।। প্রথম কলকাতা ।।
Bangladesh: এই বাংলাদেশকে চিনতে পারবেন না! একটা প্যাটার্নেই বাড়ছে ভয়। মাটি ফেটে চৌচির হবে? কুঁকড়ে যাবে গাছের পাতা? পৃথিবী তেঁতে উঠছে, এল নিনোর কতটা ভয়াবহ এফেক্ট ওপার বাংলায়? এবার কি খরার মুখোমুখি বাংলাদেশ? ডেঙ্গি থেকে সাবধান। বাস্তুহারা হতে হবে এতো এতো মানুষকে? যা, দুঃস্বপ্নেও ভাবতে পারছেন না! সেটাই ঘটতে যাচ্ছে ওপার বাংলার বুকে? ২৪ এর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কি করছে হাসিনা সরকার? বন্যা খরায় জর্জরিত হয়ে যাবে বাংলাদেশ? জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা বলছেন খরা পরিস্থিতি ফিরছে। চলতি বছর বাংলাদেশ যে তাপমাত্রার কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে গেছে, আগামী বছর তা আরও ভয়াবহ হওয়ার হাই চান্স রয়েছে।
হতে পারে খরা, এমনকি প্রাণীবাহিত রোগ বাড়ার আশঙ্কা থাকছে। মশার উপদ্রব বাড়বে বহুগুণ, এখন থেকেই পদক্ষেপ না করলে পরিস্থিতি মহাবিপর্যয়ের দিকে এগিয়ে যেতে পারে ধারণা বিশেষজ্ঞদের। শুধু তাই নয়, এল নিনোর প্রভাবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বাড়বে। তাই বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চল খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা সহ বিভিন্ন এলাকায় বাস্তুহারা মানুষের সংখ্যা বাড়বে। জানলে অবাক হবেন ২০৫০ সালে বাংলাদেশে বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা হবে প্রায় দেড় কোটি। প্রায় দু কোটি শিশুর জীবন ঝুঁকিতে রয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে মানবপাচারের মতো ঘটনা বাড়ার শঙ্কাও বাড়ছে। তাছাড়া, বাংলাদেশের কৃষিতেও এল নিনোর প্রভাব অলরেডি পড়তে শুরু করেছে। বাংলাদেশের গ্রীষ্মকালীন সবজি চাষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পাট চাষও এফেক্টেড হয়েছে। কম বৃষ্টি ও তীব্র তাপমাত্রার কারণে গাছের পাতা কুঁকড়ে গেছে, ফল পাকার আগেই ঝড়ে পড়েছে।
কম বৃষ্টিপাত আউশ ফসলেও প্রভাব ফেলেছে। নিয়মিত বৃষ্টিপাতের অভাবে এ বছর কীটপতঙ্গের আক্রমণও বেড়েছে। বাংলাদেশের কৃষি বিশেষজ্ঞরা বুঝতে পারছেন, জলবায়ু সহিষ্ণু ধান উদ্ভাবন করতে না পারলে সমস্যায় পড়তে হবে। বিশেষ করে ঠান্ডা আবহাওয়ায় উৎপাদিত গমের ক্ষেত্রে সমস্যা বাড়বে। বুঝতে হবে, বৈশ্বিক উষ্ণতার পাশাপাশি এল নিনো ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়। এর প্রভাব মারাত্মক। এল নিনো মূলত খরা পরিস্থিতি, শুষ্ক মৌসুম, যখন স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে কম বৃষ্টি হয় এবং বন্যাও কম হয়, এই সময় তাপমাত্রা অতিরিক্ত বেড়ে যায়। সাধারণত দুই থেকে সাত বছর পরপর এল নিনো পরিস্থিতি তৈরি হয়। যা ১৮ মাসের বেশি সময় পর্যন্ত স্থায়ী হয়। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন বর্তমানে এল নিনোর প্রভাবে পেরু, ইকুয়েডর, চিলি সহ উত্তর প্রশান্ত মহাসাগর এলাকায় প্রচুর বৃষ্টিপাত, ঘূর্ণিঝড়, বন্যা ও উপকূলে ভাঙনের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। এশিয়া ও অস্ট্রেলিয়ার বহু জায়গায় বৃষ্টিপাত কমে আসবে, দেখা দেবে শুষ্কতা।
খরা ও দাবানলের মতো পরিস্থিতি তৈরি হবে বাংলাদেশ ভারত সহ আশপাশের দেশগুলোতে। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে, জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব মোকাবিলায় বাংলাদেশ সরকার ২০২৩ সালে জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা নিয়ে কাজ শুরু করেছে। ‘জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে অভিযোজন’ বলতে পরিবেশ, সমাজ, জনস্বাস্থ্য, অর্থনীতিতে বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ফলে সম্ভাব্য ক্ষতিকর প্রভাবগুলো কমিয়ে আনতে সরকার এবং সাধারণ মানুষ যেসব পদক্ষেপ নিয়ে থাকে তা বোঝায়। এই পরিকল্পনায় বাংলাদেশকে ১১টি ভিন্ন ভিন্ন জলবায়ু বিপদাপন্ন এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করে তা মোকাবিলায় ১১৩টি উদ্যোগের কথা বলা হয়েছে। অভিযোজন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা গেলে বিভিন্ন ধরনের দুর্যোগ যেমন মোকাবিলা করা যাবে, পাশাপাশি প্রায় ১.১ মিলিয়ন হেক্টর জমি জলোচ্ছ্বাস, বন্যা, সমুদ্রের উচ্চতা বৃদ্ধি, লবণাক্ততা থেকে রক্ষা পাবে।
তাছাড়া, প্রতি বছর বিশ্বনেতাদের সাথে বাংলাদেশ সরকার জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক আলোচনায় অংশ নিয়ে বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরছে। অর্থাৎ বাংলাদেশের হাতে পরিকল্পনা আছে, এবার শুধু সেটা বাস্তবায়নের পালা। নাহলে, এভাবে চলতে থাকলে পৃথিবী বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখে পড়বে। শুধু বাংলাদেশ নয়, সবুজায়ন নষ্ট করার ফল ভুগতে হবে গোটা বিশ্বকে।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম