ছত্রিশগড়ের রেগদগট্টা গ্রামে অজানা রোগে ৬১ জনের মৃত্যু, উদ্বিগ্ন প্রশাসন

।। প্রথম কলকাতা ।।
ছত্রিশগড়ের সুকমা জেলার এক প্রত্যন্ত গ্রাম হল কোন্তা উন্নয়ন ব্লকে অবস্থিত রেগদগট্টা গ্রাম। সূত্রের খবর, এক অজানা রোগে এই গ্রামের ৬১ জন বাসিন্দার মৃত্যুর খবর পাওয়া যাচ্ছে। জেলা কর্তৃপক্ষের কাছে এই সমস্যার কথা জানালেন গ্রামের বাসিন্দারা। গ্রামবাসীদের কাছ থেকে মৃত্যুর কথা জানবার পরেই, জেলা কর্তৃপক্ষ বিষয়টির অনুসন্ধানে নেমেছে।জেলা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিষয়টি জানতে পর্যবেক্ষণের উদ্দেশ্যে সেখানে একটি বিশেষজ্ঞ দল পাঠানো হবে। ৮ ই আগস্ট বিশেষজ্ঞ দল যাবে তদন্ত করতে গ্রামে। এই গ্রামের মোট জনসংখ্যা ১ হাজারের কিছুটা বেশি। এই গ্রামে ১৩০ টি পরিবারের বসবাস।
গত ২৭ সে জুলাই গ্রামবাসীরা সুকমার জেলা কালেক্টরের কাছে একটি চিঠি দিয়েছেন। যে চিঠিতে তারা জানিয়েছেন, যুবক ও মহিলা সহ ৬১ জন গ্রামবাসীর মৃত্যু ঘটেছে ২০২০ সাল থেকে শুরু করে। যাদের হাতে ও পায়ে ফোলার লক্ষণ দেখা গেছে। গ্রামবাসীদের অনুরোধ, বিষয়টির তদন্ত করতে দ্রুত চিকিৎসকদের একটি দল গ্রামে পাঠানো হোকইতিমধ্যেই স্বাস্থ্য কর্মীদের একটি দল ও কিছু বিশেষজ্ঞ গ্রামে গেলেন। এ প্রসঙ্গে সুকমার কালেক্টর হরিশ এস জানান, প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে গত তিন বছরে গ্রামের ৪৭ জন লোকের মৃত্যু হয়েছে। তবে, একই কারণে সকলের মৃত্যু ঘটেনি। মৃতদের কারো কারো শরীর ফুলে গিয়েছিল।
আরো পড়ুন : আর কয়েক ঘন্টার অপেক্ষা, তারপরেই জানা যাবে উপরাষ্ট্রপতির মসনদে কে?
এরপর জলের উৎসের নমুনা সংগ্রহ করে তার পরীক্ষা করা হয়েছে। তার রিপোর্টে পাওয়া যাচ্ছে, দুটি ক্ষেত্রে জলে ফ্লোরাইডের মাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি ছিল। আর কিছু ক্ষেত্রে লৌহের পরিমাণ বেশি ছিল তবে, নিশ্চিত করে বলা যায় না ফ্লোরাইডের কারণে মৃত্যু ঘটেছে। কারণ উচ্চ ফ্লোরাইড বহনকারী জল পান করলে সেক্ষেত্রে হাড়ের সমস্যা দেখা দিতে পারে। কিন্তু এই ধরনের কোন উপসর্গ গ্রামবাসীদের দেখা যায়নি। আবার উচ্চ লোহাযুক্ত জল পান করলেও তা থেকে মৃত্যুর ঘটনা দেখা যায় না।
কালেক্টর হরিশ এস জানাচ্ছেন, যে সমস্ত স্বাস্থ্য আধিকারিক গ্রাম পরিদর্শন করেছিলেন তারা গ্রামবাসীদের উপর মেডিকেল টেস্ট করেছিলেন। সে সময় ৪১ জনের শরীর ফুলে উঠেছিল। যারা কিডনি সংক্রান্ত সমস্যায় ভুগছেন বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই পরীক্ষায় দেখা গেছে শরীরে ইউরিক অ্যাসিড ও ক্রিয়েটিটিনের মাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় অনেকটাই বেড়ে গিয়েছিল। তবে এর কারণে মৃত্যু ঘটে না। এরপরই তিনি জানান, পরিবেশগত কারণ নিয়ে বিশদে গবেষণার জন্য ৮ ই অগস্ট বিশেষজ্ঞদের একটি দল সেখানে পাঠানো হবে।
জেলার প্রধান চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য আধিকারিক যশবন্ত ধ্রুব জানান, প্রাথমিক তদন্তে দেখা যাচ্ছে, কিডনি, বার্ধক্যের সমস্যা, ম্যালেরিয়া সহ একাধিক কারণে গ্রামে এবছর ১৫ জনের মৃত্যু ঘটেছে। পরীক্ষা করে কুড়িটি জলের উৎসের মধ্যে দুটিতে ফ্লোরাইডের পরিমাণ বেশি পাওয়া গেছে। কিছু গ্রামবাসীর শরীরে দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগের হালকা লক্ষণ পাওয়া গেছে। বিষয়টি নিয়ে আরো পরীক্ষা চলছে।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম