করেছেন ইতালির নামকরা আর্কিটেক্ট পাওলো পরটোগেসি এবং ইরাকের আর্কিটেক্ট শামি মুসভি। মসজিদটির প্রত্যেক কোনায় রয়েছে স্থাপত্য শিল্প আর রোমান ঐতিহ্য।
https://www.facebook.com/100069378195160/posts/726470653008868/?mibextid=NTRm0r7WZyOdZZsz
এই মসজিদে বিভিন্ন দেশের ধর্মপ্রাণ মানুষরা বিশেষ অতিথি। বলা হয়ে থাকে, কোন ধর্মের প্রচারের জন্য নয়, এই মসজিদ গড়ে তোলা হয়েছে মানুষের মনে সৌন্দর্য চেতনা বৃদ্ধি করতে। আর সত্যিই, মসজিদটা দেখতে অপরূপ। যার বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ এখানে ছুটে আসেন। ইউরোপ সহ অন্যান্য মহাদেশের মানুষের কাছে এর আলাদা কদর। এটাই ইতালিতে সরকারি অনুমোদন প্রাপ্ত একমাত্র মসজিদ। আর হ্যাঁ প্রসঙ্গত বলে রাখি, ২০১৯ সাল নাগাদ একটা খবর খুব হাইলাইটেড হয়। চেচনিয়া দাবি করে, ইউরোপের সর্ববৃহৎ মসজিদ উদ্বোধন হয়েছে চেচনিয়াতে। নিঃসন্দেহে এটিও একটা বৃহৎ মসজিদ। নির্মাণে ব্যবহার করা হয়েছে মার্বেল পাথর এবং সোনা। নির্মাণ করতে সময় লেগেছে প্রায় সাত বছর। মসজিদের শোভা বর্ধন করে বাহারি ফুল এবং ঝরনা। এক কথায় দেখতে অসাধারণ। কিন্তু আয়তনের দিক থেকে বিচার করলে, এগিয়ে ইতালির গ্র্যান্ড মসজিদ। চেচনিয়ার মসজিদটি প্রায় ৯৭০০ বর্গমিটার জমির উপর তৈরি, আর ইতালির মসজিদটির এরিয়া প্রায় ৩০ হাজার বর্গমিটার। এমনটাই বলছে উইকিপিডিয়ার তথ্য।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম