।। প্রথম কলকাতা ।।
পুতিনের কালকুঠুরিতে আটকা পড়লেন জেলেনেস্কি? ইউক্রেন যুক্তরাষ্ট্রের মাঝে লোহার পাঁচিল তুললো হোয়াইট হাউস। সেফ জোনে ঢুকে গেলেন বাইডেন। কৃষ্ণ সাগরের জলের তোড়ে ভেসে যাবে ইউক্রেন? পুতিনের ছকে হামাস ইসরায়েল যুদ্ধের ছায়া? ১৮০ ডিগ্রী অ্যাঙ্গেলে ঘুরে গেল ওয়াশিংটন। রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধে মোড় ঘোরানো শীত। অর্থভাণ্ডার শূণ্য, নেই অস্ত্র সৈন্য। নরকের দুয়ারে দাঁড়িয়ে ইউক্রেন। কৃষ্ণ সাগরে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ইউক্রেন। শীতের ছক ভাঙা খেলার টেকনিকে রাশিয়াকে টেক্কা দিতে মরিয়া ভলোদিমির জেলেনেস্কি। আর এই মোক্ষম সময়েই মেরুদণ্ডে ঘা দিল যুক্তরাষ্ট্র। রণক্ষেত্রে মাঝপথে জেলেনস্কির হাত ছাড়লেন বাইডেন। তাহলে কি, রাশিয়ার আক্রমণের বিরুদ্ধে ইউক্রেনকে আর সমর্থন করবেনা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র?
হোয়াইট হাউজের বাজেট ডিরেক্টরের কথাতেই ঘুম ছুটে গেল জেলেনেস্কির। দেড় বছর পেরিয়ে গেলেও চলছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। আমেরিকার অস্ত্রবলে রাশিয়াকে কড়া ডোজ দিয়েছে কিয়েভ কিন্তু এবার ভাঁড়ারে টান পড়তে শুরু করেছে ওয়াশিংটনের। অনির্দিষ্ট কালের জন্য ইউক্রেনকে মদত জুগিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়, জানিয়ে দিল হোয়াইট হাউস। যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্তে কোন অন্ধকারে ডুবতে পারে গোটা ইউক্রেন আন্দাজ করতে পারছেন তো? পুতিনের জয় এবার রুখতে পারলে হয়। কঠিন শীত জেলেনেস্কির দেশে। যুদ্ধে ইউক্রেনকে সাহায্য করার জন্য সময় ও অর্থ দুই-ই ফুরিয়ে আসছে আমেরিকার। কংগ্রেসের পদক্ষেপ ছাড়া চলতি বছরের শেষে ইউক্রেনকে অস্ত্র প্রদান করার মতো অর্থ ফুরিয়ে আসবে। আমেরিকার সামরিক বাহিনীর ভাণ্ডার থেকেও অস্ত্র পাঠানো যাবে না।
আমাদের টাকা প্রায় শেষ হোয়াইট হাউসের বাজেট ডিরেক্টর শালান্ডা ইয়ং, হাউসের স্পিকার তথা রিপাবলিকান দলের সদস্য মাইক জনসন-সহ কংগ্রেসের অন্যান্য সদস্যদের চিঠি লিখে একথা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন। গোটা বিশ্ব এটা জানে পুতিনের বিরুদ্ধে জেলে নেস্কির লড়াইয়ের সবথেকে বড় সাপোর্ট যুক্তরাষ্ট্র। পশ্চিমারা এই যুদ্ধে যেমন অগাধ টাকা ঢেলেছে তেমনি পাঠিয়েছে ভুরি ভুরি অস্ত্র। সেই যুক্তরাষ্ট্র মাঝপথে হাত ছাড়লে ইউক্রেনের বিপদ আটকানো কঠিন হবে। তাই, ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে সিঁদুরে মেঘ দেখছে যুক্তরাষ্ট্রও। আর, বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে কিয়েভের আর্থিক অনুদানে কাটছাঁট করলে, সামরিক সাহায্য না করলে যুদ্ধের ময়দানে রাশিয়ার জয়ের সম্ভাবনা বাড়বে কিন্তু রাতারাতি এতটা করুন অবস্থা হলো কি করে? যুক্তরাষ্ট্রের মতো একটা দেশের।
ওয়াকিবহাল মহল বলছে, ইউক্রেনকে বেহিসাব সামরিক সহায়তার দিয়ে গেছে আমেরিকা, ফলে দেশটির অর্থনীতিতে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। বিশেষ করে এই সহায়তা নিয়ে আমেরিকার অন্দরেই চরম অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। এমনিতেই মুদ্রাস্ফীতিতে জেরবার বাইডেনের দেশ। এই পরিস্থিতিতে রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধে অতিরিক্ত অর্থসাহায্য বন্ধের পক্ষেই সওয়াল করছেন সে দেশের বহু জনপ্রতিনিধি। এর মধ্যে শুরু হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যে হামাস ইসরাইল যুদ্ধ। এই যুদ্ধেও ইসরাইলকে পেছন থেকে ফুল সাপোর্ট করছে যুক্তরাষ্ট্র। তাই গত অক্টোবর মাসে কংগ্রেসের কাছে ১০৬ বিলিয়ন ডলারের তহবিলের অনুরোধ জানায় জো বাইডেন প্রশাসন। সীমান্ত সুরক্ষা, ইউক্রেন ও ইজরায়েলকে সাহায্য করার লক্ষ্যে ওই অর্থ চাওয়া হয়েছিল কিন্তু, তারপরেও সমস্যা মেটেনি। আর যুদ্ধ বিশেষজ্ঞদের মতে, আগামী বছর টেনে নিয়ে যাওয়ার মতো সমস্যা এটা নয়। রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ইউক্রেনকে যুদ্ধে সাহায্য করার সময় এখনই। কংগ্রেসের কাজ করার সময় এসেছে।
আর, ইউক্রেনও মরিয়া হয়ে আরও বিদেশি সাহায্যের জন্য চাপ দিচ্ছে। কারণ রুশ বাহিনী কিয়েভের বহুমুখী পাল্টা আক্রমণ বন্ধ রেখে পূর্ব দিকে আক্রমণ বাড়িয়েছে। বাড়াচ্ছে সৈন্য সংখ্যা। নামাচ্ছে ট্যাঙ্ক। হাজারো চ্যালেঞ্জ সত্বেও ফ্রন্টলাইনে দাঁড়িয়ে লড়ছে জেলেনেস্কির সেনারা। আর এই ক্রুশিয়াল টাইমেই আমেরিকা শোনালো দুঃসংবাদ। যার ফলে জেলেনেস্কির দেশ যে সামনের দিনগুলোতে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে সেটা নতুন করে বলে বোঝানোর দরকার হয় না। পরিস্থিতি কোন দিকে মন নেবে এখন তার পুরোটাই নির্ভর করছে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পরিস্থিতির উপর।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম