রসালো ফলমূল নয়, জগন্নাথ দেবের প্রিয় খিচুড়ি ! জানুন নেপথ্যে থাকা আসল কাহিনী

।। প্রথম কলকাতা ।।
জগন্নাথ দেবের অতি প্রিয় খাবার হল খিচুড়ি । বিশাল রান্নাঘরে মাটির পাত্রে রান্না করা হয় সেই খিচুড়ি ভোগ। আর এই কাজে নিয়োজিত থাকেন প্রায় হাজার জনের বেশি সেবক। এছাড়াও ওই রান্নাঘরের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে প্রচুর ইতিহাস । তবে প্রতিদিন কেন জগন্নাথ দেবকে খিচুড়ি ভোগ দেওয়া হয় ? এর নেপথ্যে রয়েছে অন্য কাহিনী। ৯ জুলাই উল্টো রথ। এই দিন জগন্নাথ দেব মাসির বাড়ি থেকে অর্থাৎ গুন্ডিচা মন্দির থেকে প্রত্যাবর্তন করবেন। সাথে থাকবেন বলরাম এবং সুভদ্রা । জগন্নাথ দেবকে মনে করা হয় বিষ্ণুর অবতার। এছাড়াও কৃষ্ণের সঙ্গে তাঁর গভীর সম্পর্ক রয়েছে। তাই তাঁর ভোগে রাখা হয় ৫৬ পদ। এই মন্দিরে সকালে জগন্নাথ দেবকে খিচুড়ি ভোগ নিবেদন করা হয় । এর পিছনে রয়েছে এক বিশেষ পৌরাণিক কাহিনী।
প্রচলিত আছে এই পুরীধামে বাস করতেন কর্মাবাঈ। যিনি জগন্নাথ দেবকে নিজের পুত্র স্নেহে ভালবাসতেন। তিনি জগন্নাথ দেবের ভক্ত ছিলেন এবং তাঁকে বাল্য রূপে পুজো করতেন। একদিন তিনি মনে করলেন , রোজ রোজ কেন জগন্নাথ দেবকে ফল খেতে হবে। তাই তিনি প্রভুকে নিজের হাতে রেঁধে খাওয়াতে চাইলেন। সেই ইচ্ছার কথা জানতে পেরে জগন্নাথ দেব জানিয়েছিলেন তাঁর খুব খিদে পেয়েছে। কর্মাবাঈ যা বানিয়েছেন তাই তিনি খাবেন। সেই দিন কর্মাবাঈ খিচুড়ি বানিয়েছিলেন। জগন্নাথ তাই তৃপ্তি করে খান।
তারপর থেকে কর্মাবাঈ রোজ জগন্নাথ দেবকে খিচুড়ি রান্না করে দিতেন এবং যখন জগন্নাথ খেতে বসতেন তখন তাঁকে পাখার হাওয়া করতেন । সবসময় খেয়াল রাখতেন যাতে গরম খিচুড়িতে প্রভুর মুখ না পুড়ে যায়। জগন্নাথ দেবও কর্মাবাঈয়ের হাতের গরম গরম খিচুড়ি খেতে ভালোবাসতেন। তাই তিনি জানান যে রোজ কর্মাবাঈয়ের কাছে এসে খিচুড়ি খাবেন। সেই কথা অনুযায়ী, প্রতিদিন সকালে উঠে স্নান না করে কর্মাবাঈ জগন্নাথের জন্য আগে খিচুড়ি বানাতেন ।হঠাৎ একদিন কর্মাবাঈয়ের বাড়িতে আসেন এক সাধু। তিনি এসে দেখেন কর্মাবাঈ স্নান না করেই জগন্নাথ দেবের জন্য খাবার রান্না করছেন।
তাই তিনি বলেন সমস্ত নিয়ম মেনে স্নান করে যেন প্রভুর জন্য খাবার তৈরি হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে ঘটে বিপত্তি। স্নান সেরে রান্না করতে গিয়ে অনেক বেলা হয়ে যায়। অপরদিকে খিদেয় কাতর হয়ে ওঠেন জগন্নাথ দেব। সেদিন ভোগ নিবেদন করতে অনেক দেরি হয়ে যায়। মন্দিরের পুরোহিত এসে দেখেন জগন্নাথ দেবের মুখে খিচুড়ি লেগে রয়েছে। অবশেষে পুরোহিতরা জগন্নাথ দেবের মুখে আসল ঘটনা শুনে কর্মাবাঈয়ের কাছে গিয়ে ক্ষমা চান। তারপর থেকে কর্মাবাঈ স্নান না করে আগে জগন্নাথ দেবের জন্য ভোগ রান্না করতেন। সেই নিয়ম অনুযায়ী পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে প্রতিদিন সকালে প্রভুর জন্য বানানো হয় বালক ভোগ। এই ভোগের খিচুড়িকে মনে করা হয় কর্মাবাঈয়ের খিচুড়ি।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম