বাংলায় নতুন করে তৃণমূলের দুশ্চিন্তা বাড়াল মিম, সাত আসনে প্রার্থী ঘোষণা করলো তারা

।। ময়ুখ বসু ।।
বাংলার ভোটযুদ্ধে বিজেপি-তৃণমূলের টানটান লড়াইয়ের মধ্যে এবারে তৃণমূলের চিন্তা নতুন করে বাড়ালো অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিনি (মিম)। বাংলার মাটিতে কার্যত ভাঙা সংগঠন নিয়ে প্রার্থী ঘোষণা করল মিম প্রধান আসাদুদ্দিন ওয়েইসি। তারা এবারে এককভাবেই বাংলার মাটিতে লড়াই করতে চলেছে। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বাংলায় সাতটি বিধানসভা কেন্দ্র থেকে লড়তে চলেছে মিম। সেইলক্ষ্যে এদিন রাজ্যে তৃতীয় দফা ভোট চলাকালীন সময়েই প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করলেন মিম সুপ্রিমো আসাদুদ্দিন ওয়েইসি।
বাংলার উত্তর দিনাজপুর জেলার একটি আসন থেকে লড়ছে মিম। মুর্শিদাবাদের তিনটি, মালদহের দুটি এবং পশ্চিম বর্ধমানের একটি আসন থেকে লড়াই করবে তারা। বাংলায় মূলত যে আসনগুলিতে তারা লড়াই করতে চলেছে সেগুলি একদিকে কংগ্রেসের শক্তঘাটি যেমন, তেমনি অন্যদিকে, আসনগুলিতে নির্ণায়ক শক্তির ভূমিকায় রয়েছেন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ। গত এক বছরের বেশী সময় ধরে এই কেন্দ্রগুলিতে একটু একটু করে শক্তি বাড়িয়েছে মিম। বিহারে ভালো ফল করার পরেই এবারে বাংলাকে টার্গেটে নিয়েছে মিম।
উত্তর দিনাজপুরের ইটাহার কেন্দ্র থেকে মিমের প্রার্থী হয়েছেন মোফাক্কারুল ইসলাম। মুর্শিদাবাদের জলঙ্গি কেন্দ্র থেকে লড়বেন অলসুকুয়াত জামান। সাগরদিঘী কেন্দ্র থেকে লড়বেন নুরে মেহেবুব আলম। ভরতপুর কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হয়েছেন সাহহাদ হোসেন। মালদহের মালতীপুর কেন্দ্র থেকে মিমের প্রার্থী হয়েছেন মৌলানা মতিউর রহমান। রতুয়া থেকে প্রার্থী হয়েছেন সইদুর রহমান। আসানসোল উত্তর কেন্দ্র থেকে মিমের প্রার্থী হয়েছেন রাজ্যে মিমের অন্যতম মুখ দানেশ আজিজ।
পরিসংখ্যান মতে, বাংলায় প্রায় ৩০ শতাংশ সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্ক। এই ভোটব্যাঙ্ক এতোদিন ধরে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের ছিলো বলেই মনে করেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ। এবারে সেখানে এই ভোটব্যাঙ্ককে টার্গেটে রেখে সক্রিয় রাজনীতিতে নেমেছে ফুরফ্যরা শরিফের পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকির দল ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট। রাজনৈতিক মহল মনে করছেন, এবারে আব্বাস সিদ্দিকির পর সেই সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্কে চিড় আরও বাড়তে চলেছে মিম।
আসাদুদ্দিন ওয়েইসির হাত ধরে বাংলার সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্ক ত্রিধারায় বইতে চলেছে। উল্লেখ্য, বাংলায় ২৯৪ টি আসনের মধ্যে ৭৫ থেকে ৮০ টি বিধানসভা আসনে মুসলিম ভোট জয় নির্ধারনকারী ফ্যাক্টর হিসাবে পরিগণিত হয়ে থাকে। সেখানে দাঁড়িয়ে এবারে যদি সেই সংখ্যালঘু ভোট তিন ভাগে হয়ে যায় (মিম, আইএসএফ, তৃণমূল) তাহলে সার্বিকভাবে বিজেপির লাভ হবে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক মহল।
পিসিসি