কোনটা খিস্তি? মোদি মমতার কাছে প্রশ্ন অধীরের

।। ময়ুখ বসু ।।
বাংলার মাটিতে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দিয়ে এখন নিজেই গণতন্ত্র রক্ষার লড়াইতে নেমেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর থেকে আর হাস্যকর বিষয় কী হতে পারে? এভাবেই এবারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করলেন কংগ্রেস নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী। অধীর বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে নিজে দায়িত্ব নিয়ে বাংলার গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছিলেন। রাজ্যের ৩৪ শতাংশ আসনে গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে সাধারণ মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগের ক্ষমতা কেড়ে নিয়েছিলেন তিনি।
ওই সময় ২০ হাজার আসনে বিনা লড়াইয়ে জিতে গিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। একদিনের নির্বাচনে ৮০ জন মারা গিয়েছিলেন। এরপরেও সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গণতন্ত্র রক্ষার কথা বলছেন! যা সত্যিই বিস্ময়ের। তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করে বলেন, ভোটের বাজারে বেঁচে থাকতে তিনি বাংলায় দাঁড়িয়ে বলছেন, আমি একটা সময় কংগ্রেস করতাম ভাবতে লজ্জা লাগে, অথচ সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই আবার সোনিয়া গান্ধীকে চিঠি লিখে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সাহায্য প্রার্থনা করছেন। তিনি আসলে কোন নীতির ওপর দাঁড়িয়ে চলতে চাইছেন তা বোঝাই দুস্কর হয়ে পড়েছে মানুষের কাছে।
একইসঙ্গে অধীর চৌধুরী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাষণকে একহাত নিয়ে বলেন, নির্বাচনের ময়দানে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী যে ধরনের ভাষা ব্যবহার করছেন তা ভাবতেও অবাক লাগে আমাদের। দুর্বোধ্য সব ভাষা সাধারণ মানুষ বুঝতে পারছেন না। উল্লেখ্য, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্যা ক্যা, ছ্যা, ছ্যা, হোদল কুতকুত, গাড্ডা চাড্ডা, জাতীয় ভাষা বারবার সমালোচনায় উঠে এসেছে। আর সেই ভাষাকেই কটাক্ষ করে অধীর বলেন, কোনটি ভালো শব্দ আর কোনটি খিস্তি বোঝা দায় হয়ে উঠেছে।
মানুষ বুঝতে পারছে না কোনটা কি ভাষা! তাই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন, ভোট প্রচারের ময়দানে খিস্তি বন্ধ করে ভাষার দিকে সংযত হোন। একইসঙ্গে অধীর চৌধুরী মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উদ্দেশেও আবেদন জানিয়ে বলেন, ভাষণে যে সমস্ত শব্দ ব্যাবহার করা হচ্ছে তা নিয়ে বিড়ম্বনায় বাংলার মানুষ। কোন শব্দ কীসের পরিপূরক তা বোঝা দায় হয়ে উঠেছে। তাই বলব, খিস্তি জাতীয় শব্দ বন্ধ করে ভাষা প্রয়োগে সংযত হোন।
উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পদ্ম ছাপ শব্দটি উচ্চারণের কারণে অনেক ক্ষেত্রেই ভিন্ন উচ্চারণ ভঙ্গি হয়ে ধরা পড়ছে বাংলার মানুষের কানে।যা নিয়ে সমালোচনার পারদ চড়েছে বাংলার মানুষের মধ্যেও। তিনি প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে কটাক্ষ করে বলেন, দেশের কাজ বাজ ফেলে যেভাবে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলায় ঝাঁপিয়ে পড়েছেন তাতে তো মনে হচ্ছে বাংলায় এসে তাঁরা স্ট্রিট কর্নারও করতে পারেন। ছত্রিশগড়ে সেনা জওয়ান মারা যাচ্ছে সেদিকেও খেয়াল নেই তাঁদের।
অধীর চৌধুরী দাবি করেন, বিজেপি এবং তৃণমূলের এই সমস্ত কান্ড কারখানা দেখে বাংলার মানুষ ধীরে ধীরে সংযুক্ত মোর্চার প্রতি আস্থা রাখছেন। দিন যতো এগোচ্ছে ততোই সংযুক্ত মোর্চার পাশে বাংলার সাধারণ মানুষ নিজেদের তাগিদেই এসে দাঁড়াচ্ছেন। আজ সংযুক্ত মোর্চা এগোচ্ছে আর শক্তি হারাচ্ছে তৃণমূল এবং বিজেপি।
পিসিসি