।। প্রথম কলকাতা ।।
মন্দ নয়, সে পাত্র ভালো। তাকে দেখলেই যেন মেয়ের বাবারা হামলে পড়ে। মদ সিগারেট জুয়ার নেশা তার নেই।রয়েছে একটাই নেশা। তা হল, একের পর এক বিয়ে করার। বিয়ে করাই জীবনের একমাত্র লক্ষ্য তার। আপনি অবাক হচ্ছেন? তাহলে জেনে রাখুন থানা পুলিশ, গণধোলাই- সব ওষুধ ফেল। সবই তার গা সওয়া হয়ে গিয়েছে। ইতিমধ্যেই সে চার চারটি বিয়ে সেড়ে ফেলেছে।তারা তো রয়েছে চোখের সামনেই। বাবা মায়ের সন্দেহ আরও দুটি বউ রয়েছে লুকোনো। এরপর আরও দুটি বিয়ের কথাবার্তা চালাচ্ছে সে। তাহলেই ভাবুন! অনেকের অনেক রকম নেশা থাকে। কারো গাড়ির নেশা। কারো নেশা শপিংয়ের। কিন্তু বিয়ের নেশা কখনও শুনেছেন!লোকে বলে, বিয়ের বাজারে নাকি সরকারি চাকুরে পাত্রের বিশাল দাম! বেসরকারি চাকরি হলে একটু হলেও ভ্রু কোঁচকান মেয়ের বাবারা। আর বেকার ছেলে? নৈব নৈব চ!
মুর্শিদাবাদের রানিনগরের এই যুবকের ব্যাপারটা একেবারে আলাদা। ইতিমধ্যেই ৪ খানা বিয়ে করে ফেলেছে সে, আরও ২টো করার মুখে। তার সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার জন্য নাকি মেয়েদের বাবারা উন্মুখ। আর পরের পর বিয়ে করতে আরও বেশি মুখিয়ে পাত্র। বাড়ি থেকে বাধা পেলেই নাকি সে সকলকে কেটে ফেলার হুমকি দেয়।উপার্জন? তেমন নেই বললেই চলে। বাবার ভরসায় চলছে সব কিছু। অবস্থা এমনই যে নিরুপায় পাত্রের বাবা সাংবাদিক সম্মেলন করলেন। হ্যাঁ, ঠিকই শুনেছেন।উপায়ন্তর না দেখে সংবাদ মাধ্যমকে ডাকতে বাধ্য হলেন তিনি। নিজেরই ছেলের কীর্তির কথা সকলকে জানিয়ে অনুরোধ করলেন, কেউ যেন তাঁর ছেলেকে আর বিয়ে না করেন। অবিশ্বাস্য লাগলেও এমনটাই সত্যি। আপনি হাসছেন? একবার এই সৎপাত্রের বাবার অবস্হা ভাবুন!নিজের সংসার টানার পাশাপাশি এখন একের পর এক বউমার ভরণ পোষণের দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে তাঁকে।রানিনগরের এই বিয়ে-পাগল যুবকের বাবা সম্প্রতি তাঁর স্ত্রী ও ছোট ছেলেকে পাশে বসিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করলেন। সেখানেই সমস্ত ঘটনা জানালেন তিনি।
বৃদ্ধ জানিয়েছেন, তাঁর বড় ছেলের মদ-সিগারেট-জুয়ার নেশা নেই। তার একটাই নেশা, বিয়ে করার। ইতিমধ্যেই চারখানা বিয়ে করে ফেলেছে সে। তাতেও আশ মিটছে না।আরও ২টো বিয়ে করবে করবে করছে। ছেলে এখন ৩ জন বৌকে ছেড়ে চতুর্থ স্ত্রীকে নিয়ে থাকে। অসহায় বৃদ্ধ জানিয়েছেন, তাঁর বড় ছেলে কোনও কাজ করে না, শুধুই বিয়ে করে। ক্রমবর্ধমান বৌমাদের সংসার চালানোর খরচ যোগাতে হয় তাঁকেই। ছেলের অত্যাচারে রাতের ঘুম উড়েছে তাঁদের। বিয়ে করতে বারণ করলেই তেড়ে আসে।সকলকে কেটে ফেলার হুমকি দেয়। তার দাবি, বিয়ে করা- না করা তার এবং বিবাহেচ্ছুক পাত্রীর ব্যক্তিগত বিষয়।লাগাতার প্রাণনাশের হুমকির মুখে আতঙ্কে ঘুমোতে পারছেন না বৃদ্ধ। ৫ বছর আগে এই ঘটনা নিয়েই পুলিশ নাকি ধরেছিল ছেলেকে। তবে ছাড়াও পেয়ে যায় সে। শুধু তাই নয়, ফেসবুকে ক্ষিপ্ত হয়ে নানা রকম পোস্ট করতে শুরু করে ছেলে। বাধ্য হয়ে পুলিশে নালিশ করেন বাবা।এলাকার জনপ্রতিনিধিদেরও দ্বারস্থ হয়েছেন। এমনকি, এই নিয়ে পাড়া-প্রতিবেশীদের সঙ্গেও নিত্য অশান্তি লেগে রয়েছে।
আগে অতিষ্ঠ বাবা একবার বিরক্ত হয়ে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছিলেন বড় ছেলেকে। কিন্তু লাভের লাভ কিছুই হয়নি। ফিরে এসে আবার বিয়ে করতে শুরু করে সে।কিছুদিন আগে পাড়ার লোকজন একবার তাকে ধরে গণপিটুনি দিয়েছিলেন। কিন্তু সবই বিফলে গেছে। বৃদ্ধের সন্দেহ, হিসেব মতো এখনও পর্যন্ত তিনি ৪ জন বৌমার খোঁজ পেলেও তাঁর আরও ‘লুকোনো’ পুত্রবধূ রয়েছে। সেই সংখ্যা যাতে আরও না বাড়ে, তার জন্য বাধ্য হয়ে সাংবাদিক বৈঠক ডাকেন তিনি। সেখানেই ফাঁস করেন বড় ছেলের কীর্তির কথা। ছেলেকে বাগে আনা যাচ্ছে না। তাই তাঁর শেষ আশা, একমাত্র লোক জানাজানি হলে তবেই হয়তো পাত্রীদের বাবার কান অবধি পৌঁছাবে তাঁর গুণধর ছেলের কথা। সব জেনেশুনেও নিশ্চয়ই এমন ছেলের হাতে মেয়েদের পাত্রস্থ করতে চাইবেন না বাবা-মা, সেই ভরসাতেই আছেন বৃদ্ধ।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম