এবার ঈদে আলোকসজ্জা বাড়ন্ত বাংলাদেশে, সব দেশ ধুঁকছে বিদ্যুৎ সঙ্কটে !

।। প্রথম কলকাতা ।।
ঈদে কিছুটা হলেও মন খারাপের সুর। জ্বালানি সংকটের কারণে বাংলাদেশ সরকার আলোকসজ্জা বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে। উত্তরোত্তর বেড়েই চলেছে জ্বালানির দাম। যার জেরে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। এছাড়াও বাংলাদেশে লোডশেডিং সমস্যায় অনেকেই নাজেহাল। তবে এই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে প্রায় আড়াই মাস। তার মধ্যেই বাংলাদেশে চালু হবে বেশ কয়েকটি কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র। এক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন জ্বালানির ক্ষেত্রে অতিরিক্ত আমদানির নির্ভরতাই বাংলাদেশকে বিদ্যুৎ সংকটের দিকে ঠেলে দিয়েছে।
বিশ্বজুড়ে জ্বালানির সংকট
ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ বিশ্ব বাজারকে বুঝিয়ে দিয়েছে জ্বালানি তেলের সংকট। সারা বিশ্ব দেখছে, কীভাবে জ্বালানি সংকটে ধুঁকছে শ্রীলঙ্কা। একই সংকটের দিকে ধীরে ধীরে এগিয়ে চলেছে দক্ষিণ এশিয়ার দেশ লাওস। বিশ্ববাজারে চড়া দামের কারণে যথাযথ প্রাকৃতিক গ্যাস আমদানি করতে না পারায় বিদ্যুৎ সংকটে পাকিস্তানও। এমনকি ঘন্টার পর ঘন্টা বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় এখানে মোবাইল পরিষেবা বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। ভারতেও জ্বালানি তেলের দামের কারণে হাত পুড়ছে অনেকেরই। তার উপর দেখা দিয়েছে তীব্র কয়লা সংকট। রাশিয়া হল সারা বিশ্বের জ্বালানি সম্পদের গুরুত্বপূর্ণ একটি সরবরাহকারী দেশ। ইউক্রেনের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান ঘোষণার পরেই পশ্চিমের বহু দেশ রাশিয়ার উপর নানান নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। যার কারণে বিশ্ববাজারে দেখা দিয়েছে জ্বালানি তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাসের তীব্র সংকট। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, এই যুদ্ধের ফলে ইউরোপের বহু দেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রে জ্বালানি সম্পদের সংকট দেখা দেবে । প্রয়োজন অনুযায়ী পাওয়া যাবে না প্রাকৃতিক গ্যাস, ডিজেল, পেট্রোল কিংবা কেরোসিন।
রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে বিশ্ববাজারে কয়েক গুণ বেড়ে গিয়েছে গ্যাসের দাম। যার কারণে বাংলাদেশ সরকার আন্তর্জাতিক খোলা বাজার বা স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি কিনতে পারছে না। পাশাপাশি এই দেশের সরকার যে পরিমাণ ভর্তুকি দিচ্ছে সেটা দিয়েও যথাযথভাবে কভার করা যাচ্ছে না। এছাড়াও এখানে গ্যাস ভিত্তিক যে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলি রয়েছে সেখানে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতা অনুযায়ী তার অর্ধেকেরও কম বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী , যতক্ষণ না পরবর্তী নির্দেশ আসবে ততক্ষণ আলোকসজ্জা বন্ধ রাখার নির্দেশ জারি থাকবে । বৃহস্পতিবার এমন নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে মন্ত্রী পরিষদের বিভাগ থেকে। সাধারণত ঈদে বিভিন্ন দোকানপাট, অফিস , শপিংমল, কমিউনিটি সেন্টারগুলি আলোক সজ্জায় সেজে ওঠে। বাংলাদেশের বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী এই বিষয়ে জানিয়েছেন , বাংলাদেশের বর্তমান লক্ষ্য বিদ্যুৎ সাশ্রয় করা। পাশাপাশি সরকারি তরফ থেকে চেষ্টা করা হচ্ছে যাতে গ্যাস এবং বৈদ্যুতিক সংকট খুব দ্রুত মেটানো যায়। বাংলাদেশের এই বৈদ্যুতিক সংকট হয়ত সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত চলবে। বিদ্যুৎ সাশ্রয় করার জন্য একটি বৈঠকে তিনি বেশ কিছু প্রস্তাব রাখেন। সেগুলি হল,বিয়ের অনুষ্ঠান শেষ করতে হবে সন্ধ্যার সাতটার মধ্যে। সরকারি অফিসগুলি খোলা থাকবে সকাল ন’টা থেকে দুপুর তিনটে পর্যন্ত। রাত আটটার মধ্যেই বন্ধ হবে শপিং মল। এছাড়াও এসি ব্যবহারের ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ রাখতে বলা হয়েছে।
এসবের মাঝে এখনো পর্যন্ত করোনা থেকে সম্পূর্ণ মুক্তি পাওয়া যায়নি। তাই সমস্ত রকম স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে ঈদুল আজহার নামাজের জামাতে। এই বিষয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । ঈদের নামাজের জামাতে যারা আসবেন তাদের প্রত্যেককে মাস্ক পরতে হবে। সংক্রমণ রুখতে মসজিদ এবং ঈদগাহের ওজুখানায় হ্যান্ড স্যানিটাইজার কিংবা সাবানের ব্যবস্থা করতে হবে । সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে হবে। প্রত্যেককে নিজ নিজ বাড়ি থেকে ওজু করে মসজিদ বা ঈদগাহে আসতে হবে। পশু কোরবানির ক্ষেত্রে যথাযথভাবে মেনে চলতে হবে মৎস্য এবং প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম