কেন প্রতিবছর একুশে জুলাই পালন করে তৃণমূল? ঠিক কী ঘটেছিল সেদিন? ঐতিহাসিক পর্যালোচনা

।। প্রথম কলকাতা।।
প্রতিবছরই একুশে জুলাইয়ের দিনটিকে শহীদ দিবস হিসেবে পালন করে থাকে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল। গত ২০১১ সালের ১৩ ই মে ৩৪ বছরের বাম শাসনের অবসান ঘটিয়ে রাজ্যের ক্ষমতা দখল করেছিলেন যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তখন আলাদাভাবে কোন বিজয় উৎসব পালন করতে দেখা যায়নি তাঁকে। তবে, তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন যে, জয়ের উদযাপন করবেন তিনি ২১ শে জুলাই শহীদ তর্পনের দিনে। একুশে জুলাইয়ের সঙ্গে যেন অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত রয়েছে তৃণমূল। তাই প্রতিবছর ঘটা করে পালিত হয় এই দিনটি। করোনা সংক্রমণের কারণে দু’বছর ভার্চুয়াল ভাবে দিনটি পালিত হলেও, এ বছর আবার ঘটা করে পালিত হতে চলেছে একুশে জুলাই। এখন প্রশ্ন, কী কারনে একুশে জুলাই দিনটিকে এতটা গুরুত্ব দেয় তৃণমূল? কী রয়েছে দিনটির নেপথ্যে?
দিনটির ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট দেখতে গেলে প্রথমেই আমাদের তিন দশক পেছনে চোখ ফেরাতে হবে। তৃণমূল কংগ্রেসের জন্মের আগেই ঘটেছিল এই একুশে জুলাইয়ের ঘটনাটি। সালটা ১৯৯৩, সে সময় পশ্চিমবঙ্গ যুব কংগ্রেসদের সভাপতি ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যে তখন জ্যোতি বসুর সরকার ক্ষমতায় রয়েছে। একুশে জুলাইয়ের দিনে মহাকরণ অভিযানের ডাক দিয়েছিলেন তৎকালীন যুব কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনার জন্য সচিত্র ভোটার আইডির দাবিতে এই অভিযানের ডাক দিয়েছিলেন তিনি। সেদিন মহাকরণ অভিযানে রাস্তায় নামেন হাজার হাজার যুব কংগ্রেস কর্মী। অভিযান রুখতে পুলিশের তৎপরতাও ছিল চোখে পড়ার মতো। রাস্তায় রাস্তায় ব্যারিকেড করে অভিযান রোখার চেষ্টা করেছিল পুলিশ। সে সময় রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল ছিল কংগ্রেস। সিপিএমের বিরুদ্ধে বারবার ভোটে রিগিংয়ের অভিযোগ করেছিল কংগ্রেস। তাই নির্বাচনে স্বচ্ছতা আনার দাবিতেই এই একুশে জুলাইয়ের কর্মসূচি।
বহু মানুষ মহাকরণ অভিযানে জড়ো হয়েছিলেন। আচমকাই আন্দোলনকারীদের উপরে গুলি চালায় পুলিশ। পুলিশের গুলিতে যুব কংগ্রেসের ১৩ জন কর্মী প্রাণ হারান। সেদিন পুলিশের গুলিতে শহীদ হয়েছিলেন –
১ শ্রীকান্ত শর্মা
২ বন্দনা দাস
৩ দিলীপ দাস
৪ মুরারী চক্রবর্তী
৫ রতন মণ্ডল
৬ কল্যান বন্দ্যোপাধ্যায়
৭ বিশ্বনাথ রায়
৮ অসীম দাস
৯ কেশব বৈরাগী
১০ রঞ্জিৎ দাস
১১ প্রদীপ রায়
১২ আব্দুল খালেক
১৩ ইনু মিঞা
সেদিনের অভিযানে শহীদ হওয়া এই ১৩ জন যুব কংগ্রেস কর্মীকে শ্রদ্ধা জানাতেই একুশে জুলাইয়ের দিনটিকে শহীদ দিবস হিসেবে পালন করা হয় প্রতি বছর। এই দিনটিতে মঞ্চে দাঁড়িয়ে বিশেষ বক্তব্য রাখেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শহীদদের যেমন তিনি শ্রদ্ধা জানান, তেমনি দলের প্রতি রাখেন বিশেষ বার্তা।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম