অতিরিক্ত জিম কিংবা ডায়েট হার্টের জন্য কতটা উপকারী? জানালেন ড. দেবী শেঠি

।। প্রথম কলকাতা ।।
বর্তমানে হু হু করে বাড়ছে হৃদরোগের সমস্যা। বিশেষ করে করোনার পর বহু মানুষ নিজেদের হৃদযন্ত্র নিয়ে বেজায় চিন্তিত। নিজের হার্ট ভালো রাখতে কতটা ভরসা রাখবেন খাবারের তালিকা থেকে শুরু করে জিম কিংবা শারীরিক কসরতে? আদৌ কি এগুলির প্রয়োজন রয়েছে? একজন সদ্যজাত শিশুর হৃদপিণ্ড সঠিকভাবে কাজ করছে কিনা কীভাবে বুঝবেন? এই সব কিছু উত্তর রইল এই প্রতিবেদনে। আসলে হার্ট ভালো রাখতে প্রয়োজন সুষম খাদ্য, হালকা শরীর চর্চা আর একটু নিয়ম মেনে চলা।
এমনটাই মনে করেন ভারতের বিখ্যাত কার্ডিওলজিস্ট ড. দেবী প্রসাদ শেঠি। বিশদে জানুন তাঁর মতামত।ড. দেবী প্রসাদ শেঠি, যাঁর নাম এক ডাকে ভারতবর্ষের বেশিরভাগ মানুষ চেনেন। এমনকি বিদেশেও তাঁর যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। তিনি হলেন ভারতের অন্যতম প্রোথিতযশা একজন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ। বহু মানুষের কাছে তিনি ভগমানের সমান। তিনি নাকি জাদু জানেন, তাঁর হাতের ছোঁয়ায় বহু মানুষ প্রাণ ফিরে পেয়েছেন। ন্যূনতম খরচে উন্নত মানের চিকিৎসা প্রদানের জন্য তিনি পেয়েছেন পদ্মভূষণ সম্মান।
এক সময় ছিলেন ব্যাকবেঞ্চার স্টুডেন্ট, অথচ বর্তমানে তিনি বিশ্বের অন্যতম একজন হার্ট স্পেশালিস্ট। সারা ভারতবর্ষে জুড়ে রয়েছে নারায়না হেলথের প্রায় ২৬ টি শাখা, যার মধ্যে একটি রয়েছে বিদেশের মাটিতে। এছাড়াও বাংলাদেশে নতুন শাখা খোলার পরিকল্পনা চলছে। এই নারায়না হেলথের চেয়ারম্যান হলেন ড. দেবী শেঠি। যাঁর কাছে চিকিৎসা পাওয়ার জন্য বহু দূর দুরান্ত থেকে রোগীরা ছুটে আসেন। তিনি প্রায় ৩৫ বছর ধরে ১৫ হাজারের বেশি হার্ট অপারেশন সঞ্চালনা করেছেন, যার মধ্যে রয়েছে প্রায় ৫ হাজারের বেশি শিশু।
জিম কিংবা অতিরিক্ত শারীরিক কসরত হার্টের জন্য কতটা ভালো?
সাধারণত শরীরের পক্ষে জিম, ডায়েট, অতিরিক্ত পরিমাণে পরিশ্রম একেবারেই ভালো নয়। বর্তমানে তরুণ প্রজন্মের বিশাল একটা অংশ শারীরিক পরীক্ষার ছাড়াই অতিরিক্ত শারীরিক কসরত করেন। যার ফলাফল মারাত্মক হতে পারে। এর কারণে বেড়ে যায় হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি। অনেকের আবার অজানা হৃদরোগ থাকে। পরবর্তীকালে সেই থেকে নানান সমস্যা দেখা দিতে পারে। তবে দীর্ঘমেয়াদি ফল পাওয়া যায় দ্রুত হাটা কিংবা হালকা ব্যায়ামে। অনেকেই ভারী ওজন তোলেন কিংবা ট্রেড মিলে বহুক্ষণ সময় ধরে দৌড়ান যা শরীরের খুব একটা উপকারে আসে না।
হার্ট ভালো রাখতে কেমন খাবার খাবেন?
বাইরের খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। হাতের কাছে রাখতে হবে সুষম খাদ্য, সেটি আমিষ হতে পারে কিংবা নিরামিষ। অতিরিক্ত পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট শরীরের জন্য ভালো নয়, তাই নিয়ন্ত্রণে রাখবেন ভাত, আটা, ময়দা জাতীয় অতিরিক্ত খাবার। পাশাপাশি খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে প্রচুর প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার,সবজি আর টাটকা ফল। তবে খাওয়া যাবে না রান্না না করা খাবার কিংবা কাঁচা সবজি। প্যাকেটজাত খাবার খাওয়া যায় কিন্তু তা নিয়মিত নয়। কারণ এই ধরনের খাবার সুস্বাদু করতে যে তেল বা মিষ্টি জাতীয় উপাদান ব্যবহার করা হয় তা স্বাস্থ্যে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে।
শরীরে তৈরি করুন বায়োলজিক্যাল ঘড়ি
নিজেদেরকেই একটি বায়োলজিক্যাল ঘড়ি তৈরি করতে হবে। নির্দিষ্ট করতে হবে সকালের, দুপুরের এবং রাতের খাবারের সময়। যারা ইতিমধ্যেই হৃদরোগে ভুগছেন তাদের রাতের খাবার এবং ঘুমানোর মধ্যে চার ঘণ্টা ব্যবধান রাখা উচিত। চেষ্টা করুন বিকেল চারটার দিকে চা কফি বা স্যান্ডউইচ দিয়ে হালকা টিফিন করে নিতে। তারপর রাতে সেরে ফেলবেন ডিনার। তবে একেবারেই সারাদিন ধরে খাওয়া চলবে না। এক্ষেত্রে পরিপাক যন্ত্রে বিঘ্ন ঘটতে পারে।
ছোট্ট শিশুর হৃদযন্ত্র ভালো আছে কিনা কীভাবে বুঝবেন?
বর্তমানে বহু শিশু হৃদযন্ত্রের নানান সমস্যায় ভুগছে। এক্ষেত্রে ভ্রূণের কুড়ি সপ্তাহের মধ্যে ইকোকার্ডিয়াম করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। চিকিৎসকরা যদি বোঝেন ভ্রূণের কোন সমস্যা রয়েছে, তাহলে অবশ্যই তার বাবা-মাকে জানাতে হবে। অপরদিকে শিশুর জন্মের পরেই চিকিৎসকরা পরীক্ষা করে যদি কোন অস্বাভাবিক আওয়াজ পান তাহলে দ্রুত মেডিক্যাল টিম কিংবা হৃদরোগ বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া উচিত। এক্ষেত্রে শিশু বড় হলে ঠিক হয়ে যাবে, এই ধারণা একেবারেই মন থেকে ঝেড়ে ফেলতে হবে।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম